সংগঠনের তহবিল তছরুপের অভিযোগ এনে সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে দেওয়া শোকজের জবাব পাননি বলে জানিয়েছেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান। তিনি জানান, গত ২৮ জানুয়ারি শনিবার শোকজের জবাব দেওয়ার শেষ দিন ছিল।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে জানতে চাইলে সভাপতি বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শোকজের জবাব না দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম জানান, যে ঠিকানা থেকে শোকজ করা হয়েছে একই ঠিকানায় গত ২৫ জানুয়ারি বুধবার রেজিস্টার্ড ডাকযোগে শোকজের জবাব পাঠিয়েছেন। তবে সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে তাকে শোকজ করা হয়নি অভিযোগ করে মইনুল ইসলাম বলেন, গঠনতন্ত্রে ১৫ দিনের কথা বলা হয়েছে। অথচ তাকে ১৪ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি বদরুল হোসেন খানের করা একাধিক অভিযোগ প্রসঙ্গে মইনুল ইসলাম বলেন, আড়াই লাখ ডলার জনৈক ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছিল। ওই অর্থ আবার ফেরতও এসেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জ্যাকসন হাইটসে ওই ব্যবসায়ীর বাণিজ্যিক ভবনে জালালাবাদের নিজস্ব অফিস করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এজন্য ৫০ শতাংশ অগ্রিম হিসাবে এই অর্থ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণে দেরী হওয়ায় আমরা সিদ্ধান্ত বদল করি। সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যবসায়ী জালালাবাদের অর্থ ফেরত দেন।
বন্যার্তদের সাহায্য বাবদ যে অর্থ তোলা হয়েছিল সেখান থেকে ২৩ হাজার ডলার দুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ২০ হাজার ডলার সভাপতির কাছে রয়েছে। তিনি কেন সেই অর্থ নিজের কাছে রেখেছেন, প্রশ্ন করেন মইনুল ইসলাম।
বুমবুলা এন্টারপ্রাইজের নামে ৫ হাজার ডলার প্রদান প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম বলেন, ওই অর্থ নির্বাচনের দিন সিকিউরিটি গার্ডদের ভাতা বাবদ দেওয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আতাউর রহমান সেলিম ওই চেক গ্রহণ করেছেন। সত্যতা জানতে প্রয়োজনে আতাউর রহমান সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের প্রচার সম্পাদক ফয়সল আলমের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অনিবার্য কারণে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক’র কার্যকরী পরিষদের ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ পরিষদের সভা স্থগিত করা হয়েছে। পরিবর্তীতে সাধারণ সভার তারিখ, সময় ও স্থান সংগঠনের সকল সদস্যদের জানানো হবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, গত ২৮ জানুয়ারি শনিবার, সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক-এর কার্যকরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি বদরুল খানের সভাপতিত্বে এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক রোকন হাকিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মোহাম্মাদ লোকমান হোসেন লুকু, সহ-সভাপতি সফিউদ্দিন তালুকদার, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলিম, ক্রীড়া সম্পাদক মান্না মুনতাসির, সমাজকল্যাণ সম্পাদক জাহিদ আহমেদ খান, আইন ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বুরহান উদ্দিন, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক ফয়সাল আলম, কার্যকরী সদস্য শামীম আহমদ ও মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন মানিক।
সভায় ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতি স্পষ্ট ভাষায় অনুরোধ জানানো হয় যে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক’র কোনো ভবন নিউইয়র্কে নেই। অর্থ কেলেঙ্কারির মাধ্যমে ক্রয়কৃত ভবনটিকে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক-এর ভবন উল্লেখ করে কোন সংবাদ বা বিজ্ঞাপন প্রকাশ না করার অনুরোধ জানানো হয়।
এছাড়া জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সব ধরনের অফিসিয়াল কার্যক্রম সম্পাদনের ক্ষেত্রে অস্থায়ী অফিস হিসাবে ৭৬-০১, ১০১ অ্যাভিনিউ, ওজোন পার্ক ১১৪১৬, ঠিকানা ব্যবহারের জন্য সবার প্রতি কার্যকরি কমিটির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয় বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।