বাংলা সিডিপ্যাপ আর অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার সার্ভিসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ প্রবাসের সকল বিশ্ববিদ্যালয় সকল বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই’র অ্যালামনাইর ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফরত গড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘অনেক হয়েছে। এখন সময় এসেছে মাতৃভূমি বাংলাদেশকে কিছু দেয়ার, ঋণ শোধ করবার।’ গত ১ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের উডসাইডের গুলশান টেরেসে আয়োজিত এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান আবু জাফর মাহমুদ। বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইর সাথে সম্মিলিত হবার প্রয়াসে এই মহতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন আবু জাফর মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘প্রবাসের সকল অ্যালামনাই যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক প্ল্যাটফর্মে আসতে পারি, তবেই দেশের জন্য, ‘জাতির মেরুদণ্ড’ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য আমরা কিছু করতে পারবো, অবদান রাখতে পারবো। এই কাজ একা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলাসহ ভাষা আন্দোলন আর মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ছবি দিয়ে সাজানো মূলমঞ্চ দৃশ্যত ছিলো এক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। অনুষ্ঠানে ছিলো না কোনো সভাপতি।
পবিত্র কোরআন ও বাইবেল থেকে পাঠের পর বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা সাদিক এবং বাইবেল থেকে পাঠ করেন ডা. টমাস দুলু রায়। এরপর সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক আবু জাফর মাহমুদ। তাকে পরিচয় করিয়ে দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর ডিকেন্স।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট লেখক- প্রবীণ সাংবাদিক ও সাপ্তাহিক আজকাল-এর প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমেদ, সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, সাংবাদিক ও টিভি ব্যক্তিত্ব সাঈদ তারেক, রাজনীতিক ডা. মুজিবর রহমান মজুমদার, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, বিশিষ্ট অভিনেত্রী রেখা আহমেদ, ডা. আকতার হাসান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি কবির কিরণ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই মনোয়ার ইসলাম প্রমুখ।
সভায় বক্তারা স্বাধীনতা পূর্ব ও পরবর্তী বাংলাদেশের আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রসমাজের ভূমিকাসহ বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরেন এবং আবু জাফর মাহমুদের উদ্যোগকে স্বাগত জানান। বক্তারা বলেন, আমরা প্রবাসীরা দেশের কাছে ঋণী। তাই সবাই ঐক্যবব্ধ হলে দেশ-জাতির জন্য যে কোনো কল্যাণকর কাজ করা সম্ভব। তাই ঐক্যবব্ধ প্ল্যাটফর্ম দরকার বলে তারাও একমত পোষণ করেন।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ থেকে আগত বাউল সঙ্গীতশিল্পী কালা মিয়া, প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী চন্দন চৌধুরী, চন্দ্রা রায় ও ক্লোজআপ ওয়ান খ্যাত শিল্পী নীলিমা শশী। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই হাসান মাহমুদ ও প্লামী দাস সঙ্গীত পরিবেশন করে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। এছাড়াও আবৃত্তি করেন গোলাম মোস্তফা ও সৈয়দা পারভীন আক্তার।
আবু জাফর মাহমুদের ধন্যবাদ সূচক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল পর্বের সমাপ্তি ঘটে। এসময় তিনি সকল অ্যালামনাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে একটি সাংগঠনিক রূপ দেয়ার জন্য উপস্থিত সকল অ্যালামনাইর প্রতি আহ্বান জানালে আগামীতে সুবিধামত একটি দিনে আগ্রহীদের নিয়ে বসে একটি সংগঠনের নাম চুড়ান্ত ও সাংগঠনিক কাঠামো তৈরীর সিদ্ধান্ত হয়।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনায় ছিলেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার গোলাম মোস্তফা ও কবি রওশন হাসান।