নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সাধারণ পরিষদ হলে ১ আগস্ট সোমবার ‘দশম এনপিটি পর্যালোচনা সম্মেলনে’র উদ্বোধনী দিবসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি বলেছেন, “আমরা আশা করি পারমাণবিক বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি)’র দশম পর্যালোচনা সম্মেলন থেকে এমন সিদ্ধান্ত বের হয়ে আসবে যা বিশ্বকে পারমানবিক অস্ত্রের হুমকি থেকে মুক্ত করতে চুক্তিটির সার্বজনীনতা এবং বাস্তবায়নকে আরও সহজতর করবে”। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ঐতিহাসিক প্রথম ভাষণে বিশ্বকে পারমাণবিক যুদ্ধের কবল থেকে মুক্তির যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তা উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, “এই আহ্বানকে ভিত্তি করেই পারমাণবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পূর্ণ এবং অটল প্রতিশ্রুতির ভিত্তি তৈরি হয়েছে যা আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাও বটে”।

মানবতার নিরাপত্তাকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে মুষ্টিমেয় কয়েকটি রাষ্ট্র স্থায়ীভাবে যে পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ রেখেছে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

ড. মোমেন এনপিটির তিনটি স্তম্ভ-পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ, এর বিস্তার রোধ এবং পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে কার্যকর বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। এক্ষেত্রে, তিনি চুক্তির ধারা-৪ এর বৈষম্যহীন বাস্তবায়নের উপর জোর দেন, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন, স্বাস্থ্যসেবা এবং কৃষিসহ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তির বিকাশ, গবেষণা, উৎপাদন এবং ব্যবহার করার জন্য সকল রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পারমাণবিক প্রযুক্তির গবেষণায় বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং মানবজাতির স্বার্থে এর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের সম্ভাবনা অন্বেষণের আহ্বান জানান।

কোভিড অতিমারির মধ্যেও পারমাণবিক অস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০২১ সালে ৮২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি রাষ্ট্রগুলিকে ধ্বংসাত্মক পারমাণবিক অস্ত্রে অর্থহীন বিনিয়োগ বন্ধ করে স্বাস্থ্যের উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, এসডিজি, শান্তি এবং স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য ব্যয় করার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ১৯৭৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এনপিটি-তে যোগদান করে। এছাড়া ২০১৯ সালে পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (টিপিএনডব্লিউ) অনুমোদনকারী প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।