নিউইয়র্কের ওজনপার্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশী উইন রোজারিও হত্যার পর এবার মিশিগান রাজ্যে আবারো পুলিশের গুলিতে এক বাংলাদেশী নিহতের ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে নিউইয়র্কে উইনের আন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এসব হত্যাকান্ড নিয়ে প্রথম প্রথম প্রতিবাদ, বিক্ষোভ সমাবেশ হলেও নেই কোন লাগাতার প্রতিবাদ- এমন প্রশ্ন সচেতন প্রবাসীদের। তারা বলছেন কমিউনিটি নিরব কেন? এসব হত্যার বিচাদার দাবীতে তারা সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি শক্ত প্রতিবাদ প্রত্যশা ভুক্তভোগীদের।
এদিকে গত মাসের ২৭ জানুয়ারী সিটির ওজনপার্কে বাসায় মায়ের বুকে থাকাবস্থায় পুলিশের গুলিতে উইন রোজারিও নিহত হওয়ার পর গত ৬ এপ্রিল শনিবার তার অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রবাসী খ্রীষ্টান সম্প্রদায় সহ বিপুল সংখ্যকপ্রবাসী বাংলাদেশী অশ্রুভেজা চোখে তার অন্তেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেন। বিমেষ শ্রদ।দা জানানো হয় প্রবাসী বেঙ্গলী ক্রীষ্টান এসোসিয়েশন ইনক।
নিউইয়র্কে দুর্বৃত্তের হামলায় আহত বাংলাদেশী জাকির হোসেন খসরুর মৃত্যু
নিউইয়র্কে দুর্বৃত্তের ধাক্কায় মাথা ফেটে আহতের তিন দিন পর গত ১০ এপ্রিল বুধবার ঈদুল ফিতরের দিন সন্ধ্যায় ইন্তেকাল করেছেন জাকির হোসেন খসরু (৭৬)। জানা যায়, নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় হিলসাইড এভিনিউ সংলগ্ন ১৬৮ স্ট্রিটে ৭ এপ্রিল খসরুকে হামলা করা হয়েছিল। দুর্বৃত্তটি ধাক্কা দেয়ার পর খসরু কংক্রিটের রাস্তায় পড়ে যান এবং তার মাথা ফেটে মগজ বেরিয়ে পড়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে জাকির হোসেন খসরুকে গুরুতর অবস্থায় নিকটস্থ জ্যামাইকা হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে অচেতন অবস্থা থেকে আর চৈতন্য ফিরে পাননি খসর। তাকে রাখা হয়েছিল লাইফ সাপোর্টে।
নিহত খসরুর স্ত্রী শামিমা আকতার শিউলির বরাত দিয়ে শেরপুর জেলা সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, জামালপুর জেলা সদরস্থ পোস্ট অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মরহুম মোহাম্মদ হুসেনের ছেলে খসরুর জানাজা ১১ এপ্রিল দুপুর ১টায় জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় এবং ঐদিনই নিউজার্সীর মার্লবরোতে শেরপুর জেলা সমিতির ক্রয় করা কবরে তাকে দাফন করা হয়। নিহত খসরুর স্ত্রী শামিমা আকতার শিউলি শেরপুর জেলা সমিতির সাবেক উপদেষ্টা।
এদিকে, দিনে-দুপুরে অকারণে জাকির হোসেন খসরুকে গালমন্দ শেষে ধাক্কা দিয়ে গুরুত আহত এবং তার মৃত্যুর ঘটনাটিকে হত্যা বলে দাবী করছেন প্রবাসী বাংলাদেশী সহ নিহতের পরিবারের সদস্যরা। এই ঘটনায় কমিউনিটিতে ভীতির সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত দুর্বৃত্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।
মিশিগানে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশী হোসেন আল রাজি নিহত
মিশিগান থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান রাজ্যে পুলিশের গুলিতে হোসেন আল রাজি (১৮) নামে এক বাংলাদেশী তরুণ নিহত হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ রাজিকে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ওয়ারেন সিটি পুলিশের এক কর্মকর্তা স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, মধ্য দুপুরে ৯১১ এ পরিবারের পক্ষ থেকে একটা ফোন আসে। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে পৌঁছান। পুলিশ কর্মকর্তারা ওই যুবকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখতে পান এবং অস্ত্র ফেলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই যুবক তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকে অস্ত্র নিয়ে তেড়ে আসেন।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা আত্মরক্ষার্থে ১০ রাউন্ড গুলি ছোড়েন। পরে আহত অবস্থায় যুবককে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা মোহাম্মদ আতিক হোসেন জানান, আমার দুই ছেলে ও আমি সকালে একসঙ্গে ফজরের নামাজ পড়ি। তারপর সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। দুপুরের দিকে ওর মা ও আমার মেজো ছেলে আমাকে বলছে, হোসেন আল রাজি অসংলগ্ন আচরণ করছে। আমিও দেখি ও ভিন্ন আচরণ করছে। আমার মেজো ছেলেকে দিয়ে ৯১১ এ কল দেই। অ্যাম্বুলেন্সের সহযোগিতায় আমার ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়া যায় কিনা। কিছুক্ষণের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশ আসলে আমরা নিরাপদ স্থানে আছি কি না জানতে চাওয়া হয়।
তিনি জানান, আমরা গ্যারেজের গাড়ির ভেতর আছি বলার কিছু সময়ের মধ্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পাই। আবার কিছুক্ষণ পরেই পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের ডেকে সবাইকে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে নিয়ে সবার জবানবন্দি নেন। আমরা সবাই বাসায় ফিরে আসলে বিকেল ৪টার দিকে খবর আসে আমার ছেলে মারা গেছে। আমি অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্য চাইলাম ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আর পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেললো। কি এমন অপরাধ করলো আমার ছেলে, যে কারণে ওকে গুলি করে মারতে হলো। তিনি মিশিগানে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকান সবার সাহায্য-সহযোগিতা চেয়েছেন।
নিহতের বাবা জানান, আমার ছেলের মরদেহ এখনো হাসপাতালে পড়ে আছে। দেখতেও পারছি না। তবে আজ সোমবার তার মরদেহ হস্তান্তর করার কথা। মরদেহ হস্তান্তর করা হলে ওই দিনই ইসলামিক সেন্টার অফ ওয়ারেনে দুপুরে জানাজার নামাজ শেষে ওখানেই দাফন করা হবে।
জানা গেছে, নিহত হোসেন আল রাজি হলেন মোহাম্মদ আতিক হোসেনের বড় ছেলে। দেশের বাড়ি সিলেটের বিয়ানিবাজার পৌরসভার সুপাতলায়। প্রায় ১৬ বছর আগে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে ও দ্বিতীয় ছিল। উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৭ মার্চ নিউইয়র্কের ওজনপার্কে ১৯ বছরের যুবক উইন রোজারিও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।
যুত্তরাষ্ট্রে ৩ বাংলাদেশী হত্যা! নিরব কেন কমিউনিটি?
প্রকাশিত: ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:৩০ পিএম



প্রবাস রিলেটেড নিউজ

মিশিগানের হেমট্রামিক সিটি কাউন্সিলে প্রোইমারী নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাংবাদিক ও সামাজিক কর্মী মাহফুজুর রহমান

লন্ডন বাংলাদেশ হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি সোনিয়া মুন্নি ‘ইয়াং ডিপ্লোম্যাট অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত

রিয়েল এস্টেট প্রতারণা : কুইন্সের সংঘবদ্ধ চক্রের গ্রেফতার-১

নিউইয়র্কে বাংলাদেশির বাড়ির আগুনে পুড়ে মরলো ৩ স্পেনিশ

নিউজার্সীতে বিএনপি নেতার সংবর্ধণা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউইয়র্কের ট্রাস্টিবোর্ড গঠিত

‘কংগ্রেসনাল প্রক্লেমেশন’ পেলেন গোলাম ফারুক শাহীন

নিউইয়র্ক রিহ্যাব এক্সপো শুরু ২২ আগস্ট