নিউইয়র্ক স্টেট এর হোম কেয়ার সেবা বন্ধের উদ্যোগের ‍বিরুদ্ধে বিভিন্নমুখি তৎপরতা শুরু হয়েছে। আইনগত উদ্যোগের পাশ দাঁড়িয়েছেন নিউইয়র্ক স্টেট এর অ্যাসেম্লিম্যান ও সিনেটররা। বিভিন্ন মহলের নেতিবাচক প্রচারণা সাধারণ মানুষের হতাশার উপাদান যোগালেও বাস্তবে নিউইয়র্ক স্টেট এর অন্যতম মানবিক কার্যক্রম ক্ষুদ্র ও মাঝারি হোম কেয়ার রক্ষার জন্য একাত্ম হচ্ছেন সবাই। ইতোমধ্যে সেবাগ্রহীতা হাজার হাজার সিনিয়র সিটিজেন এর পক্ষে লড়াইয়ে নেমেছেন বাংলাদেশি কমিউনিটিতে হোম কেয়ার সেবার পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক স্টেট এ বসবাসকারী বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির প্রবীন সদস্যদের জন্য সিডিপ্যাস ও হোম কেয়ার সেবা অন্যতম মানবিক  সহযোগিতা। এই সহযোগিতা বাতিলের পক্ষে কাজ করছে বড় বড় কর্পোরেট পুঁজির মালিক। নিউইয়র্ক স্টেট এর এই সহযোগিতা রক্ষার জন্য সকল জনপ্রতিনিধির সমর্থন চাই। তাদের যে ভোটাররা আছে, এদের সমর্থনও তাদের পক্ষে থাকা দরকার। সেদিক বিবেচনায় মানুষগুলোর স্বার্থে ভূমিকা রাখা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

উল্লেখ্য, কতিপয় করপোরেট ব্যবসায়ীদের অশুভ তৎপরতায় পক্ষপাতমুলকভাবে ২০২৩ এর শুরুতে স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্ট ১৬০টি হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠানকে লিড এফ আই অর্ন্তভূক্ত করে তালিকা প্রকাশ করে। নীতিমালা অনুযায়ী ২০০ মেডিকেইড পেশেন্ট থাকার পরও অনেক হোম কেয়ার লিড এফ আই সার্টিফিকেট পান নি। এতে কিছু সুপ্রতিষ্ঠিত  ও স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান বাদ পড়ে যায়। গেল জুনে হঠাৎ করে স্টেট থেকে ২৭০টি হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠানকে কার্যক্রম বন্ধের চিঠি দেয়া হয়। এতে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর হাজার হাজার সেবা গ্রহীতা সিনিয়র সিটিজেনের হোম কেয়ার সেবা নিয়ে সংশয় ও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। একেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারি ও মালিক পথে বসার উপক্রম হন।  লিড এফআই সার্টিফিকেট প্রদানের ক্ষেত্রে নিউইয়র্ক স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্ট সঠিক নীতিমালা ও গাইডলাইন অনুসরন করেনি বলে অভিযোগ উঠে। অনেক বাংলাদেশি কনজুমার ডাইরেক্টটেড পারসোনাল এসিসট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ) প্রতিষ্ঠান মালিক লিড এফআই পাবার যোগ্যতা থাকার পরও তা পান নি। এ সিদ্ধান্তের বাংলাদেশি হোম কেয়ারের পক্ষে কেবলমাত্র আবু জাফর মাহমুদ ও অন্য কমিউনিটির হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠান আইনের আশ্রয় নিয়েছে। যে কারণে লিড এফআই নীতিমালা এখনও কার্যকর হয়নি।

বাংলাদেশি কমিউনিটিতে হোম কেয়ার সেবা প্রতিষ্ঠানের প্রথিকৃৎ আবু জাফর মাহমুদ সকল সিডিপ্যাপ এজেন্সীর পক্ষে  এটর্নি ও প্রফেশনাল লবিষ্ট নিয়োগ করেছন। তিনি বলেন, স্টেটের এসেমব্লিম্যান ও সিনেটরদের সাথে যোগাযোগ করছি লবিষ্টদের সহযোগিতা দেবার জন্যে। কমিউনিটি বেজড হোম কেয়ার সার্ভিস ক্ষতিগ্রস্থ হলে আমাদের কমিউনিটির হাজার হাজার সিনিয়র সিটিজেন এবং তাদের পরিবার সমস্যার মুখোমুখি হবেন। তাদের ভাষাগত সমস্যা রয়েছে। একজন বয়স্ক বাংলাদেশি যেভাবে বাংলাদেশি হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠানে মনের কথাটি সহজে খুলে বলতে পারবেন, অন্য ভাষাভাষী মানুষের সাথে নিশ্চয়ই সেভাবে পারবেন না। মনে রাখতে হবে, এটি শুধু ব্যবসা নয়। কমিউনিটিকে সেবা দেবারও একটি মাধ্যম। কমিউনিটি হোম কেয়ার সার্ভিস রক্ষায় সকলকে নিয়ে কাজ করতে হবে।

বিষয়টি গুরুত্ব ও মানবিকতার সাথে বিবেচনা করছেন নিউইয়র্ক স্টেট এর আইন প্রণেতারাও। তারা মনে করছেন, এতে ছোট ছোট হোম কেয়ার ব্যবসায়ীরা পথে বসবেন। বিশেষ করে মাইনোরিটি বা এথনিক সম্প্রদায় ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্থ হবে । এই সেবা ও ব্যবসা করপোরেট ব্যবসায়ীদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অস্তিত্ব নির্মুল হয়ে যাবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সমাজের মধ্যবিত্ত  ও দরিদ্র পরিবারগুলোর টিকে থাকার অবলম্বন। এই সযোগ কেড়ে নিলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের বসবাস ঝুঁকিতে পড়বে। যা নিউইয়র্ক স্টেট এর জন্যই হবে অবশ্যই বিপদজনক। নিউইয়র্ক স্টেটকে সুদুরপ্রসারি নিরাপত্তা ও শান্তির কথা বিবেচনায় রেখেই তাদের সিদ্ধান্ত পূণর্বিবেচনা করা জরুরি।

উল্লেখ্য, নিউ ইয়র্ক স্টেট  এর সিনেটর ও অ্যাসম্বিলবলম্যানদের অনেকেই ইতোমধ্যে ছোট ও মাঝারী ধরনের হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই মর্মে তদরা অন্যান্যদের সাথেও আলাপ আলোচনা অগ্রসর করে চলেছে। গেল ডিসেম্বরে ২০০ এর কম মেডিকেইড প্রাপ্ত কামস্টমার রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো  লিড এফআই (ফিসকেল ইন্টারমেডিয়ারি) সার্টিফিকেট পায় নি। বৈষম্যমূলকভাবে কমিউনিটি হোম কেয়ার গুলো বন্ধের বিরুদ্ধে স্টেট এসেম্বলিতে বিল এনেছেন ডিস্ট্রিক্ট ৯০ এর এসেম্বলিম্যান নাদের শেইগ। তাকে সহায়তা দিচ্ছেন এসেম্বলিম্যান (ডিস্ট্রিক্ট ২৮) এন্ড্রুউ হাভেসী। গত ১২ ডিসেম্বর ওয়েস্টচেষ্টার কাউন্টির ইয়ংকার্সে সিডিপ্যাপ নিউইয়র্ক ইউনাইটেড হেলথ ডিপার্টমেন্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। এতে অন্যান্যদের মধ্যে এসেমব্লিম্যান নাদের শেইগ, এন্ড্রুউ হাভেসী