NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া: হাইকমিশনার একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তান
Logo
logo

চাঁদা তুলে দেশে পাঠানো হয় রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের লাশ


খবর   প্রকাশিত:  ১১ জানুয়ারী, ২০২৪, ০২:৫৪ এএম

চাঁদা তুলে দেশে পাঠানো হয় রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের লাশ

প্রবাসীদের বলা হয় রেমিট্যান্স যোদ্ধা। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। কিন্তু কোনো প্রবাসী মারা গেলে তার কোনো মূল্য থাকে না। তারা অবহেলার পাত্র হয়ে যান। দেশে প্রেরণের অর্থাভাবে লাশ মর্গে পড়ে থাকে মাসের পর মাস। কখনো চাঁদা তুলে দেশে পাঠানো হয় লাশ। তবে ইউরোপের দেশ গ্রিসে মৃত্যুবরণকারী প্রবাসীদের লাশ দ্রুত দেশে প্রেরণের দায়িত্ব পালন করছে গ্রিস প্রবাসীদের বৃহত্তর সংগঠন ‘বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস’।   

দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ইউরোপের দেশ গ্রিসে বসবাস করছিলেন আজির উদ্দিন। কয়েক মাস আগে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আজির। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা। মারা যাওয়ার প্রায় ১০ দিন পর্যন্ত তার লাশ পড়ে ছিল হাসপাতাল মর্গে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় লাশ দেশে নিতে পারছিল না। তার পরিবার লাশ দেশে পাঠাতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রতি অনুরোধ জানায়। 

এই ঘটনার মতো প্রবাসীদের লাশ দেশে পাঠাতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কিন্তু শুধু লাশ দেশে পাঠাতে পরিবহন খরচ ছাড়াই হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার খরচ আসে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত যা সকল প্রবাসীর স্বজনরা বহন করতে পারে না। বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে শুধু পরিবহন খরচ বহন করা হয়। হাসপাতাল মর্গের খরচসহ সকল প্রক্রিয়ার খরচ বহন করে বাংলাদেশ কমিউনিটি।

 

গ্রিস প্রবাসীদের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের উদ্যোগে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন মাঠে নামে লাশ পাঠানোর টাকা সংগ্রহের কাজে। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন দোকানে-দোকানে ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলেন। একপর্যায়ে বাংলাদেশ কমিউনিটির সহায়তায় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে পরিবহন খরচ বহন করে লাশ দেশে পাঠায় বাংলাদেশ দূতাবাস।

এভাবে গত ৭ বছরে গ্রিস থেকে মৃত্যুবরণকারী প্রায় আড়াই শতাধিক প্রবাসীর লাশ, প্রবাসীদের উত্তোলিত চাঁদার টাকায় বাংলাদেশে পাঠানোর অভিজ্ঞতার তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ।

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি এখানে মারা গেলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ কমিউনিটি ও বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে লাশ দেশে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়। কেউ মারা গেলে তাদের পরিবার যোগাযোগ না করলেও আমরা আমাদের দায়িত্ব মনে করে দ্রুত লাশটি দেশে পাঠানোর চেষ্টা করি। তবে আমাদের কোনো ফান্ড না থাকায় টাকা সংগ্রহ করতে কিছু সময় লাগে। কারণ, এথেন্সে কেউ মারা গেলে দূতাবাস থেকে টিকেট দেওয়ার পরও বাংলাদেশের টাকা প্রায় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০-১৫ হাজারের মতো খরচ হয়। তবে কোনো প্রবাসী যদি এথেন্সের বাইরে বা তুরস্ক সীমান্তে মারা যায় তখন আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ টাকার মতোও প্রয়োজন হয়। খুব কম প্রবাসীর পরিবারই তাদের নিজ খরচে লাশ দেশে নিয়ে যায়। বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে চাঁদা উত্তোলন করে লাশ গুলো দেশে পাঠাতে সহায়তা করে।

কমিউনিটির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো ফান্ড দেওয়া হয় বা সরকারিভাবে সকল খরচ বহন করে লাশ দেশে নেওয়া হয়, তখন আর এতো ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্স যোদ্ধারা সারাজীবন দেশের জন্যই রেমিট্যান্স পাঠান। তাই সরকারের উচিত সকল প্রবাসীর লাশ সরকারি খরচে দেশে নিয়ে যাওয়া। এটা সকল প্রবাসীর দাবি।