NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
ভ্যাটিকানের উদ্দেশ্যে কাতার ত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টা সৌদির কাছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বেচবে যুক্তরাষ্ট্র, চুক্তি শিগগির হৃদয়কে দ্বিতীয়বার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বললেন তামিম পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
Logo
logo

অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হলো বাঙালি কমিউনিটির সবচেয়ে বড় ঈদ এক্সিবিশন


খবর   প্রকাশিত:  ০২ জানুয়ারী, ২০২৪, ১২:২৬ পিএম

অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হলো বাঙালি কমিউনিটির সবচেয়ে বড় ঈদ এক্সিবিশন

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বাঙালি কমিউনিটির সবচেয়ে বড় ঈদ এক্সিবিশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘সিডনি বাঙালি কমিউনিটি ইনক্’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠান রবিবার (৯ এপ্রিল) মিন্টোর ইনডোর স্পোর্টস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।  

২০১৯ থেকে আয়েজিত এই ঈদ এক্সিবিশনটি সিডনিবাসীদের মধ্যে এতোটাই জনপ্রিয় যে, এর পরিধি সিডনি থেকে ছাড়িয়ে নিউ ক্যাসেল, ক্যানবেরা এবং মেলবোর্ন পর্যন্ত গড়িয়েছে।

সকাল সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকারের হুইপ এনি স্ট্যানলি এম পি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'আমার নির্বাচনী এলাকার জনপ্রিয় সংগঠন সিডনি বাঙালি কমিউনিটি অস্ট্রেলিয়ার মাল্টিকালচারাল সমাজে নিজেদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মাতৃভাষা ধরে রাখার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলছে। আমি সম্মানিত বোধ করছি, এক সঙ্গে সিডনী বাঙালি বুটিক ক্লাবের ৬০ জন নারী উদ্যোক্তাদের নানান ধরনের ফ্যাশন ও বাহারি রঙের ঈদ সামগ্রীর এতো বড় প্রদর্শনীতে আমন্ত্রিত হয়ে।অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটির বৃহত্তম ঈদ এক্সিবিশনটি আমার নির্বাচনী এলাকাতেই হচ্ছে বলে আমি গর্ববোধ করছি। সেই সঙ্গে ঈদ এক্সবিশনের আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম সেলিমা বেগমকে ধন্যবাদ জানাই  কমিউনিটির সঙ্গে এই সুন্দর সম্পৃক্ততার জন্য।'

 

সিডনি বাঙালি কমিউনিটি ইনক্ এর সাধারণ সম্পাদক সেলিমা বেগম বলেন, 'আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল অস্ট্রেলিয়াতে বাংলাদেশি আমেজ এবং আনন্দে ঈদের কেনাকানা ও উদযাপনের সহায়ক হওয়া। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াতে বসবাসরত ক্ষুদ্র নারী উদ্দ্যোক্তা যারা দেশীয় বুটিক ও ফ্যাশান ডিজাইন নিয়ে কাজ করছেন তাদের কমিউনিটিতে পরিচিত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে দেওয়া। প্রজন্ম যেন অস্ট্রেলিয়াতে থেকেও বাংলাদেশের ফ্যাশান, জিজাইন ও ঐতিহ্যে আকৃষ্ট হয় সেইদিকটাও আমাদের বিবেচ্য বিষয়। অস্ট্রেলিয়াতে বাংলাদেশি ফ্যাশান, ডিজাইনের প্রসারের বিশেষ বিবেচনায় ২০১৯ সালে সিডনী বাঙালি বুটিক ক্লাবের সূচনা। সেই থেকে সিডনী বাঙালি বুটিক ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ঈদ এক্সিবিশনের আয়োজন করছি আমরা। এই বছর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বাঙালিদের বৃহত্তম ঈদ এক্সিবিশনটি করার পিছনে বুটিক ক্লাবের সকল সদস্যের ঐক্যবদ্ধতা এবং স্থানীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা ও উৎসাহ বিশেষভাবে উল্লেখ্য।'

ক্যাম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিলের  কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী বলেন, "অত্যন্ত সুন্দর এবং পরিপাটি পরিবেশে সিডনি বাঙ্গালী কমিউনিটি ঈদ এক্সিবিশন করে আসছে বিগত বছরগুলোতে , আর এক সাথে এতগুলো বুটিক হাউজকে নিয়ে এতো বড় ঈদ এক্সিবিশন করার পাশাপাশি বাঙ্গালী কমিউনিটির ঈদ বাজারের সুযোগ করে দেয়ার জন্য  ধন্যবাদ জানাই আয়োজকদের।"

এছাড়াও স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বক্ততা রাখেন সফিকুল আলম, মাসুদ পারভেজ, মুনিরুল ইসলাম জর্জ, নির্মল পাল, সাকিনা আক্তার, আরেফিনা মিতা, ফর্ম্মাসিস্ট মো. হাদী, মাহফুজ চৌধুরী খসরু, মোহামেদ সোবহান, মোবারক হোসেন, লিয়াকত আলী লিটন, আশিক রহমান, কামাল পাশা, ফারুক আহমেদসহ আরও অনেকে। 

এবারের ঈদ এক্সিবিশনের বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে- জামদানি শাড়ির প্রদর্শনী, দিল্লী বুটিকের কালেকশনসহ উপমহাদেশের নামকরা ডিজাইনার ঈদ কালেকশন। মেয়েদের ফ্যাশান ডিজাইনের নতুন কালেকশনের পাশাপাশি ছেলেদের জন্য ছিল পাঞ্জাবি, ফতুয়া, কটি, চাদর, নাগড়া, জুতি, টুপি। শিশু-কিশোরদের ঈদ কালেকশন নিয়ে যেসব বুটিক শপ বিশেষ মনোযোগী ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম সাতরঙ সিডনী, সোয়ান, অপশরা, আডায়ানা জায়ানি, নানান রং, কেজে এটিলিয়ের, জেসমিন আর্টারি, পার্ল ফ্যাশান, কাস্ট ক্রিয়েশন। 

গয়নার ঈদ কালেকশন নিয়ে উপস্থিত ছিল এক্সক্লুসিভ জুয়েলারি, গোল্ডেন ফাইবার, মারিয়াস কালেকশন, জে এন্ড জে কালেকশনসহ অন্যান্য বুটিক শপগুলো। ঈদ এক্সিবিশনের ৬০টি স্টলে ছিল দেশীয় ও উপমহাদেশীয় নানান রকমের ফ্যাশান সামগ্রী, নামকরা ডিজানার কালেকশন, নাম করা বুটিকগুলোর ঈদ  স্পেশাল কালেকশন। বাংলাদেশের রাজশাহী, টাঙ্গাইল, মিরপুর, রাঙামাটি, সোনারগাঁ, কুমিল্লা, সিলেট, নরসিংদী, পাবনা এবং ঢাকার তাঁতিদের বুনানো বিভিন্ন সামগ্রীর সরবরাহ ছিল চোখে পড়ার মতন। এবারের আয়োজনে নতুন সংযোজন ছিল বিউটি ও প্রসাধনী সামগ্রীর স্টল।

আবহাওয়া চমৎকার থাকাতে এক্সিবিশনে সারাদিন ব্যাপী ছিল সিডনির বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাঙালিদের আগমন। দেশীয় আমেজে ঈদের কেনাকাটার সুযোগ পেয়ে সিডনীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বপরিবারে ক্রেতারা উপস্থিত হয়ে ঈদ এক্সিবিশনটি উৎসব মুখর করে তোলেন। ক্রেতাদের ইফতার এবং রাতের খাবারের জন্য "গ্রীল এন্ড চীল" এর ছিল বিশেষ আয়োজন। ঈদ এক্সিবিশনের সার্বিক সহায়তায় ছিলেন আতিক হেলাল, সামিয়া ইসলাম, অজয় দত্ত, শুভ্র চৌধুরী, অর্পিতা সোম, ফারজানা তানিয়া, ঐহিক তারিক, রয়া সারবিন, রুনা লায়লা। 

অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিক এবং মিডিয়া গ্রুপের সহায়তায় ঈদ এক্সিবিশনের প্রচার ছিল সারা মাস জুড়ে। আয়োজকরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মিন্টো ইনডোর স্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষকে যাদের আন্তরিকতা এবং সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে মিন্টো ট্রেন স্টেশনের পাশেই এক হাজার কার পার্কিংয়ের সুবিধা নিয়ে সিডনী বাঙালি কমিউনিটি ইনক্ এর এই বিশাল ঈদ এক্সিবিশনের আয়োজন।  

উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ এক্সিবিশনটি শেষ হয় রাত ১০টায়। সিডনী বাঙালি বুটিক ক্লাবের সাফল্য কামনায় প্রত্যশা ইকবালের স্পন্সার করা কেক কাটার মধ্যদিয়ে সিডনী বাঙালি কমিউনিটি ইনক্ এর ২০২৩ এর প্রথম ঈদ এক্সিবশনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। 

সমাপনী বক্তব্যে সেলিমা বেগম ক্লাবের সকল সদস্যদের ধন্যবাদ জানান তাদের ঐক্যবদ্ধতার জন্য এবং সেই সঙ্গে ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে দেশীয় সামগ্রীর সরবারাহ বৃদ্ধি করার জন্য।

ঈদকে সামনে রেখে সিডনি বাঙালি বুটিক ক্লাবের আরও দুইটি এক্সিবিশন সামনের উইকেন্ডে রয়েছে। 
দ্বিতীয় এক্সিবিশনটি হবে ১৫ এপ্রিল, গ্রেগ পার্সিভাল কমিউনিটি হলে সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। তৃতীয় ঈদ এক্সিবিশনটি হবে ১৬ এপ্রিল, গ্রেগ পার্সিভাল কমিউনিটি হলে সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।আগামী দুটো ঈদ এক্সিবিশনেও সিডনীর নামকরা বুটিক শপের মালিক এবং ফ্যাশান ডিজাইনারদের নিয়ে গঠিত সিডনী বাঙালি বুটিক ক্লাবের সকল সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন তাদের ঈদ কালেকশন এবং সেইল আইটেম নিয়ে। 

ঈদ এক্সিবিশনের সার্বিক পরিচালনা এবং পরিকল্পনায় ছিলেন সিডনী বাঙালি কমিউনিটি ইনক্ এর সেলিমা বেগম ও আবু তারিক।