NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া: হাইকমিশনার একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তান
Logo
logo

জাতিসংঘে আফগান নারী কর্মীদের কাজ নিষিদ্ধ করল তালিবান


খবর   প্রকাশিত:  ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:০০ এএম

জাতিসংঘে আফগান নারী কর্মীদের কাজ নিষিদ্ধ করল তালিবান

জাতিসংঘের আফগান নারী কর্মীদের আফগানিস্তানে কাজ করা নিষিদ্ধ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালিবান। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি এ সংক্রান্ত একটি আদেশও জারি করেছে। জাতিসংঘের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বুধবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান গোষ্ঠী জাতিসংঘের আফগান নারী কর্মীদের আফগানিস্তানে কাজ করা নিষিদ্ধ করার আদেশ জারি করেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানে সহায়তা সংস্থাগুলোর কাজ করার ক্ষমতাকে হ্রাস করতে ‘বিরক্তিকর প্রবণতার’ সর্বশেষ ঘটনা এটি।

মূলত তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে মানবিক সংকট চলছে এবং আফগান জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের এখন মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন। সংখ্যার বিচারে যা প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আফগানিস্তানে জাতিসংঘের হয়ে কাজ করা আফগান নারীদের ওপর যে কোনও নিষেধাজ্ঞাকে ‘অগ্রহণযোগ্য এবং স্পষ্টভাবে অকল্পনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন স্টিফেন ডুজারিক।

অবশ্য এ বিষয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে তালেবান প্রশাসন এবং আফগান তথ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্ররা তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।

জাতিসংঘের দু’টি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, নারীদের কাজ করার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার বিষয়ে উদ্বেগের কারণে জাতিসংঘ আফগান ভূখণ্ডে তার সকল কর্মীকে ৪৮ ঘণ্টা অফিসে আসতে বারণ করেছে।

স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, ‘তালেবানের এই পদক্ষেপ আমাদের কর্মকাণ্ডের ওপর ঠিক কিভাবে প্রভাব ফেলে তা আমরা এখনও খতিয়ে দেখছি এবং আমরা আগামীকাল কাবুলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সাথে আরও বৈঠক করার আশা করছি। আমরা এই বিষয়ে আরও পরিষ্কার হওয়ার চেষ্টা করছি। যদিও (নারী কর্মীদের কাজ বন্ধের আদেশ সম্পর্কে) আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত লিখিত কিছু নেই।’

এদিকে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নানগারহারে নারী কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে আসা বন্ধের বিষয়ে মঙ্গলবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আফগানিস্তানে অবস্থিত জাতিসংঘের মিশন (ইউএনএএমএ)।

জাতিসংঘের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নানগারহারের রাজধানী শহরের কথা উল্লেখ করে রয়টার্সকে বলেছেন, ‘জালালাবাদে নারী কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার হুমকির কারণে সংস্থাটির সকল জাতীয় কর্মী (পুরুষ ও নারী) ৪৮ ঘণ্টার জন্য জাতিসংঘের অফিসে আসবে না।’

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের অফিসে শুক্রবার এবং শনিবার সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিন। আর এর মানে হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি হলেও আগামী রোববারের আগে জাতিসংঘের কর্মীরা তাদের অফিসে ফিরবেন না।

উল্লেখ্য, ২০ বছর পর ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।

আর এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়।

আর তাই আফগানিস্তান বর্তমানে মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং এশিয়ার এই দেশটির ৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। এছাড়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং তালেবান প্রশাসনের আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে।

অবশ্য তালেবান প্রশাসন বলেছে, তারা ইসলামী আইনের ব্যাখ্যা অনুসারে নারীর অধিকারকে সম্মান করে। তবে কাবুলে পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারের পতনের পর থেকে তালেবান গোষ্ঠী নারীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করেছে। যার মধ্যে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করা থেকে বেশিরভাগ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ করার মতো পদক্ষেপও রয়েছে।

এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে তালেবান কর্তৃপক্ষ দেশটির বেশিরভাগ নারী এনজিও কর্মীকে কাজ করা থেকে বিরত রেখেছে। সাহায্য কর্মীরা বলছেন, এই পদক্ষেপের কারণে নারী সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে উঠেছে এবং এতে করে দাতারা তাদের তহবিল আটকে রাখতে পারে।