NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শনিবার, মে ১৭, ২০২৫ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
অভ্যুত্থানের ৯ মাস পরও বড় পরিবর্তন সহজ হচ্ছে না এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’ স্বাগত জানাতে মেলোনিকে দেখে হাঁটু গেড়ে বসলেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী দুই ঘণ্টাতেই শেষ রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা, মেলেনি সমাধান নতুন অধিনায়ক নিয়ে অন্যরকম শুরুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ ট্রাম্প আলফা মেল হলে মোদি ওর বাবা : কঙ্গনা মায়ানমারে নিযুক্ত প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা আফতাব প্রত্যাহার ঈদে সব পশুর হাটে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক বসবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মাউন্ট এভারেস্টে দুই পর্বতারোহীর মৃত্যু, একজন ভারতীয় এবার আমিরাতের সঙ্গে ২০ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি করলেন ট্রাম্প
Logo
logo

সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ


খবর   প্রকাশিত:  ২০ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৪১ এএম

সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

ঢাকা: সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে রাজধানীর রমনা থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে তাকে।

মামলায় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রমনা মডেল থানার পরিদর্শক আবু আনছার। অপরদিকে মামলায় জামিন চেয়ে তার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত বুধবার ভোররাত ৪টার দিকে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের আমবাগান এলাকায় শামসুজ্জামানের বাসায় যান ১৪ থেকে ১৫ ব্যক্তি। নিজেদের সিআইডি সদস্য পরিচয় দিয়ে শামসুজ্জামানকে সেখান থেকে তুলে নেওয়া। পরে মঙ্গলবার রাত ২টা ১৫ মিনিটে ঢাকার তেজগাঁও থানায় একটি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলা করেছেন। কর্তৃপক্ষ সেটি তদন্ত করার কথা বলেছে। পরে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা হয় একটি মামলা। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার পরিদর্শক আবু আনছার।

প্রথম আলো অনলাইনের তথ্য মতে, গত রবিবার তাদের অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে প্রকাশের সময় দিনমজুর জাকির হোসেনের উদ্ধৃতি ব্যবহার করে একটি ‘ফটোকার্ড’ করা হয়। তাতে ভুল করে জাকির হোসেনের জায়গায় একটি শিশুর ছবি সংযুক্ত করা হয়। এই অসংগতি নজরে এলে ১৭ মিনিট পরেই ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রতিবেদন সংশোধন করে তা অনলাইনে প্রকাশ করা হয়।

শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও আটকের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ, এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। তারা এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিক্ষোভ মিছিল করেছে সিপিবি। প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন সাভার, ধামরাই, আশুলিয়ার কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা। বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

যেভাবে তুলে নেওয়া হয়

সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদরে। আশুলিয়ায় আমবাগান এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। তিনি রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশের গেয়েন্দা শাখার (ডিবি) তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল করিমের ছোট ভাই।

শামসুজ্জামানের বাড়ির মালিক ফেরদৌস আলম কবির বলেন, “আমাকে সিআইডির লোকজন এসে জিজ্ঞেস করেছিল, শামসুজ্জামান এই বাসায় থাকেন কি না? আমি ‘হ্যাঁ’ বললে তাঁরা বাসায় ঢুকে তাঁকে নিয়ে যান। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, কী কারণে নেওয়া হচ্ছে? একজন বললেন, এক রিপোর্টের কারণে তাঁর নামে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু মণ্ডল বলেন, ‘ঢাকা থেকে সিআইডির একটি টিম এসেছিল। আমি শুধু সঙ্গে ছিলাম। আমবাগানের একটি বাসা থেকে একজনকে নিয়ে গেছে তারা।’

সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি

শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা এবং তাঁকে আটকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ। বিবৃতিতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায় পরিষদ।

এডিটরস গিল্ডের উদ্বেগ

শামসুজ্জামানকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ। গতকাল সংগঠনটির সভাপতি ও একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু এক বিবৃতিতে বলেন, গণমাধ্যমের জন্য মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা সবার কর্তব্য। প্রথম আলো যদি সাংবাদিকতার নীতিবিরুদ্ধ কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে, তাহলে সংক্ষুব্ধ পক্ষ বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে যেতে পারে। প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমেই এর নিষ্পত্তি হওয়া উচিত বলে এডিটরস গিল্ড মনে করে।