খবর প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৩৬ এএম
গত ১১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার আমন্ত্রণে আসা এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান দি অপটিমিস্টস্-এর কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। দশ সদস্যের এই প্রতিনিধি দল ১৫ এবং ১৬ মার্চ ওয়াশিংটন ডিসিস্থ নাসা সদর দফতরে ‘নাসা আর্থ অ্যান্ড সায়েন্স’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগদান করতে এসেছেন।প্রতিনিধি দলটি দুইটি মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণা টিমের সমন্বয়ে গঠিত। তারা মহাকাশ বিজ্ঞান বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়াতে এই আমন্ত্রণ পেয়ে এসেছেন। টিম দুটির একটি হলো ‘সাস্ট অলীক’, তারা ২০১৮ সালে ‘বেস্ট ইউজ অব ডেটা’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন এবং অপর টিম ‘মহাকাশ’, তারা ২০২১ সালে ‘বেস্ট মিশন কনসেপ্ট’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন।সৌজন্য সাক্ষাতে অতিথি শিক্ষার্থীরা জাতীয়, আঞ্চলিক, এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতার বিভিন্ন স্তরে তাদের অভিজ্ঞতার কথা, প্রতিযোগিতার কঠোর নিয়ম-কানুনের কথা, এবং তাদের নিবিষ্টতার কথা ব্যাখ্যা করেন। ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ছাড়াই মূলতঃ তারা নিজেদের উৎসাহে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এবং নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তারা বাংলাদেশে মহাকাশ কিংবা উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিকতা বা কাঠামোর অভাবের কথা জানিয়েছেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে যদি পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকতো, তাহলে অনেক সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানো সম্ভব হতো। অতিথি শিক্ষার্থীরা পরে উপস্থিত আগ্রহী প্রশ্নকর্তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
সৌজন্য সাক্ষাতকারে অপিটিমস্টস্-এর কর্মকর্তারা বলেন, ব্যতিক্রমী মেধা এবং দলগতভাবে কাজ করার দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-এ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও গৌরবের। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান দি অপটিমিস্টস্ বাংলাদেশস্থ শাখা এনজিও-র মাধ্যমে দুই হাজার সাল থেকে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের শিক্ষার্থীদের সহায়তাদান করে আসছে, এবং এর পাশাপাশি আগামীতে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়েও সহায়তা প্রদান করতে আগ্রহী। তারা সরকার, বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে লেখালেখি করা, জনমত তৈরি করা, এবং সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন। অপটিমিস্টস্-এর কর্মকর্তারা আরও বলেন যে, ধারাবাহিকভাবে বহুস্তরবিশিষ্ট বিজ্ঞান, প্রকৌশল, এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই প্রতিযোগীতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে এই দুই দলের শিক্ষার্থী সদস্যরা যে সম্ভাবনা দেখিয়েছেন, সে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে দেশ এবং সারা বিশ্ব ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াতের ব্যয়ভার নিজেদেরকেই বহন করতে হবে বলে আর্থিক সংকটে এই প্রতিনিধি দলটির যুক্তরাষ্ট্র আসা এবং ওয়াশিংটন ডিসি’র নাসা সদর দফতরে ‘নাসা আর্থ অ্যান্ড সায়েন্স’ আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে যোগদান করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। এটা জানতে পেরে আমাজন ওয়েব সার্ভিস-এর উর্ধ্বতন বাংলাদেশি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামান সহায়তাদানের উদ্যোগ গ্রহণ করায় শেষ পর্যন্ত দলটি যুক্তরাষ্ট্র আসতে সক্ষম হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অপটিমিস্টস্-এর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন অপিমিস্টস্-এর চেয়ারম্যান মিনহাজ আহমদ ও প্রেসিডেন্ট শাহেদ ইসলাম, আমাজন ওয়েব সার্ভিস কর্মকর্তা ও অপটিমিস্টস্-এর বোর্ড অভ ডিরেক্টর্স-এর সদস্য স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ জামান, এবং অপটিমিস্টস্-এর শুভাকাঙক্ষী আজিজ আহমদ, ফয়সল আহমদ এবং মশিউর খন্দকার। এ সময় অপটিমিস্টস্-এর অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শামীম আহমদ, মোহাম্মদ আলী, সাইদ আহমেদ শাব্বির, মোকাররম আহমদ প্রমুখ।
অপটিমিস্টস্-এর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলের সবাইকে উপহার প্রদান এবং মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করার সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।