NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া: হাইকমিশনার একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তান
Logo
logo

পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞা নির্বোধ, উন্মাদ: পুতিন


খবর   প্রকাশিত:  ১৩ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৩:৪৩ এএম

>
পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞা নির্বোধ, উন্মাদ: পুতিন

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে ‘নির্বোধ’ এবং ‘উন্মাদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে বাধ্য হয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে বসবাসরত রুশ নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য এই অভিযান জরুরি ছিল।

রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও বন্দর নগর সেন্ট পিটার্সবার্গে শুরু হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামের (এসপিআইইএফ) সম্মেলন। শুক্রবার সেই সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন পুতিন।

ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাশিয়ার অর্থনীতিকে চাপে ফেলতে কোনো চিন্তাভাবনা না করে ঝড়ের মতো একের পর এক নির্বোধ ও উন্মাদ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য কখনও সফল হবে না।’

‘কারণ মানসিক দৃঢ়তা রাশিয়ার জনগণের জাতিগত বৈশিষ্ট। আমরা যে কোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারি এবং তাতে জয়ী হতে পারি। আমাদের পূর্বসূরীদের মতো আমরাও যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে পারি। রাশিয়ার হাজার বছরের ইতিহাসে অসংখ্যবার এটি প্রমাণিত হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ১১২তম দিনে পৌঁছেছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে। বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের সেভারদনেতস্ক শহরে ইউক্রেন সেনাদের সঙ্গে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ বাহিনীর।

এদিকে, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে আসছে— ইউক্রেন দখল করাই ছিল রাশিয়ার মূল উদ্দেশ্য এবং এই অভিযানের ‘নীলনকশা’ অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত করে রেখেছিল মস্কো।

শুক্রবারের ভাষণে সেই অভিযোগ খারিজ করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি মন্তব্য করেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্যে দিয়ে ‘শীতল যুদ্ধের’ সমাপ্তির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রীক যে বিশ্বব্যবস্থা চলছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের মধ্যে দিয়ে তার পতন শুরু হয়েছে।

পুতিন বলেন, ‘কিয়েভ ও পশ্চিমা বিশ্ব প্রচার করছে— রাশিয়া এই যুদ্ধের নীলনকশা আগেই সাজিয়ে রেখেছিল; কিন্তু ইউক্রেনে বসবাসরত রুশভাষী জনগণ কী অবস্থার মধ্যে ছিল, সে সম্পর্কে কেউ কোনো কথা বলছে না।’

‘প্রকৃত সত্য হলো, ইউক্রেনে বসবাসরত রুশদের নিরাপত্তার জন্য আমরা এই অভিযান চলাতে বাধ্য হয়েছি। (অভিযান শুরুর পর থেকে) আমাদের ওপর একের পর এক নিষেধজ্ঞা-বাধা-হুমকি এসেছে, কিন্তু যে পরিস্থিতিতে আমরা অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সে সময় ইউক্রেনের রুশ জনগণের নিরাপত্তার জন্য আর কোনো বিকল্প আমাদের সামনে উপস্থিত ছিল না।’

যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রীক বিশ্ব ব্যবস্থার সমালোচনা করে পুতিন বলেন, ‘১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন ও শীতল যুদ্ধের অবসানের পর যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে ঈশ্বরের বার্তাবাহক ভাবা শুরু করল; এমন এক বার্তাবাহক, যার কোনো বাধা নেই, বাধ্যবাধকতা নেই— কেবল আছে স্বার্থ; আর সেসব স্বার্থ তারা উচ্চারণ করত পবিত্র ধর্মীয় শ্লোকের মতো ।’

‘কিন্তু তাদের এই উত্থানের ভেতরেই সুপ্ত ছিল ভবিষ্যৎ পতনের সম্ভাবনা। কারণ, আন্তর্জাতিক রাজনীতি কেবল একটি জাতির স্বার্থে পরিচালিত হতে পারে না। এমনকি, সেই দেশ যদি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়, তবুও নয়।’

‘গত কয়েক দশকে বিশ্ব জুড়েই শক্তির নতুন নতুন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এবং নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার পূর্ণ অধিকার তাদের রয়েছে। এটা অবশ্যই স্বীকার করে নিতে হবে।’