NYC Sightseeing Pass
Logo
logo
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

গুম সংস্কৃতির সূচনা করেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া


খবর   প্রকাশিত:  ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০১:৪২ এএম

গুম সংস্কৃতির সূচনা করেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে গুম ও হত্যার সংস্কৃতির সূচনা করেছেন সামরিক স্বৈরশাসক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না বরং রক্ষা করে। ’ তিনি বাংলাদেশকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরার জন্য কয়েকটি দেশের সমালোচনা করে বলেন, ‘সেই দেশগুলোই খুনিদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত। ’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন।

 

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সামরিক স্বৈরশাসক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সারা দেশে বিভিন্ন কারাগারে ও ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনীর শত শত কর্মকর্তা ও সেন্যকে হত্যা করার পাশাপাশি অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশে গুম ও হত্যার সংস্কৃতির সূচনা করেছিলেন। নিহতদের স্বজনরা এখনো তাঁদের কাছের এবং প্রিয়জনের লাশ পায়নি উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিএনপি এখন কোন মুখে গুম-খুনের কথা বলছে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না, সুরক্ষা দেয়। আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে। অন্যদিকে তাঁর সরকারের বারবার আবেদন সত্ত্বেও কিছু দেশ খুনিদের ফেরত না দিয়ে তাঁদের মানবাধিকার রক্ষা করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। ’

প্রধানমন্ত্রী বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এবং এই দিনে বিএনপির কোনো কর্মসূচি না থাকার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘যারা সেই দিন এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে ডাক্তার, সাংবাদিকসহ দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল; সেই নিজামী থেকে শুরু করে যাঁদের আমরা বিচার করেছি এবং বিচারের রায়ও কার্যকর করেছি এঁদেরকেই খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন। এঁদেরকেই মন্ত্রী-উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রী-উপদেষ্টা বানানোর পর এরশাদ এসে আরো এক ধাপ ওপরে উপদেষ্টা অথবা রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী বানালেন, রাজনীতি করার সুযোগ দিলেন জাতির পিতা হত্যায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিকে, সেই ফারুককে। ’

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘জাতির পিতার খুনি রশিদ ও ডালিম এখনো পাকিস্তানে পলাতক, খুনি রশিদ—যে আমার সেজো ফুফুর বাড়িতে গিয়ে চার বছরের সুকান্ত থেকে শুরু করে আমার ফুফুকে গুলি করেছে, ফুফাকেও হত্যা করেছে, তিনজন ফুপাতো বোনকে হত্যা করেছে, ভাইকে হত্যা করেছে, সে এখন আমেরিকায়। বারবার তাঁদের কাছে আমরা অনুরোধ করছি ওই আসামিকে আমাদের কাছে ফেরত দেন, সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, সেই আসামিকে তাঁরা দেন না। কারণ খুনির মানবাধিকার রক্ষা করছেন তাঁরা। অর্থ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর মানবাধিকার রক্ষা করছেন। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর মেজর নূর যে সরাসরি ৩২ নম্বরের বাড়িতে গিয়েছিল, সেই নূর এখন কানাডায়। কানাডা সরকারকে বারবার অনুরোধ করি তারা ফেরত দেয় না। খুনিদের মানবাধিকার রক্ষা করতে তারা ব্যস্ত। তাহলে আমরা যারা আপনজন ও স্বজন হারিয়েছি, তাদের অপরাধটা কী? সেটা আমি জাতির কাছে জিজ্ঞাসা করি। বিএনপি বা জামায়াত—যারা এদের জন্য হা-পিত্যেশ করে কান্নাকাটি করে, তারা এর জবাব দিক। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। যারা আপনজন হারিয়েছে তারা জানে যে তারা কী হারিয়েছে। তারাও তো লাশ পায়নি। আর যারা পেয়েছে তা-ও গলিত লাশ, দেখার মতো নয়। ’

বিএনপি নিষেধাজ্ঞার মিশনে ফেল করেছে

আলোচনাসভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রারম্ভিক বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার জন্য বিএনপি নেতা আমীর খসরু ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন। সেই মিশন ফেল। তিনি বলেন, ‘এসব গুমের কাহিনি শুনিয়ে লাভ নেই। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাবেন বাংলাদেশের ওপর? যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ২০ দেশের ৭০ জনের বিরুদ্ধে। সেখানে বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ কিন্তু নেই। তবু তাঁরা লবিস্ট নিয়োগ করেন। ’

তিনি বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাহেব আজকে (১৪ ডিসেম্বর) সকালে বুদ্ধিজীবী দিবসে সাজ্জাদুল সুমনের বাড়িতে গেলেন। ২০১৩ সালে গুম হয়েছিলেন। তাঁর বাড়িতে উনি গেলেন, আমি সবিনয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে কতজন গুম হয়, কতজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়, কতজন খুন হয়—সেই চিত্রটা কিন্তু সিএনএনে আমরা দেখেছি। ’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পিটার হাস সাহেব আজ (গতকাল) ১৪ ডিসেম্বর...যদি দেখতাম আপনি বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গেছেন সেই চিত্রটা বেশি ভালো লাগত। ’