NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শনিবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
আফ্রিকায় জিম্মি করে মুক্তিপণ, মানবপাচার চক্রের মূল হোতা আটক পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানাতে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় প্রধান উপদেষ্টা পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য আজ, ড. ইউনূসসহ ভ্যাটিকানে বিশ্বনেতারা কিয়েভে হামলা, পুতিনকে ‘থামতে’ বললেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা ভারতের ‘সাজানো নাটক’, দাবি পাকিস্তানের কাশ্মীর হামলায় সরব হলেন সোনাক্ষী সিনহা ভ্যাটিকানের উদ্দেশ্যে কাতার ত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টা সৌদির কাছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বেচবে যুক্তরাষ্ট্র, চুক্তি শিগগির হৃদয়কে দ্বিতীয়বার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বললেন তামিম পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Logo
logo

জার্মানিতে ডানপন্থী অভ্যুত্থান কি সম্ভব?


খবর   প্রকাশিত:  ০৬ জানুয়ারী, ২০২৪, ০১:০৯ পিএম

জার্মানিতে ডানপন্থী অভ্যুত্থান কি সম্ভব?

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: জার্মানির উগ্র ডানপন্থী ‘রাইশব্যুর্গার আন্দোলনের’ একটি জঙ্গিগোষ্ঠী সরকারকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু এভাবে ক্যুর মাধ্যমে সেটা কি সম্ভব?

গত সপ্তাহে তথাকথিত রাইশব্যুর্গার আন্দোলনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযান পরিচালনার পেছনের কারণগুলো বর্ণনা করে অ্যাটর্নি জেনারেল পেটার ফ্রাংক বলেছেন, অনুসন্ধানে দেখা যায় এই সংগঠনটি জার্মানির বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও মুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সহিংসতা এবং সামরিক উপায়ে নির্মূল করার পরিকল্পনা করেছিল।

এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানির অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিল। তাদের বিশ্বাস বর্তমান রাষ্ট্রটি পশ্চিমা শক্তি তথা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের দখলে থাকা প্রশাসনিক কাঠামো ছাড়া কিছু না।

 

জার্মান সাম্রাজ্যের ১৯৩৭ সালের সীমানা এখনো বিদ্যমান বলে তারা মনে করে।

 

তবে মুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মূলের নামে আসলে এই গ্রুপটি কী বোঝাতে চায়? এর অর্থ হতে পারে রাজনীতিবিদদের আক্রমণ করা, সংসদ ভবনে অভিযান চালানো, ফেডারেল সরকারকে উৎখাত করা, বিচার বিভাগ ভেঙে দেওয়া এবং সামরিক বাহিনী দখল করা।

কিন্তু আজকের জার্মানিতে এর সম্ভাবনা কতটুকু, বিশেষ করে ৭৫ বছরের বেশি সময় বিদ্যমান একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে, যেখানে রয়েছে একটি সংবিধান, দৃঢ় প্রশাসনিক কাঠামো এবং ক্ষমতা পৃথকীকরণ?

বিলেফেল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বন্দ্ব এবং সহিংসতার বিষয়ক আন্তর্বিভাগীয় গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান আন্দ্রেয়াস সিক বলেছেন, ‘জার্মান রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা করা সম্ভব। জনগণের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা কেবল গণতান্ত্রিক হিসেবেই প্রমাণ করে না, বরং গণতন্ত্রকে রক্ষার যোগ্য বলে মনে করে। ’ আন্তোনিও ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক টিমো রাইনফ্রাংক একই ধরনের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তার মতে, একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা এবং সংবিধানের বিপক্ষে গিয়ে জার্মানিতে অভ্যুত্থান সফল করা খুবই দুরূহ।

চরমপন্থীদের সুদূরপ্রসারী সংযোগ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং এর সঙ্গে জড়িত আটক ব্যক্তিদের হালকাভাবে নেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। এই গ্রুপটিকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছেন ফৌজদারি বিচার নীতির মুখপাত্র সেবাস্টিয়ান ফিডলার।

সন্ত্রাস বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পেটার আর. নিউমান সতর্ক করে বলেছেন, ‘সামগ্রিকভাবে রাইশব্যুর্গার আন্দোলন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা চালাতে সক্ষম। ’

এই সংগঠনটি অনেক কারনে বিপজ্জনক, যার একটি হলো এর গঠন। আরেকটি হলো আদর্শ, যা সবাইকে একত্রে আবদ্ধ রাখে।

গত সপ্তাহে পুলিশ ২৫ ব্যক্তিকে আটক করে, যারা এই সংগঠনের সদস্য বা সমর্থক। এ ছাড়াও এদের মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সরকারের কঠোর পদক্ষেপের বিপক্ষে যারা রাস্তায় আন্দোলন করেছে।

আইনের শাসনের ওপর হুমকি

যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন একজন বিচারক। উগ্র ডানপন্থী পপুলিস্ট দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) সাবেক বুন্দেস্টাগ এমপিও রয়েছেন। দলটিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা, অভিজাত ব্যক্তিবর্গ এবং পুলিশের সাবেক সদস্যরাও অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়াও গণতান্ত্রিক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেকের সঙ্গে এই গ্রুপের যোগাযোগ রয়েছে।

তাদের কেউ কেউ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক এবং সেগুলো তারা ব্যবহার করতে সক্ষম। অভিযানের সময় পুলিশ এমন বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দও করেছে।

এসব কারণে যারা আটক হয়েছে এবং তাদের যারা সমর্থক সকলেই আইনের শাসনের জন্য বড় ধরনের হুমকি। যদিও তারা জার্মানির শাসন ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার সীমিত সামর্থ্য রাখে।

আন্দ্রেয়াস সিক বলেছেন, ‘এরা একটি সফল অভ্যুত্থান করতে সক্ষম নাও হতে পারে। তবে তাদের মতাদর্শ ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং অন্য চরমপন্থী গোষ্ঠী, এমনকি সমাজের মূলধারার ব্যক্তিরাও এই মতাদর্শ গ্রহণ করতে পারে। ’

এ ধরনের উগ্র গোষ্ঠীর উত্থান ঠেকাতে একটি প্রতিরোধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে বর্তমান দুনিয়ায় যখন গণতন্ত্র ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে এবং ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব বেশি করে মানুষদের আকৃষ্ট করছে।

সিক সতর্ক করে বলেন, ‘চরমপন্থার পরিবর্তন হচ্ছে, বিশেষ করে সংকটের সময়ে। আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ওপর নজর দিই, কিন্তু ছোট দল বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যারা একটি রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে তাদের ওপর নজর রাখি না। ’

সূত্র : ডয়চে ভেলে