NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
মানুষ ভালো সমাধান মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকারকেই-ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমরা জটিল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি : শিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের ১৬ ইউটিউব চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ, বিবিসিকেও সতর্কতা কানাডার নির্বাচনে ফের জয় পেয়েছে লিবারেল পার্টি ইরেশের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বাঁধনসহ তারকাদের প্রতিবাদ ১৪ বছরের সূর্যবংশীর দানবীয় সেঞ্চুরিতে দুর্দান্ত জয় রাজস্থানের নির্বিঘ্নে ধর্ম পালনে ‘লাব্বাইক’ অ্যাপ বড় ভূমিকা রাখবে - প্রধান উপদেষ্টা ইউক্রেনে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা পুতিনের হাসিনাকে ‌‘চুপ’ রাখতে বলেন ড. ইউনূস, মোদী জানান পারবেন না নারী বিবেচনায় জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
Logo
logo

ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ, বাড়বে আর্থিক সুবিধা


খবর   প্রকাশিত:  ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৫:৩৯ পিএম

ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ, বাড়বে আর্থিক সুবিধা

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশগুলো ক্ষতিপূরণের দাবিতে ৩০ বছর ধরেই আন্দোলন করে আসছে। গত রবিবার মিসরে শেষ হওয়া জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৭) সেই দাবি পূরণ হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুবিধা বাড়বে। বিশেষ করে দুর্যোগের পর আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ও কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের সহায়তা আরো বাড়বে। এর পাশাপাশি বিদ্যমান তহবিল থেকে বাংলাদেশের অর্থপ্রাপ্তি বাড়বে।

 

 

জলবায়ু সম্মেলন সূত্রে জানা গেছে, এবারের জলবায়ু সম্মেলনে লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড গঠন করা হয়েছে। এই তহবিলের পরিচালন ও কার্যক্রম শুরুর জন্য এরই মধ্যে একটি ট্রানজিশনাল টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি মূলত গভর্নিং বডি তৈরি, অর্থায়ন সংগ্রহ ও ছাড়করণের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ শুরু করবে।

নতুন ও অতিরিক্ত হিসেবে তহবিলটি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করবে। নতুন এ তহবিলের কার্যক্রম ২০২৩ সালের জলবায়ু সম্মেলনে নির্ধারণ করা হতে পারে।

জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলায় বর্তমানে বেশ কয়েকটি তহবিল ও কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্যে গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড, গ্লোবাল মিটিগেশন ওয়ার্ক প্রগ্রামসহ বেশ কয়েকটি কার্যক্রম রয়েছে। গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়করণের প্রতিশ্রুতি রয়েছে উন্নত দেশগুলোর। এই অর্থ ২০২৫ সালের পর থেকে বাড়ানোর চুক্তি রয়েছে।

এবারের সম্মেলনে এ বিষয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের প্রত্যাশা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর। কিন্তু ঘোষণা না আসায় আলোচনার একটি বড় ব্যর্থতা দেখা হচ্ছে। এই তহবিলের অর্থ কী পরিমাণ বাড়বে এবং এই অর্থ কারা পাবে, কিসের ভিত্তিতে পাবে, সে বিষয়ে পরবর্তী আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। আগামী জলবায়ু সম্মেলনে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। বিদ্যমান এই তহবিল থেকেও বাংলাদেশের অর্থপ্রাপ্তি বাড়তে পারে।

এবারের জলবায়ু সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) ৪৬টি দেশের জোট এলডিসি মিনিস্ট্র্রিয়ালের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি। অন্যদিকে গ্লোবাল মিটিগেশন ওয়ার্ক প্রগ্রামের এলডিসি দেশের সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক।

গতকাল দেশে ফেরার পথে কায়রো থেকে কালের কণ্ঠকে মো. জিয়াউল হক বলেন, এবার অপ্রত্যাশিতভাবে লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছে উন্নত বিশ্ব।

নতুন এই তহবিল অন্যান্য তহবিল থেকে বেশ শক্তিশালী হবে। এই তহবিল থেকে বাংলাদেশের দুর্যোগপরবর্তী ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের অর্থপ্রাপ্তি বাড়বে। এ ছাড়া বিদ্যমান তহবিলগুলো থেকে বাংলাদেশের অর্থপ্রাপ্তি বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে জলবায়ু ক্ষতি মোকাবেলা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক তহবিল ও সংগঠনগুলো বাংলাদেশের জন্য আরো সহায়তা বাড়াবে।

জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার  দেশগুলো ১৯৯২ সাল থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসছে। ওই বছর ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত রিও সম্মেলন থেকে এই দাবি জানানো হয়েছিল। এর মাধ্যমে ৩০ বছরের দাবি পূরণ হলো। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি পর্যন্ত কমিয়ে আনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় গ্রিনহাউস কার্বন নিঃসরণ ৪৩ শতাংশ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নত বিশ্ব। এই হারে কমাতে না পারলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে না।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ পেতে হলে বাংলাদেশের সোচ্চার ভূমিকা প্রয়োজন। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি সঠিক ও বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে। জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান করে নিতে পারেনি। প্রতিবছর নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশ, যার বেশির ভাগই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে হচ্ছে। প্রাণহানির ঘটনার পাশাপাশি কৃষিতে ক্ষতি ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি, বাস্তুচ্যুত হওয়া, আর্থিক ক্ষতি বৃদ্ধি পাওয়াসহ নানা ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

এসব ক্ষতি ও প্রভাব বিশ্লেষণ করলে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় শীর্ষ তিনে থাকার কথা। কিন্তু আন্তর্জাতিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ঠিক সেভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে না।

জার্মান ওয়াচের দীর্ঘমেয়াদি ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্সে ১০টি  দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে ৭ নম্বরে। শীর্ষে পুয়ের্তোরিকোর পর রয়েছে মিয়ানমার, হাইতি, ফিলিপাইন,  মোজাম্বিক, বাহামা দ্বীপপুঞ্জ, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও নেপাল।

বাংলাদেশের আগের ছয়টি দেশের তথ্য পর্যালোচনা করলে  দেখা যাবে, এই দেশগুলোর মোট লোকসংখ্যা বাংলাদেশের একটি বিভাগের জনসংখ্যার সমান বা অনেক ক্ষেত্রে কম।