NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শনিবার, মে ১০, ২০২৫ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
বিমানের টরেন্টো, রোম ও লন্ডন ফ্লাইটে পরিবর্তন বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মহাসড়ক ব্লকেড নয়, জেলায় জেলায় স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত করুন: হাসনাত জরুরি বৈঠক ডেকেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আমরা আর্টিস্টরা অনেক স্বার্থপর: জয়া আহসান নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ৩ রুটে ফ্লাইটের সময়সূচি পরিবর্তন বিমানের ভারতে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়্যার’ এর ওয়েবসাইট বন্ধ রাতে রিশাদ-নাহিদ রানার সঙ্গে দুবাই যাবেন দুই বাংলাদেশি সাংবাদিকও নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে আহবায়ক কমিটি গঠন নিষিদ্ধ হচ্ছে যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
Logo
logo

আমরা আর্টিস্টরা অনেক স্বার্থপর: জয়া আহসান


খবর   প্রকাশিত:  ১০ মে, ২০২৫, ০৮:০৫ এএম

আমরা আর্টিস্টরা অনেক স্বার্থপর: জয়া আহসান

১৬ মে মুক্তি পাচ্ছে জয়া আহসান অভিনীত সিনেমা ‘জয়া আর শারমিন’। কোভিড-১৯ মহামারির সময় ছবিটি বানিয়েছেন পিপলু আর খান। তখনকার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে নিজের ভাবনাসহ নানান বিষয়ে জয়া আহসান কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে।

 

জয়া আহসান: সত্যিই সাহসের। সবচেয়ে বড় ব্যাপার বা চ্যালেঞ্জ ছিল, বাসার অন্য ফ্যামিলি মেম্বার, তাদের প্রতি তো আমাদের কমিটমেন্ট আছে, নিজে না হয় চলে গেলাম অভিনয় করতে। সেটা অনেক বড় একটা ব্যাপার ছিল। দ্বিতীয় ব্যাপার ছিল, সেই সময় যেসব ঘটনার মধ্যদিয়ে যাচ্ছিলাম, মনে হয়েছে, শিল্পী হিসেবে সময়টা ধরা উচিত। অনেকটা দমবন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। সেই সময় মনে হয়েছিল, ‘আমরাও আছি’ জানান দেওয়া। যে কোনো পরিস্থিতিতে আমরাও সিনেমা তৈরি করতে পারি। পিপলু ভাই প্রথম বলেছিলেন, আমি একটা ছবি করবো জয়া। চলেন কিছু করি ... থাকবেন কি না আপনি। তখন আমি বলেছি, চলেন। প্রথমে তো ছোট ছবি করার কথা ছিল। তারপর বড় ছবি করার সিদ্ধান্ত নেন।

আমরা আর্টিস্টরা অনেক স্বার্থপর: জয়া আহসান

ট্রেলারটা থেকে খুবই খুবই রেসপন্স পাচ্ছি। ট্রেলারটায় খুব বেশি কিছু দেখানো হয়েছে তা কিন্তু না। মানুষ যে সবসময় ঘটনা দেখতে চায় ... তা নয়, মানুষ অনুভূতিও দেখতে চায়। মানুষ সেই সময়টাকেও দেখতে চায়। সেই জায়গা থেকে আমার মনে হয়েছে, মানুষ পছন্দ করেছে। বিশেষ করে গানটা। খুবই সাধারণ একটা গান, কিন্তু ওই গানটাই মানুষকে অ্যাট্রাক্ট করেছে। ভেতরে একটা শূন্যতা ছিল। আমি যে রেসপন্স পাই, মানুষ বলছে গানটার ভিতরে শূনতা ছিল। আমরা তো সবাই এই রাস্তায় হেঁটেছি। প্যানডেমিক পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষ এক্সপিরিয়েন্স করেছে।

আমি আমার বারান্দা থেকে দেখতে পেতাম। মাইক্রোবাসগুলো আসতো, দেখতাম কাউকে নিয়ে যাচ্ছে ... সাদা পোশাক পরা দেখলেই মনে হতো, মৃত্যুদূত। কোভিডের সময় মৃত্য আমাদের ঘাড়ে, কানের পাশে বসে থাকতো। জানান দিতো, আমরা আছি, আমি আছি। সেই জায়গা থেকে ভালোভাবে বেঁচে গিয়েছিলাম। প্যানডেমিক আমাদের ভালো কিছু শিখিয়েছে। আমাদের ফ্যামিলি বন্ডিং, প্রাণ-প্রকৃতি ভালোবাসতে শিখিয়েছে। আমার বাড়িতে পোষ্যবোন ক্লিওপেট্রা ছিল। ও আমাদের প্যানডেমিকের যে হাহাকার, ভীতি তা থেকে অনেকখানি দূরে সরিয়ে রেখেছিল। সেটা এত শক্তিশালী ছিল যে, আমাকে ওইভাবে স্ট্রাগল করতে হয়নি। কিন্তু ছবিটা করতে এসে দেখলাম, একজন আর্টিস্ট জয়া আহসান কোভিডের সময় কী সমস্যায় পড়েছিল! বাড়িতে আটকা পড়ে আছে, এ রকম গল্পটা। সেই একাকীত্ব না হলেও এখনকার একাকীত্ব ... সবার ভেতর একটা হ’লো ফিলিং থাকে। আর্টিস্ট হিসেবে বলুন, মানুষ হিসেবে বলুন, আমার ভেতরে আপনার ভেতরে সবার ভেতরেই আছে। আমরা আর্টিস্টরা অনেক সময় সেটাকে চেরিস করি, আমরা আর্টিস্টরা অনেক স্বার্থপর হই। নানা রকম একাকীত্ব কাজ করে। প্যানডেমিকে এক রকম ভয়, কাছের মানুষকে হারিয়ে ফেলার ভয় ছিল। এখনকার একাকীত্ব ও ভয়টা অন্য রকম।

আমরা আর্টিস্টরা অনেক স্বার্থপর: জয়া আহসান

ইনস্টিটিউশনের ব্যাপারটা আমি খুব ফিল করি। আবার এটাও বিশ্বাস করি, ইনস্টিটিউট থেকে বের হলে কেউ খুব ভালো অভিনয় করে ফাটিয়ে দেবে সেটাও কিন্তু নয়। ইনস্টিটিউট আমাদের ডিসিপ্লিন শেখায়, বেসিক কিছু শেখায়। নইলে এগুলো শিখতে শিখতে অনেকগুলো বছর চলে যায়। ইনস্টিটিউট থেকে প্রপার লাইট, এডিটিং, বেসিক অভিনয় শিখে বের হবে, সে তখন শিক্ষিত হয়ে বের হবে, অন্তত অর্ধশিক্ষিত হয়ে বের হবে না। এগুলো যখন নিয়ে বের হবে, ইন্ডাস্ট্রিটা তখন এগিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ইনস্টিটিউশনটা আমাদের দরকার। এবং আমাদের আলাদা আলাদা ফিল্ম ডিপার্টমেন্ট দরকার। মেকআপ ডিপার্টমেন্টটা আরও স্ট্রং হওয়া দরকার। কস্টিউম বিভাগটা সুন্দর, আর একটু গোছানো হলে ভালো হতো। আমাদের হেয়ার ডিপার্টমেন্ট নেই, এটা হওয়া খুব দরকার। এগুলো স্ট্রাগল আছে, এগুলোর বেসিক খুব দরকার।

আমরা আর্টিস্টরা অনেক স্বার্থপর: জয়া আহসান

ওরে বাবা... সাহিত্যনির্ভর বেশ কয়েকটা কাজ করেছি... ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’, ‘গেরিলা’ ... এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। তবে আমার জাহানারা ইমামের চরিত্র করার খুব ইচ্ছে ছিল, যদি কখনো সুযোগ হয় ... আরও অনেক চরিত্র আছে, যেগুলো করার ইচ্ছে। একটা চরিত্র করার ইচ্ছে ছিল, সেটা করতে পারবো না। সেটা আমি অনেক জায়গায় বলেছি। রবিঠাকুরের রতন, পোস্টমাস্টারের রতন। সেই বয়সে আমি ফিরে যেতে পারবো না। (অট্টহাসি...) সেটা আর করা হবে না।

 অমর করার মতো কিছু করেছি বলে আমার জানা নেই। তবে বাংলাদেশের ইতিহাস যতদিন থাকবে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যতদিন থাকবে, মুক্তিযুদ্ধের ছবি যতদিন থাকবে ততোদিন ‘গেরিলা’র বিলকিস বানু থেকে যাবে। সেটা করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। তারপর ‘ডুব সাঁতার’-এ রেনু চরিত্রটা খুবই পছন্দের, ভালোবাসার। আমার খুব ভালোসার চরিত্র ‘বিসর্জন’-এ পদ্মা চরিত্রটা, যেটা আমি পশ্চিম বাংলায় গেলে টের পাই, মানুষ মনে রেখেছে।

 

আমরা আর্টিস্টরা অনেক স্বার্থপর: জয়া আহসান

 ওনার ডেডিকেশন লেভেলটা অনেক বেড়েছে। খুব মন দিয়ে কাজ করেন। নিজের চরিত্রের জন্য সর্বোচ্চটা তিনি দেন, যেটা অ্যাপ্রিশিয়েট করবার মতো।

(হাসতে হাসতে) কেন আপনার কাছে মনে হলো এটা! আপনি কি চান আমি অন্তরালে চলে যাই।

তাহলে যাব না। কেন যাবো (হাসি)। যতদিন আমার ভালো লাগবে, কাজ করতে ইচ্ছে করবে, ততদিন করবো। এই কাজে তো আনন্দ খুঁজে পাই, একটা মুক্তি পাই। সেটা যতদিন পাবো, ততদিন থাকবো।

 অনেক কিছু দরকার। আমাদের দেশটার বয়স তো বেশি না। সেখানে আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির বয়সও খুব বেশি তা নয়। অনেক কিছু পাল্টে রিঅ্যারেঞ্জ করা দরকার। যারা নীতিনির্ধারক, তারা খুব ভালো বোঝেন। আমি জাস্ট একজন সংস্কৃতিকর্মী, এর বেশি কিছু নই। সেই জায়গা থেকে বেশি কিছু বলতে চাই না।

 এভাবে বলতে পারছি না, পাকিস্তানি ছবিতে, চায়নার ছবিতে জাপানিজ ছবিতে, সময় বলবে আমি করবো কি না। তবে আমি কোনো সম্ভাবনা দেখি না। বাংলা ছবিতে কাজ করছি, বাংলাটা বলতে পারি। কষ্ট করে হিন্দি শিখেছি, ব্যাস এটুকুই। আগে হিন্দিটা ঠিক করে করি, তারপর অন্য ভাষায়।

ওটিটির কাজগুলো তো অনেক ভালো হচ্ছে। অনেক ভালো হবে। তবে ওটিটিতে কাজ করতে গেলে আমাদের বেধে দেওয়া হয়, এটা করা যাবে না, এটা বলা যাবে না। স্বাধীনতা দরকার। যেকোনো কিছুর রাইট নিয়ে যে কোনো কিছু বানাতে পারবে, সেই জায়গায় পরিষ্কার থাকা দরকার।