NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
মানুষ ভালো সমাধান মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকারকেই-ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমরা জটিল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি : শিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের ১৬ ইউটিউব চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ, বিবিসিকেও সতর্কতা কানাডার নির্বাচনে ফের জয় পেয়েছে লিবারেল পার্টি ইরেশের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বাঁধনসহ তারকাদের প্রতিবাদ ১৪ বছরের সূর্যবংশীর দানবীয় সেঞ্চুরিতে দুর্দান্ত জয় রাজস্থানের নির্বিঘ্নে ধর্ম পালনে ‘লাব্বাইক’ অ্যাপ বড় ভূমিকা রাখবে - প্রধান উপদেষ্টা ইউক্রেনে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা পুতিনের হাসিনাকে ‌‘চুপ’ রাখতে বলেন ড. ইউনূস, মোদী জানান পারবেন না নারী বিবেচনায় জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
Logo
logo

ইরেশের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বাঁধনসহ তারকাদের প্রতিবাদ


খবর   প্রকাশিত:  ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:০৪ এএম

ইরেশের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বাঁধনসহ তারকাদের প্রতিবাদ

অভিনেতা ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে মিরপুরে মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যার অভিযোগে এ মামলা করেছেন নিহত শ্রাবণের বড় ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী। একই মামলায় তার সঙ্গে আসামি করা হয়েছে পতিত স্বৈরাচার সরকার প্রধান শেখ হাসিনাসহ আরও অনেককেই। মামলায় অভিনেতা ইরেশ ১৫৭ নম্বর এজাহার নামীয় আসামি।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পক্ষে সরব থাকা ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে মামলার খবরে অবাক হয়েছেন শোবিজ তারকারা। তাদের অনেকেই দাবি করছেন, চব্বিশের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সম্মুখযোদ্ধা ছিলেন এই অভিনেতা। প্রমাণ হিসেবে ইরেশ যাকেরের ফেসবুকের ‘লাল’ রঙের ছবি শেয়ার করেছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে থাকার পরও এ অভিনেতার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরাও।

 

ইরেশের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিকমাধ্যমে এক প্রতিক্রিয়ায় বাঁধন লিখেছেন, ‘আমি এখন জীবনের এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছি যেখানে আমি সঙ্গে সঙ্গেই সব কিছুর প্রতিক্রিয়া দেখাই না। তবে কখনও কখনও নীরবতা যেন বিশ্বাসঘাতকতার মতো মনে হয়। ইরেশ সবসময় সত্যের পক্ষে থেকেছেন। ছাত্রদের সঙ্গে, আমাদের সঙ্গে, প্রতিটি সংগ্রামের মুহূর্তে তিনি ছিলেন। ৪ আগস্ট, যখন কারফিউ ঘোষণা করা হয়, আমরা শাহবাগে একসঙ্গে ছিলাম। সব বিপদের মাঝেও তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যে আমি যেন নিরাপদে কালশী ফ্লাইওভারে পৌঁছাতে পারি- এমন এক সময়ে যখন যেকোনো কিছু ঘটে যেতে পারত, তিনি বড় ঝুঁকি নিয়েছিলেন।’

সেদিন রাতের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘সেই রাতে, গণভবনে যাওয়ার জন্য আমাদের উপর প্রচণ্ড চাপ ছিল। তবে ইরেশ যাকের দৃঢ়ভাবে না বলেছিলেন। তিনি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ছাত্রদের পাশে, সত্যের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি। আজ যখন দেখি তাকে হয়রানি করা হচ্ছে, তখন হৃদয় ভেঙে যায়। যদিও এটা আমাদের জন্য নতুন নয়- আমরা আগেও দেখেছি যারা সাহস করে দাঁড়িয়েছে, তাদের এভাবে দমন করা হয়েছে। তবুও এখন, যখন আমরা ভেবেছিলাম আমরা একটি ভাল, নিরাপদ দেশ গড়ে তুলছি, তখন এটা আরও বেশি কষ্টের এবং হতাশাজনক। যারা সত্যের পক্ষে দাঁড়ায়, তাদের রক্ষা করা উচিত, নিপীড়ন নয়। আমরা ইরেশের পাশে আছি। আমরা তাদের পাশেই আছি, যারা কখনও আশা ছাড়েনি।’

 

পরিচালক শিহাব শাহীন লিখেছেন, ‘ইরেশ যাকের জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আর তার বিরুদ্ধে কিনা জুলাই হত্যা মামলা!’ সেই পোস্টে আরেক নির্মাতা ও অভিনেতা সুমন আনোয়ার মন্তব্য করেছেন, ‘খুব দুঃখজনক’।

নির্মাতা আশফাক নিপুণ ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘অগাস্ট মাসের ১ তারিখ ফার্মগেটে আমার সাথে, আমাদের অনেকের সাথে পুরোটা সময় ইরেশ যাকের এবং তাঁর স্ত্রী দাঁড়িয়েছিলেন জুলাই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে। উনার এবং আমাদের অনেক সহকর্মী একই সময় বিটিভি ভবনে শোক প্রকাশ করতে গেলেও, উনি সেখানে যান নাই।’

এ ধরনের গায়েবী মামলা যে জুলাই গণহত্যার মূল আসামিদের পরিত্রাণের পথই সুগম করে দেয়, সেই দিকটি মনে করিয়ে দিয়ে এই নির্মাতা আরও বলেন, ‘উনার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে, হোক কিন্তু উনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নিতান্তই হাস্যকর। এ রকম গায়েবী মামলায় আসামি করতে গিয়ে জুলাই হত্যাকাণ্ডের সত্যিকার আসামিদের পরিত্রাণের পথ যে সুগম করে দেয়ার পাঁয়তারা হচ্ছে। সেই বিষয়ে সাবধান হন সরকার।’

 

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির সিইও, প্রযোজক-নির্মাতা রেদওয়ান রনি লিখেছেন, ‌‘যিনি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তার বিরুদ্ধেই জুলাই হত্যা মামলা! লজ্জাজনক তো বটেই, তবে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই, কারণ এতে জুলাই হত্যা মামলাগুলোকে খেলনা ও মূল অপরাধীদের আড়াল করার ষড়যন্ত্রটা চোখের আড়ালে থেকে যায়। জুলাই আন্দোলন যখন থেকে শুরু হয়, তখন থেকেই সক্রিয় ছিলেন ইরেশ যাকের। আগস্টের ১ তারিখ শিল্পী-নির্মাতা-কলাকুশলীরা সংসদ ভবনের সামনে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ জোরপূর্বক সরিয়ে দেয়, পরে আমরা সবাই ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে দাঁড়াই, সেই মিছিলে ইরেশ ভাই ও তার স্ত্রী মিম ছিল, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, মাইমুন খান একসাথেই দাঁড়িয়েছিল বৃষ্টির মধ্যে। যিনি পরিবারের প্রায় সবাইকে নিয়ে রাজপথে নেমে গিয়েছিল তার বিরুদ্ধে এই মামলা হেলাফেলা করে দেখার বিষয় না। আন্দোলনে মূল অপরাধীদের কেউ হালকা করে ফেলার জন্য এবং হত্যা মামলাগুলোকে বিতর্কিত করার জন্যই এগুলো করা হচ্ছে।’

 

 

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে এই প্রযোজক-নির্মাতা বলেন, ‘সরকারকে আরও সতর্ক হয়ে মামলাগুলোর উদ্দেশ্য সফল করতে হবে, অবিলম্বে মূল অপরাধীদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’