খবর প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
ছায়ানটের আয়োজনে রমনার বটমূলে হয়ে গেল বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ভৈরবীর রাগালাপ দিয়ে সূচনা হয় ছায়ানটের ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বরণের প্রভাতী আয়োজন। যা শেষ হয় জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে রমনা পার্কে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ভিড় বাড়ে পার্কে। নারী-পুরুষ ও ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে সর্বস্তরের মানুষ বর্ষবরণ আয়োজনে অংশ নিতে আসছেন। বাবা-মায়ের হাত ধরে আসছে শিশুরা৷ সবার পোশাকে বৈশাখী সাজ। বিশেষত নারীদের শাড়ি আর পুরুষদের পরনে পাঞ্জাবি।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আগতরা বলছেন, নতুন বছর হোক ঐক্য আর সম্প্রীতির৷ দেশ ও জাতির বৃহৎ কল্যাণে নিজদের মধ্যে ঐক্য আর সম্প্রীতির ধারা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন তারা৷ একই সঙ্গে সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে সহমর্মিতা আর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে উজ্জীবিত হোক আগামীর দিনগুলো।
রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী নওমী মিতু বলেন, নতুন বছর ভালো কাটুক এই প্রত্যাশা আমাদের সবার। ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আমরা একে অপরের সঙ্গে বসবাস করতে চাই৷ সব ভেদাভেদ ভুলে আমরা যেন বিশ্বের বুকে উন্নত জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি, বছরের প্রথম দিনে সেই প্রত্যাশাই করছি৷
স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এসেছেন সরকারি চাকরিজীবী আব্দুল ওহাব। তিনি বলেন, নতুন বছরে দেশবাসীর সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করি। একটি মানবিক বাংলাদেশ যেন গড়তে পারি সেই চেষ্টা যেন আমাদের সবার থাকে৷ আমরা একটি সাম্যের বাংলাদেশ চাই৷
ষাটোর্ধ্ব জিবলু রহমান বলেন, নতুন বছরে আমরা ঐক্যের বাংলাদেশের ধারা দেখতে চাই৷ দেশের স্বার্থে সবাই এক কাতারে থাকতে চাই৷ আগামীর বাংলাদেশ সুখি আর সমৃদ্ধির বাংলাদেশ দেখতে চাই৷
রমনা পার্কে আসা শিশুদেরও বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে৷ তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রিমি বলেন, আজকে আমি শাড়ি পরে এসেছি নতুন বছরকে বরণ করতে৷ আমার খুব ভালো লাগছে৷ অনুষ্ঠান দেখছি৷ আনন্দ করছি৷
এবারের আয়োজনে বটমূলে মোট ২৪টি পরিবেশনা ছিল। এরমধ্যে ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক কণ্ঠের গান ও ৩টি পাঠ থাকছে। নববর্ষের কথন পাঠ করেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। আয়োজন শেষ হয় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে।
এবার রমনার বটমূলে পূর্ব-পশ্চিমে অর্ধবৃত্তাকারে ৭২ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট প্রস্থের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। মঞ্চে মোট পাঁচটি ধাপ ছিল। পহেলা বৈশাখের প্রভাতে কণ্ঠ ও যন্ত্রশিল্পী মিলে প্রায় দেড়শ জনের সুরবাণীতে নতুন বছরকে আবাহন জানানো হয়।