NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
ভ্যাটিকানের উদ্দেশ্যে কাতার ত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টা সৌদির কাছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বেচবে যুক্তরাষ্ট্র, চুক্তি শিগগির হৃদয়কে দ্বিতীয়বার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বললেন তামিম পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
Logo
logo

কারারক্ষী স্বামীর নির্যাতনের বিচার চাইতে গিয়ে জেলারের কু-প্রস্তাব ঃ আদালতে পিপি’র প্রতারনা


খবর   প্রকাশিত:  ৩০ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৫৪ পিএম

কারারক্ষী স্বামীর নির্যাতনের বিচার চাইতে গিয়ে জেলারের কু-প্রস্তাব ঃ আদালতে পিপি’র প্রতারনা


কাজী কামাল হোসেন,নওগাঁ: পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় স্ত্রীকে শারিরীক নির্যাতন এবং কয়েক দফা বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার প্রচেষ্টা চালিয়েছে কারারক্ষী স্বামী। স্বামী ও শ্বাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শাপলা বেগম নামের  গৃহবধু বর্তমানে প্রায় ৭ বছরের এক ছেলে সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। স্বামীর পরকীয়া আর নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ করতে গিয়ে জেলারের কু-প্রস্তাবের শিকার হতে হয়েছে তাকে। আদালতে মামলা করে পিপি’র দ্বারা প্রতারিত হয়ে বিচার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন ওই গৃহবধু। 

অসহায় শাপলা বেগম নওগাঁ প্রেসক্লাবে সোমবার(১ আগস্ট) দুপুরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর এই নির্যাতনের কাহিনী তুলে ধরে এবং জেলারের আচরণ ও পিপি’র প্রতারনার বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত লিখিত বক্তব্যে জানা গেছে, গত ২০১০ সালের ১১ জুন তারিখে নওগাঁ সদর উপজেলার উলিপুর গ্রামের মোঃ সাইদুর রহমানের মেয়ে শাপলা বেগমের বিয়ে হয় সদর উপজেলার চুনিয়াগাড়ি গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেন ছেলে কারারক্ষী আতিকুর রহমানের সাথে। বিয়ের এক বছর পর বাড়ি নির্মানের কথা বলে প্রবাসী পিতার নিকট থেকে স্বামী আতিকুর রহমান ও তার মা ১০ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। চাকুরীর সুবাদে ২০১২ সালে গাইবান্ধার ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আতিকুর তার স্ত্রী শাপলা’র উপর নানাভাবে নির্যাতন শুরু করে। ২০১৬ সালে নাটোরে এবং সবশেষে ২০১৮ বগুড়ায় ভাড়া বাসায় অবস্থানকালেও অব্যাহত নির্যাতন চালায় তার স্বামী। বগুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। 

নির্যাতনের কারন তার স্বামী নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। মোবাইল ফোন থেকে ওই সব মেয়েদের নম্বর সংগ্রহ করে তাদের নিকট ফোন দিয়ে বলে যে সে আমার স্বামী। আমাদের একটা সন্তান আছে। তাদের নিকট সংসার বাচানোর আকুল আবেদন করেন। তারপর থেকে নির্যাতনের মাত্রা দ্বিগুন হয়ে যায়। গত ২০২০ সালের ২৪ আগষ্ট শাপলাকে গ্রামের বাড়ি চুনিয়াগাড়িতে রাখে। তখন সে বগুড়ায় চাকুরী করে। গ্রামের বাড়িতেও মায়ের সহযোগিতায় কয়েকদফা হত্যার প্রচেষ্টা চালায়। এমন কি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু স্বাক্ষর না করলে মা ও পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় বেদম মারপিট করে। আবারও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ সংবাদ পেয়ে চন্ডিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বেদারুল ইসলাম মুকুল এবং সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় শাপলার মা মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে সেই থেকে বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছে। 


গত ২৬ আগষ্ট ২০২০ তারিখে বগুড়ায় জেলার শরিফুল ইসলামের কাছে বিভাগীয়ভাবে অভিযোগ করার জন্য গেলে জেলার তাকে একা এক ঘরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন  অশ্লীল ছবি দেখিয়ে শারিরীক সম্পর্কের কু-প্রস্তাব দেয়। কোনভাবে নিজেকে রক্ষা করে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন শাপলা। এ ব্যপারে শরিফুল ইসলাম ও স্বামী আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে স্বারাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের নিকট আবেদন করেও কোন ফল হয়নি। বাধ্য হয়ে গত ২০২০ সালে ৮ সেপ্টেম্বর নওগাঁ বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এা মামলা দায়ের করেন। যা সদর থানায় রেকর্ড করা হয় যার নম্বর ৪১২/২০২০। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছিল। 

এ সময় আদালতের পিপি এ্যাডভোকেট নাহিদ বিবাদীর সাথে যোগসাজস করে আপোষ করে দেয়ার নামে এবং পুনরায় সুষ্ঠুভাবে সংসার যাতে করতে পারেন এমন প্রস্তাব দিয়ে আদালতে চুপচাপ থাকার পরামর্শ দেন। চুপচাপ থাকলে একমাসের জন্য আতিকুরের জামিন হলে পরবর্তীতে সংসার টিকিয়ে রাখার প্রক্রিয়া শুরু করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে শাপলা পিপি’র কথা মত আদালতে কোন কখা কবলেননি।  কিন্তু জামিন হওয়ার পর পিপি কথা ঘুরিয়ে ফেলেন। আপোষের কথা বললে পিপি বলে আপোষের কথা বলা যাবেনা। স্থায়ী জামিন করে দিলে আপোষ হবে। তখন শাপলা বুঝতে পারেন যে পিপিও বিশ্বাসঘপতকতা করেছে। এখন শাপলা বেগম ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় আইনের দরজায় মাথা খুড়ে মরছেন। একটি সন্তান নিয়ে পিতার বাড়িতেদুর্বিসহ দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিনাতিপার করছেন। তার প্রশ্ন তিনি কি কোন বিচার পাবেন না ?