NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, জুন ৯, ২০২৫ | ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Logo
logo

১৫ বছরে নানকের সম্পদ বেড়েছে ৩০ গুণ


খবর   প্রকাশিত:  ২৯ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৪৯ পিএম

১৫ বছরে নানকের সম্পদ বেড়েছে ৩০ গুণ

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের সম্পত্তি ১৫ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৩০ গুণ। এটি শুধু সরকারি হিসাব। এর বাইরেও আরো বিপুল অবৈধ সম্পত্তি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, নানক ও তাঁর স্ত্রীর যৌথ সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫১ টাকার।

 

২০২৪ সালের হলফনামায় ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ টাকার সম্পদ দেখানো হয়। এই হিসাবেই তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ।

আওয়ামী লীগের অন্যতম দাপুটে নেতা সাবেক সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী সরকারের দুর্নীতির প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে ছিলেন না। আয়কর তথ্যের হিসাবে ২০০৮ সালের পর থেকে ১৫ বছরে নানকের সম্পদ বেড়েছে ৩০ গুণ।

 

আওয়ামী লীগের এই নেতার জমিজমা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে; যার কিছু আছে ঢাকায়, কিছু নিজ জেলা বরিশালে আবার কিছু আছে কক্সবাজারেও।

২০০৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে জায়গা করে নেন নানক। এরপর শেখ হাসিনার ছায়াছত্রে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পান তিনি। মন্ত্রণালয়ে থাকাকালেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির, যেখানে টেন্ডার সিন্ডিকেটে পার্সেন্টেজ নেওয়ার জন্য বেশ কঠোর ছিলেন এই নেতা।

 

২০০৮ সালের নির্বাচনে তাঁর দাখিল করা হলফনামায় দেখা যায়, নানক ও তাঁর স্ত্রীর যৌথ সম্পদের পরিমাণ হিসাবে ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫১ টাকা। এ ছাড়া ব্যবসা ও কৃষিকাজ থেকে তাঁদের বার্ষিক আয় দুই লাখ টাকা বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেন নানক। পরের পাঁচ বছরের ক্ষমতায় যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান নানক। ২০১৪ সালের নির্বাচনের হলফনামায় দাখিল করা তথ্যে নানক পরিবারের সম্পদ ১০ গুণ বেড়ে যায়।

২০১৪ সালে এসে ছয় কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা হয়ে যায়।

সম্পদ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে স্ত্রীর চাকরি, কৃষি, মৎস্য ব্যবসাসহ আরো অনেক কিছু উল্লেখ করেন নানক। অলৌকিকভাবে ২০১৪ সালে এসে আওয়ামী এই নেতার বার্ষিক আয়ও দুই লাখ থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়।

 

এরপর দ্বাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন চাইলে দল থেকে গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়ায় সেবার সংসদের বাইরেই রয়ে যান নানক। তবে ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে দূরে থাকেননি এই নেতা। ছলে-বলে-কৌশলে অবৈধ আয় করেই গেছেন তিনি। সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবারও দলীয় মনোনয়ন পান। এবার নানক ও তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তি ১৫ বছরে প্রায় ৩০ গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ টাকায়।

২০০৮ সালে নানক কৃষি-অকৃষি মিলিয়ে মাত্র দুই একর ৬৫ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন। ২০২৪ সালে এসে নানকের রাজধানীর উত্তরায় ছয়তলা বাড়ি, মোহাম্মদপুরে আটতলা বাড়ি, কক্সবাজারে জমি, জন্মস্থান বরিশালে দুটি বাড়ি, বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় ভূ-সম্পত্তি এবং মাছের খামারের মালিক হয়ে যান। এসব কিছুর বেশির ভাগই পৈতৃক সম্পত্তি বলে দাবি করেন তিনি।

এতসব সম্পদ বাদেও আরো একর একর জমিজমার মালিক সাবেক সরকারের এই নেতা। তবে এসব সম্পদের তথ্য তিনি গোপন রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বিরোধী দলের রাজনীতি করার সময় নানকের বিরুদ্ধে নানা সময় অনেক মামলা হয়, যার বেশির ভাগ থেকেও তিনি অব্যাহতি পেয়ে যান কোনো জবাবদিহি ছাড়া। বৈধ-অবৈধ নানা উপায়ে আওয়ামী লীগের নেতা মালিক হয়েছেন শতকোটি টাকার সম্পদের।