তখনো বাংলাদেশে নারী ক্রিকেট সেভাবে প্রচারের আলোয় আসেনি। হাঁটিহাঁটি পা পা করছিলেন বাংলাদেশে নারী ক্রিকেটের শুরুর দিকের সারথি সালমা খাতুন-জাহানারা আলমরা। এর মধ্যে ঘরের মাঠে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়ে পাঁচ ম্যাচের দুটিতেই জয় পায় বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে হারায় শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডকে।
সেটাই শেষ। এরপর আরো চারটি বিশ্বকাপ খেললেও জয় বাংলাদেশের কাছে সোনার হরিণ হয়ে আছে। এবার সেই দুঃস্মৃতি ভোলার জন্য মরিয়া বাংলাদেশের মেয়েরা। দলের পক্ষ থেকে যে যখন কথা বলেছেন, জয়ের সেই গেরো খোলার প্রত্যয়ই শোনা গেছে সবার কণ্ঠে।
বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শারজায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আজ বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের। ম্যাচের আগে অধিনায়ক নিগার সুলতানার কণ্ঠেও একই সুর, ‘পুরো দলের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এই বিশ্বকাপ। কারণ আমরা যত বিশ্বকাপ খেলেছি, ২০১৪ বাদে কখনো বলার মতো কিছু করতে পারিনি। আমরা চাই, এই বিশ্বকাপটা যেন আমাদের জন্য মনে রাখার মতো এবং স্মরণীয় হয়।
’
প্রথম ম্যাচে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ডকে পাচ্ছে বাংলাদেশ। স্মরণীয় করে রাখতে চাওয়ার শুরুটা স্কটিশদের দিয়েই করতে চাওয়ার আশা নিগারের, ‘আমি বলব, খুবই হতাশাজনক (এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স)। এবার এই দুঃখটা আমরা ঘোচাতে চাই, যেন আমাদের এই দুঃখ আর না থাকে। আমরা শুরুটা করতে চাই আগামীকালের (আজ) ম্যাচ দিয়ে।’ মূল লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ।

প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মেয়েদের সঙ্গে পেরে না উঠলেও পরেরটিতে বাংলাদেশের কাছে পাত্তা পায়নি পাকিস্তান। এই মুহূর্তে দলের অবস্থা নিয়ে নিগার বলছিলেন, ‘আমাদের দল যেভাবে খেলে আসছে এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচটা যেভাবে খেলেছে, সবার মধ্যে একটা ভালো ছন্দ দেখেছি। সবার ম্যাচ জেতার ক্ষুধা আছে। প্রত্যেকটা খেলোয়াড় একজন আরেকজনকে মাঠে সহায়তা করছে। ব্যাটিং ইউনিট ভালো করেছে, ভালো একটা স্কোর দাঁড় করেছিলাম আমরা, বোলাররাও অনেক ভালো ব্যাকআপ দিয়েছে, ফিল্ডাররা তো অসাধারণ করেছেই (পাকিস্তানের বিপক্ষে)। সব মিলিয়ে আমি যদি চিন্তা করি, এই মুহূর্তে দল ভালো একটা অবস্থায় আছে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সবাই প্রস্তুত। জয়ের জন্যই আমরা মাঠে নামব।’
এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে আসা স্কটল্যান্ডের মেয়েদের হালকাভাবে না নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন নিগার, ‘আমরা স্কটল্যান্ডের সঙ্গে যতবার খেলেছি, ততবারই জয় পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য ভালো ব্যাপার। কিন্তু কোনো দলকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ প্রতিটি দলই এখানে সমান সামর্থ্য নিয়ে এসেছে।’ আজ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের শততম ম্যাচ খেলতে নামার অপেক্ষায় থাকা নিগারের চোখ শুধুই দলের জয়ে, ‘এটা অন্য রকম একটা অনুভূতি। অনেক বেশি খুশি। অনেক সময় আবার অবাকও লাগে, দেখতে দেখতে ১০০টি ম্যাচ হয়ে সবচেয়ে বেশি খুশি হব যদি ১০০তম ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে অবদান রাখতে পারি।’