NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া: হাইকমিশনার একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তান
Logo
logo

জার্মানির টুরিঙ্গিয়া রাজ্যে অভিবাসনবিরোধী এএফডি সবচেয়ে বড় দল


খবর   প্রকাশিত:  ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম

জার্মানির টুরিঙ্গিয়া রাজ্যে অভিবাসনবিরোধী এএফডি সবচেয়ে বড় দল

জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য টুরিঙ্গিয়ায় অতি ডানপন্থী এএফডি এক নম্বর দল হলো। স্যাক্সনিতে তারা দুই নম্বর দল হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথমবার জার্মানির কোনো রাজ্যে অতি ডানপন্থী দল সবচেয়ে বড় দল হলো। তবে তার পরও তারা সরকার গঠন করতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

কারণ বাকি সব দল তাদের বিরোধিতা করছে।

 

অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) টুরিঙ্গিয়াতে ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে। স্যাক্সনিতে তারা পেয়েছে ৩০ শতাংশ ভোট। এখানে তারা ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) ঠিক পেছনেই আছে।

 

এই ফলাফল নিয়ে রীতিমতো উৎসাহ ছিল। কারণ গোয়েন্দারা দুইটি রাজ্যেই এএফডিকে ‘ডানপন্থী চরমপন্থী’ বলে অভিহিত করেছে। টুরিঙ্গিয়াতে এএফডি চেয়ারম্যান বিয়র্ন হখে দলের সবচেয়ে কট্টরপন্থী নেতা বলে পরিচিত। তিনি বারবার নাৎসি আমলের ভাষা ব্যবহার করেছেন।

২০২৪ সালে দুবার তাকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছেন। কারণ তিনি নিষিদ্ধ স্লোগান দিয়েছিলেন।

 

এএফডি শাসন করতে চায়
স্থানীয় সময় রবিবার সন্ধ্যায় ফলাফল প্রকাশের পরই এএফডির নেতা টিনো কুপালা বলেছেন, ‘একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে। ভোটদাতারা নীতি পরিবর্তন চাইছেন। তারা আমাদের টুরিঙ্গিয়াতে শাসন করার জন্য রায় দিয়েছেন।

 

এএফডির প্রধান দাবি হলো, ‘আভিবাসন নীতিতে বদল আনতে হবে। শরণার্থীদের জার্মানি থেকে বের করে দিতে হবে।’


 

তবে নির্বাচনী সাফল্যের পরও এএফডিকে সম্ভবত বিরোধী হয়েই থাকতে হবে। কারণ বাকি সব দল জানিয়ে দিয়েছে, তারা এএফডির সঙ্গে হাত মেলাবে না।

বিয়র্ন হখে বলেছেন, ‘আমরা টুরিঙ্গিয়াতে এক নম্বর দল। আমরা অন্যদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করব।’

এএফডির উত্থান
কয়েক বছর ধরে এএফডির উত্থান হচ্ছে এবং তা নিয়ে প্রতিবাদও হচ্ছে, সাবধানবানীও শোনা যাচ্ছে। অনেক গবেষক এএফডির মতাদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

ইতিহাসবিদ জেন-ক্রিশ্চিয়ান ওয়াগনার বলেছেন, এএফডির নীতি আমানবিক ও বিরক্তিকর। তিনি এএফডির প্রচার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি সাড়ে তিন লাখ পরিবারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বলেছিলেন, হখে হিটলারের দলের ভাষাকে গ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা করছেন। ওয়াগনার এই ফলাফলকে ‘বিপর্যকর ও গণতন্ত্রের বিপদ’ বলে অভিহিত করেছেন।

এ সব প্রয়াস সত্ত্বেও নির্বাচনের পর এএফডি আরো ক্ষমতাশালী হয়েছে। তারা জানিয়েছে, তারা জার্মানির রাজনীতিতে ব্যাপক বদল আনতে চান।

কতটা প্রভাব ফেলবে এএফডি?
দুই রাজ্যে এএফডি হয়তো সরকারে যেতে পারবে না, কিন্তু তাদের যথেষ্ট প্রভাব থাকবে। দুই রাজ্যেই যে সব সিদ্ধান্ত দুই তৃতীয়াংশ ভোটে নিতে হবে, সেগুলো প্রভাবিত করার ক্ষমতা তাদের থাকবে।

টুরিঙ্গিয়াতে বিচারবিভাগে আগামী মাসগুলিতে অনেকে অবসর নেবেন। তারপর বিচারপতিদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে এএফডি ব্লক করে দিতে পারবে। এই ক্ষেত্রে তাদের প্রভাব অস্বীকার করা যাবে না। এএফডি নেতারা নির্বাচনের আগেই বিচারপতিদের নিয়ে মতপ্রকাশ করেছেন। হখে দুবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চ্যানেলে হখে এ নিয়ে মন্তব্যও করেছেন।

সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে এএফডি রাজ্যের পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এই পদের ক্ষমতা খুব বেশি। তিনিই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে নিয়োগ করেন, তাকে বরখাস্তও করতে পারেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও রাখেন। তিনি কোনো পাস হওয়া বিলে সই করতে অস্বীকারও করতে পারেন।

সমাজবিজ্ঞানী ডেভিড বেগরিখ বলেছেন, ‘এই নির্বাচনের ফলেফল থেকে জার্মানির রাজনীতিকরা যেন ভুল সিদ্ধান্তে না আসেন। তারা যেন পূর্ব জার্মানির মানুষকে, অতি ডানপন্থী ও অগণতান্ত্রিক না বলেন।’ তার মতে, ‘রাজনীতিকদের অতি-ডানপন্থীদের রাজনৈতিক কর্মসূচির বিরোধিতা করতে হবে এবং যারা গণতন্ত্রকে বাঁচাতে বদ্ধপরিকর তাদের দিকে নজর ফেরাতে হবে। এএফডির এই সাফল্যের পর গণতান্ত্রিক প্রয়াসকে জোরদার করতে হবে।’