খবর প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:০৩ এএম
গত শনিবার গভীর রাতে ‘তীব্র বমি বমি ভাব’ হচ্ছে বলে জানানোর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কার্যালয়ে চিকিৎসকদের দুটি দল ছুটে যান। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে মেডিক্যাল ইমারজেন্সি চলার পর পুতিনের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি ঘটে। পরে চিকিৎসকরা সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
বুধবার রাশিয়ার রহস্যময় টেলিগ্রাম চ্যানেল ‘জেনারেল এসভিআর’র বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। রাশিয়ার ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভিক্টর মিখাইলোভিচ (ছদ্মনাম) ওই টেলিগ্রাম চ্যানেলটি পরিচালনা করেন।
ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, ওই দিন প্রেসিডেন্ট পুতিনের ‘জরুরি চিকিৎসাসেবা’ প্রয়োজন হয়; যা তার প্যারামেডিক দলকে অতিরিক্ত চিকিৎসকদের ডাকতে বাধ্য করে। প্রেসিডেন্টের দফতরে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে মেডিক্যাল ইমারজেন্সি চলে। পরে ক্রেমলিনের নেতার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে চিকিৎসকরা সেখান থেকে চলে যান।
এসভিআর বলেছে, গত শুক্রবার (২২ জুলাই) রাত থেকে শনিবার (২৩ জুলাই) পর্যন্ত পুতিনের জরুরি চিকিৎসাসেবার দরকার হয়। ওইদিন রাত ১টার দিকে পুতিনের বাসভবনে দায়িত্বরত মেডিক্যাল কর্মীদের প্রেসিডেন্টের দফতরে জরুরি তলব করা হয়।
চ্যানেলটির দাবি, চিকিৎসকদের পুতিন জানান যে, তার তীব্র বমি বমি ভাব হচ্ছে। এর ২০ মিনিট পর প্রেসিডেন্টের দফতরের উপস্থিত চিকিৎসকদের পাশাপাশি চিকিৎসকদের অতিরিক্ত একটি দলকে জরুরি তলব করা হয়। চিকিৎসকরা পুতিনকে চিকিৎসা দেন এবং তারা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে সেখানে ছিলেন। পরে প্রেসিডেন্টের শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটলে তারা পুতিনের চেম্বার ছেড়ে চলে যান।
ক্যানসার নিরাময়ের আশায় হরিণের শিং যখন নরম ও রক্তপিণ্ডের মতো থাকে তখন তা কেটে সংগৃহীত রক্তে পুতিন গোসল করেছেন, এমন কথাও বলা হয়ে থাকে বলে দাবি করেছে গণমাধ্যমটি। কাজাখস্তান এবং মঙ্গোলিয়া সীমান্তের কাছে রাশিয়ার আলতাই অঞ্চলে রোগমুক্তি পাওয়ার আশায় হরিণের শিংয়ের রক্তে গোসল করার কুসংস্কার প্রচলিত আছে।
গত জুন মাসে দ্য প্রজেক্ট রাশিয়ার একজন ক্যানসার বিশেষজ্ঞের পরিচয় প্রকাশ করেছে, যার কাছে বিগত চার বছরে ভ্লাদিমির পুতিন সোচি গেটওয়ের বাসা থেকে গোপনে কয়েক ডজন বার গেছেন। প্রতিবেদনে গত শরতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গোপনে অস্ত্রোপচার করেছেন বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘চিকিৎসার ব্যাপারে জানাশোনা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ধারণা, পুরো সময়টাতে পুতিন থাইরয়েডের কিছু রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছেন।’
সম্প্রতি প্রকাশ্যে এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের সময় রুগ্ন চেহারা ও অস্বাভাবিক উদাসীন দেখা যায় ৭০ বছর বয়সী পুতিনকে। পরে পারকিনসন-সহ ক্যান্সার এবং অন্যান্য গুরুতর রোগে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার ক্ষমতায় আছেন ভ্লাদিমির পুতিন। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সৈন্যদের পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে লড়াই করছে রুশ সৈন্যরা। ইউক্রেন-রাশিয়ার এই যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে ব্যাপক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক ও খাদ্য সংকট ডেকে এনেছে।