NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শনিবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
ভ্যাটিকানের উদ্দেশ্যে কাতার ত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টা সৌদির কাছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বেচবে যুক্তরাষ্ট্র, চুক্তি শিগগির হৃদয়কে দ্বিতীয়বার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বললেন তামিম পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
Logo
logo

রাফাসহ গাজায় ইসরায়েলের তুমুল হামলা


খবর   প্রকাশিত:  ২৬ মে, ২০২৪, ১০:০৫ এএম

রাফাসহ গাজায় ইসরায়েলের তুমুল হামলা

আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের (আইসিজে) নির্দেশ উপেক্ষা করে রাফা শহরসহ গাজায় তুমুল হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল শনিবার ইসরায়েলি বিমান ও কামানগুলো রাফায় ব্যাপক বোমা ও গোলাবর্ষণ করে। রাফায় অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে গত শুক্রবার আইসিজে যখন নির্দেশ দিয়েছিল, তখনো শহরটির পূর্ব ও কেন্দ্রস্থলে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছিল ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, শহরের একটি এলাকায় তারা অন্তত ৯টি বোমা ছুড়েছে।

 

শহরের পশ্চিম অংশে এবং এর আশপাশেও ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের পরিধি বেড়েছে। ওই এলাকায় শাবোরা শরণার্থীশিবির এবং কুয়েতি হাসপাতাল রয়েছে। গত কয়েক মাসে শরণার্থীশিবিরটিতে বোমা হামলায় সেখানে বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন, রাস্তাঘাট, সরকারি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলের ট্যাংক ও সেনারা রাফার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং শহরের ঘনবসতিপূর্ণ পশ্চিম এলাকায় এগিয়ে যাচ্ছে।

 

নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিজে গত শুক্রবার দক্ষিণ গাজার জনাকীর্ণ শহর রাফায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি নির্দেশ দেন। জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত মিসর ও গাজার সীমান্তে রাফা ক্রসিং দিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশের জন্য খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন ইসরায়েলকে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন আইসিজে। আইসিজের রায়কে আপত্তিজনক, নৈতিকভাবে বিদ্বেষপূর্ণ, বিরক্তিকর বলে মন্তব্য করেছে ইসরায়েল।

 

একই সঙ্গে তারা গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করেছে। এদিকে উত্তর গাজায় জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারা সেখানে আরো আবাসিক ভবন, স্কুল, জাতিসংঘের স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করছে। জাবালিয়ায় শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলের এই অভিযান বহু মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। শরণার্থীশিবিরের মানুষ গাজা সিটির পশ্চিম দিকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

 

 

১৭ দিন ধরে শরণার্থীশিবিরটিতে খাবার, পানি মিলছে না। সেখানে পুরো দুর্ভিক্ষ চলছে। গাজার বাসিন্দারা জানায়, রাফা, দেইর আল বালাহ, গাজা সিটি, জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরসহ উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজা সিটি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে দেইর আল বালাহয় আশ্রয় নিয়েছেন আল আশকা নামের এক নারী। তিনি জানান, গাজায় এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তাঁরা আশা করছেন, আইসিজের রায় ইসরায়েলকে এই বিনাশের যুদ্ধ বন্ধে চাপ দিতে পারবে।

কয়েক দিন আগেই আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নরওয়ে জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি জানিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করেছেন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এক ফোনালাপে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি কারেম আবু সালেম সীমান্ত দিয়ে জাতিসংঘকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছেন। এদিকে রাফা ক্রসিং সীমান্তে আটকে থাকা ত্রাণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েলের অবিরাম হামলার কারণে গাজায় তীব্র ত্রাণ সংকট চলছে। গাজার অসহায় মানুষ ক্ষুধা, অনাহারে কঠিন সময় পার করছে। মিসর সীমান্তসংলগ্ন রাফা ক্রসিংয়ের গাজা অংশ অবরোধ করে রয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ কারণে সেখানে ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে না। ত্রাণবাহী এক ট্রাকচালক জানান, প্রচণ্ড গরমে তাঁর ট্রাকে থাকা খাদ্যসামগ্রী পচে যাচ্ছে। অনেক খাবার ফেলে দিতে হচ্ছে, আবার কিছু স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। মিসরের রেড ক্রিসেন্টের এক কর্মী জানান, আপেল, মুরগি, চিজগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আরেক কর্মী জানান, ডিমগুলোয় পোকায় ধরেছে। সেগুলো আর খাওয়ার অবস্থায় নেই।

গাজায় গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক হামলায় এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৮৫৭ জন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের বোমায় বিধ্বস্ত ভবনের নিচে অগণিত মানুষ চাপা পড়েছে। তাদের কেউ বেঁচে নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজার সিভিল ডিফেন্সের হিসাবে ১০ হাজারের ওপর মানুষ শুধু বিধ্বস্ত ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে। সিভিল ডিফেন্স জানায়,  তারা তাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে চাপা পড়া লাশ উদ্ধারে কাজ করছেন। কিন্তু তাঁদের যন্ত্রপাতি খুবই সাধারণ মানের। এসব  যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রায়ই বড় বড় কংক্রিটের নিচে থাকা লাশের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে। এদিকে চলতি সপ্তাহে হামাসের হাত থেকে জিম্মিদের মুক্ত করার বিষয়ে ফের আলোচনা শুরুর আভাস দিয়েছেন  ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা।