১৭ দিন ধরে শরণার্থীশিবিরটিতে খাবার, পানি মিলছে না। সেখানে পুরো দুর্ভিক্ষ চলছে। গাজার বাসিন্দারা জানায়, রাফা, দেইর আল বালাহ, গাজা সিটি, জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরসহ উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজা সিটি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে দেইর আল বালাহয় আশ্রয় নিয়েছেন আল আশকা নামের এক নারী। তিনি জানান, গাজায় এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। তাঁরা আশা করছেন, আইসিজের রায় ইসরায়েলকে এই বিনাশের যুদ্ধ বন্ধে চাপ দিতে পারবে।
কয়েক দিন আগেই আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নরওয়ে জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি জানিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করেছেন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এক ফোনালাপে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি কারেম আবু সালেম সীমান্ত দিয়ে জাতিসংঘকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছেন। এদিকে রাফা ক্রসিং সীমান্তে আটকে থাকা ত্রাণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলের অবিরাম হামলার কারণে গাজায় তীব্র ত্রাণ সংকট চলছে। গাজার অসহায় মানুষ ক্ষুধা, অনাহারে কঠিন সময় পার করছে। মিসর সীমান্তসংলগ্ন রাফা ক্রসিংয়ের গাজা অংশ অবরোধ করে রয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ কারণে সেখানে ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে না। ত্রাণবাহী এক ট্রাকচালক জানান, প্রচণ্ড গরমে তাঁর ট্রাকে থাকা খাদ্যসামগ্রী পচে যাচ্ছে। অনেক খাবার ফেলে দিতে হচ্ছে, আবার কিছু স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। মিসরের রেড ক্রিসেন্টের এক কর্মী জানান, আপেল, মুরগি, চিজগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আরেক কর্মী জানান, ডিমগুলোয় পোকায় ধরেছে। সেগুলো আর খাওয়ার অবস্থায় নেই।
গাজায় গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক হামলায় এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৮৫৭ জন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের বোমায় বিধ্বস্ত ভবনের নিচে অগণিত মানুষ চাপা পড়েছে। তাদের কেউ বেঁচে নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্সের হিসাবে ১০ হাজারের ওপর মানুষ শুধু বিধ্বস্ত ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে। সিভিল ডিফেন্স জানায়, তারা তাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে চাপা পড়া লাশ উদ্ধারে কাজ করছেন। কিন্তু তাঁদের যন্ত্রপাতি খুবই সাধারণ মানের। এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রায়ই বড় বড় কংক্রিটের নিচে থাকা লাশের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে। এদিকে চলতি সপ্তাহে হামাসের হাত থেকে জিম্মিদের মুক্ত করার বিষয়ে ফের আলোচনা শুরুর আভাস দিয়েছেন ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা।