ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাঙালি জাতির ভাগ্য নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে। কারণ এই দেশ আমাদের, আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি। কাজেই জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে বিশ্বে এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি―এই আমরা গড়ে তুলব।
এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
আজ মঙ্গলবার সকালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়া রেলওয়ে স্টেশনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যারা ভোটের কথা বলে, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে, আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই এ দেশে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়।
আর যারা নির্বাচনের ধুয়া তুলে আমাদের প্রতিদিন ক্ষমতা থেকে হটায় তারা কখনো অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না। কারণ তাদের প্রতিষ্ঠাই হয়েছে একজন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত দিয়ে এবং ভোট চুরি করা ছাড়া কোনো দিন ক্ষমতায় আসে নাই। যে কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। আর সেই ভোট চোররাই এখন নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে।
’
জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণের সেই অমোঘ মন্ত্র ‘বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশি অর্থায়ন বন্ধের পর আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের যে ঘোষণা দিয়েছিলাম, আজকে তা করে দেখিয়েছি। আবারও প্রমাণ করেছি বাঙালি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ তাকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’
পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূসের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘সামান্য একটি ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে পারবে না বয়সের কারণে, সেটা বলার জন্য বিশ্বব্যাংক তার পক্ষে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। এর পরই আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করব।’
পদ্মা নদী রেলে করে পাড়ি দেওয়া, আজকের দিনকে সেই স্বপ্ন পূরণের দিন হিসেবে উল্লেখ করে তিনি চলমান বিশ্বমন্দা প্রেক্ষাপটে দেশের সকল অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোয় আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘কারো কাছে হাত পেতে বা মাথা নিচু করে নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষ বিশ্বদরবারে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে―এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য (মুন্সীগঞ্জ-২) সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বক্তৃতা করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর স্বাগত বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা ও যশোরের মধ্যে রেল যোগাযোগের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান ও প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস