NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বুধবার, মে ১৪, ২০২৫ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার -প্রেস সচিব শিগগিরই মিসরের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সৌদি আরবের সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভারতের হামলায় ১১ সেনা নিহত, আহত ৭৮: পাকিস্তান আইএসপিআর কেন দাম কমে গেছে সুপারস্টার নয়নতারার পর্দা নামলো সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগের, বিজয়ী গিগাবাইট টাইটানস সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথমবার চট্টগ্রাম যাচ্ছেন ড. ইউনূস ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি প্রিন্সের বৈঠক শেষ জীবিত মার্কিন জিম্মিকে মুক্তি দিলো হামাস সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে বাংলাদেশ
Logo
logo

ডেঙ্গু : তিন কারণে ঢাকায় মৃত্যু বেশি, প্রকোপ বেশি বাইরের জেলায়


খবর   প্রকাশিত:  ০২ জানুয়ারী, ২০২৪, ০১:২০ পিএম

ডেঙ্গু : তিন কারণে ঢাকায় মৃত্যু বেশি, প্রকোপ বেশি বাইরের জেলায়

ঢাকা: ঢাকায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুঝুঁকি বেশি। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায়। সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিশ্লেষণে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন কারণে ঢাকায় মৃত্যুর ঘটনা বেশি।

কারণগুলো হচ্ছে—ঢাকায় একই ব্যক্তির একাধিকবার ডেঙ্গু হওয়া, ডেঙ্গুর মারাত্মক ধরন ডেন-২এ বেশির ভাগ রোগী আক্রান্ত হওয়া এবং ঢাকার বাইরে থেকে গুরুতর রোগী আসা।

 

ঢাকার বাইরে সব জেলায় ডেঙ্গু রোগী বাড়লেও কোথাও সচেতনতা সেভাবে তৈরি হয়নি। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণেও তেমন কার্যক্রম নেই। তাই ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমে বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশে গত এক দিনে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আরো ১৪ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে। একই সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ১১৫ জন।

 

গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে এক হাজার ২৮২ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯৮২ জন।

মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১০ জনই ঢাকার। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় মারা গেছে চারজন। অর্থাত্ আক্রান্ত বেশি হচ্ছে ঢাকার বাইরে, মৃত্যু বেশি ঢাকায়।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৯ হাজার ১২৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় তিন হাজার ৯৪৬ জন, বাকি পাঁচ হাজার ১৮১ জন ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগে।

 

চলতি বছর এ পর্যন্ত এক লাখ ৩৮ হাজার ২২ জন রোগী ভর্তি হয়েছে এবং ছাড়া পেয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ২২৪ জন। মারা গেছে ৬১৮ জন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছে ৪৮৬ জন, ঢাকার বাইরে মৃত্যু ১৮৫ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেছেন, ‘আগামী দিনগুলোতে আরো বেশি মানুষ শকে যাবে। কারণ আমাদের বেশির ভাগ মানুষ দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিটি সংক্রমণ পরবর্তী সংক্রমণকে ঝুঁকিপূর্ণ করছে। অর্থাত্ একবার আক্রান্ত হওয়ার পর যারা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হয়, তারা দ্রুত শকে চলে যায়।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ঢাকায় মৃত্যু বেশি হওয়ার পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, ঢাকায় আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগেরই এর আগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে। আবার যখন তারা আরেকটা নতুন ধরনে আক্রান্ত হচ্ছে, তখন তাদের শরীরের অ্যান্টিবডি আর এখনকার ভাইরাস দুটি মিলে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এতে রোগী প্লাজমা লিকেজ, হাইপোটেনশন হচ্ছে,  অঙ্গগুলো কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় কারণ হলো ঢাকার ডেঙ্গুর ধরন ডেন-২ দ্বারা সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। এটি ডেঙ্গুর অন্যান্য ধরন থেকে মারাত্মক। অনেক সময় রোগ দেরিতে শনাক্ত হওয়ার কারণেও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে।

তৃতীয় কারণ হলো ঢাকার পার্শ্ববর্তী বা দূরবর্তী জেলাগুলো থেকে রোগীরা ঢাকায় চিকিত্সা নিতে আসছে। কারণ সব জেলায় চিকিত্সার মান এক রকম না। এ ছাড়া ঢাকার প্রতি মানুষের আস্থা বেশি। যারা ঢাকার বাইরে থেকে আসে, গুরুতর অবস্থা না হলে তারা ঢাকা আসার চিন্তা করে না। এরপর গাড়ির ব্যবস্থা ও টাকা জোগাড় করার বিষয় রয়েছে। এতে ঢাকায় আসতে আসতে বেশ দেরি হয়ে যায়। এসব রোগীকে ঢাকায় আনার পর অনেক সময় আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) রেখেও বাঁচানো যায় না।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, গ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ এখন ক্রমে বাড়বে। কারণ ঢাকায় ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপই সার্কুলেটেড হয়েছে। এতে ঢাকার মানুষের ইনফেকশন হওয়ার শঙ্কা কমে গেছে। তবে ঢাকার বাইরে সেগুলো নতুন। কারণ সেখানে চারটি সেরোটাইপের একটিও অ্যাটাক করেনি। সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি চার গুণ। আবার সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি।

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা যখন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় ট্রান্সফার হয়েছে, তখন নতুন জায়গায় সেগুলো নিজের অবস্থান তৈরি করবে। বর্তমানে ঢাকার বাইরে এডিস মশার ঘনত্বও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে মশক নিধনের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। আমার মুরগির খাবারের পাত্রে পানি জমে এডিস মশা জন্মাতে দেখেছি। ড্রামে ঢাকনা দিয়ে পানি জমিয়ে রেখেছে। সেই ঢাকনার মধ্যে এডিস পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এডিসের প্রকোপ ভবিষ্যতে গ্রামে আরো বাড়বে।’