NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণমুখী সংসদের জন্য ই-পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : ড. ইউনূস শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত, জেলেনস্কিকে দায়ী করছেন ট্রাম্প কাশ্মীরে হামলা মোদী সরকারের পাশে দাঁড়ালো বিরোধীদলগুলো বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’ কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া: হাইকমিশনার একসঙ্গে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তান
Logo
logo

আটলান্টিক সিটিতে রথযাত্রার মহাযজ্ঞ


খবর   প্রকাশিত:  ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:২১ এএম

আটলান্টিক সিটিতে রথযাত্রার মহাযজ্ঞ

আটলান্টিক সিটি থেকে: খিল ধরা দুপুরে সূর্য দেবতাকে মাথার ওপর রেখে চব্বিশ জুন, শনিবার ভক্তকুলের পদচারণায় মুখরিত হয়েছিল আটলান্টিক সিটির ঐতিহাসিক বোর্ডওয়াক। অদূরের আটলান্টিক মহাসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঊর্মিমালার শব্দ তরঙ্গকে ছাপিয়ে ইথারে ভেসে আসছিল হরিনাম সংকীর্তনের সুললিত সুর, ‘হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, হরে রাম, হরে রাম’। অদ্ভুত এক ভালো লাগায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে মনপ্রাণ। আর এসবের উপলক্ষ জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা, যার আয়োজক নিউ জারসির প্লেইনফিল্ডের শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দির ও কালচারাল সেন্টার ।
মেঘে মেঘে বেলা বাড়ে, পায়ে-পায়ে বাড়ে ভক্ত কুলের ভিড়। দুপুর দুইটার পর রথের দড়িতে ভক্ত কুলের হাতের আলগা টান পড়তেই সচল হয় রথের চাকা। সঙ্গে সঙ্গে ঢোল-খোল, মৃদঙ্গের আওয়াজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাজারো কণ্ঠের সম্মিলিত কোরাসে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হতে থাকে ‘হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, হরে রাম, হরে রাম’, আর তা অপূর্ব এক সুর মূর্ছনার সৃষ্টি করে।
বোর্ডওয়াকের নিউজার্সি অ্যাভিনিউ থেকে শুরু হওয়া রথের গন্তব্যস্থল ছিল কেনেডী প্লাজা। ধীর গতিতে রথ এগিয়ে চলে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভক্তদের কাফেলা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। বোর্ডওয়াকে বেড়াতে আসা মার্কিনীরাসহ ভিনদেশি পর্যটকেরা নান্দনিক এই আয়োজনে অভিভূত হয়ে পড়ে। তাদের চলার গতি যায় থেমে। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে কেউ কেউ শরিক হয় রথের কাফেলার সঙ্গে। শুদ্ধ-অশুদ্ধ উচ্চারণের সংমিশ্রণে তারা হরিনাম সংকীর্তনে কণ্ঠ মেলায়। আবেগ-উচ্ছ্বাস-আনন্দে ভক্ত কুল নেচে-গেয়ে একাকার হয়ে যায়। রথ টানতে টানতে কাফেলার মাঝে বিতরণ হতে থাকে হরেক পদের ফল-ফলাদি ও মিষ্টিসহ হরেক রকমের উপাদেয় প্রসাদ। পথ চলতি বিদেশিরাও তা থেকে বাদ পড়েন না।
রথের চাকা ঘুরতে ঘুরতে এক সময় তা এসে থামে কেনেডী প্লাজায়, যেখানে আগে থেকেই চলছিল অন্যরকম এক মহাযজ্ঞ। উন্মুক্ত মঞ্চে হরিনাম সংকীর্তন, ধর্মীয় সংগীত,নৃত্য পরিবেশনের পাশাপাশি চলছিল মহাপ্রসাদ বিতরণ। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই এই অনুষ্ঠান উপভোগ করে ও সঙ্গে সঙ্গে মহাপ্রসাদ গ্রহণ করে উদরপূর্তিও করে। ভিন্ন সংস্কৃতির লোকজনকেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে মহাপ্রসাদ গ্রহণ করতে ও তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে দেখা যায়। তাদের অনেককে আগ্রহভরে এই রথযাত্রা সম্পর্কে ধারণা নিতে এবং মন্ত্র জপতেও দেখা যায়। রথযাত্রার অনুষ্ঠানে সুমৌলি ভট্টাচার্যের নৃত্যশৈলী সবাই প্রাণভরে উপভোগ করেন।
এই রথযাত্রার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল জগন্নাথ দেবের পূজার্চনা, হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা, সংগীত ও নৃত্য ইত্যাদি।

আটলান্টিক সিটিতে ২০০৬ সাল থেকে এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দিনে দিনে এর কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মেঘে মেঘে বেলা বাড়ে। আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম দিগন্তে দিবাকর হেলতেই সাঙ্গ হয় রথযাত্রার মহাযজ্ঞ। রথযাত্রার টুকরো টুকরো অনেক হিরণ্ময় ছবির কোলাজ অন্তরে ধারণ করে ভক্তকুল ফিরে যায় আপন নীড়ে।