ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পেনশন সংস্কারে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় চলমান বিক্ষোভে পুলিশের মারধরের শিকার হয়ে নিজের অণ্ডকোষ হারিয়েছেন এক যুবক। ২৬ বছর বয়সী ওই যুবক বলেছেন, পুলিশের একজন কর্মকর্তা এমনভাবে তাকে আঘাত করেছেন যে, তার একটি অণ্ডকোষ কেটে ফেলতে হয়েছে।
ফরাসি গণমাধ্যমের খবরে ওই যুবকের নাম ইভান এস বলে জানানো হয়েছে। সোমবার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট বলেছে, এই ঘটনায় ওই যুবক প্যারিস পুলিশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আর ফ্রান্সের দৈনিক লিবারেশন বলছে, ফরাসি একটি বড় কোম্পানিতে প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত রয়েছেন ইভান। গত সপ্তাহে প্যারিসে সরকারের পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিক্ষোভ-প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ওই দিন প্রায় ১০ লাখ মানুষ ফ্রান্সজুড়ে সরকারের পেনশন সংস্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন।
এরমধ্যে অন্তত ৮০ হাজার মানুষ কেবল প্যারিসের বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়ে ৬৪ করার সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
ইভান বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে কয়েকবার বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলাম। আমার ৬০ বছর বয়সী খালাও এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছিলেন।’
ফরাসি অপর একটি দৈনিককে ইভান বলেছেন, পুলিশের হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, এমন প্রথম ব্যক্তি কেবল তিনিই নন। এর আগেও অনেকেই পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এটা থামানোর জন্যই আমি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, প্যারিসে বিক্ষোভের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণের সময় পুলিশের এক কর্মকর্তা তাকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেন। মাটিতে পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য এক পুলিশ কর্মকর্তা চড়াও হন এবং লাঠি দিয়ে তার অণ্ডকোষে আঘাত করেন।
অন্যান্য বিক্ষোভকারীদের ধারণ করা এই ঘটনার একটি ভিডিও দেশটির বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফ্রান্সের পুলিশের বিরুদ্ধে অতীতেও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগে উঠেছিল। তবে এবারের এই ঘটনা দেশটির জনগণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছে।
প্যারিস পুলিশ প্রধান লরেন্ট নুনেজ ওই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী প্রকৌশলী ইভানের আইনজীবী লুসি সিমন বলেছেন, তিনি পুলিশের ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় সহিংসতা চালানোর দায়ে একটি অভিযোগ দায়ের করছেন। জনগণের কর্তৃত্বে নিযুক্ত একজন কর্মী ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রের নাগরিকের অঙ্গহানি করেছেন।