ইউক্রেনের ডনবাস প্রদেশের সোলদার শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র লড়াই হচ্ছে ইউক্রেন ও রুশ সেনাদের মধ্যে। বলা হচ্ছে, এ লড়াইয়ে অসংখ্য প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া হামলা, পাল্টা-হামলায় ধসে পড়েছে লবণ খনি সমৃদ্ধ শহরটির বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর।

কেন রুশ সেনারা এত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সোলদারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে? এর কারণ বিশ্লেষণ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বর্তমানে কার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সোলদার?

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগিনি প্রিগোজিন গত মঙ্গলবার দাবি করেন, তার সেনারা সোলদার দখল করেছে। তবে ইউক্রেন জানিয়েছে, এখনো সোলদারের পতন হয়নি। এছাড়া রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, শহরটি ঘিরে এখনো লড়াই চলছে।

সোলদারের নিয়ন্ত্রণ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

রাশিয়া সোলদারের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাশের বাখমুত শহর দখল সহজ হবে তাদের জন্য। সোলদার থেকে বাখমুতে সহজে কামান হামলা চালানো যাবে।

এছাড়া সোলদার রয়েছে পুরনো লবণ খনির অসংখ্য সুড়ঙ্গ। সেসব সুড়ঙ্গে নিরাপদে সেনা ও অস্ত্র মজুদ করা যাবে। তবে এটি নিশ্চিত নয় সুড়ঙ্গটি ঠিক কতটা বিস্তৃত এবং এগুলো দিয়ে ঠিক কতটা দূর যাওয়া যাবে।

সোলদারের খনিগুলোতে রয়েছে দামি লবণ এবং জিপসাম। ফলে যে পক্ষের নিয়ন্ত্রণে খনিগুলো থাকবে সে পক্ষই সেগুলো বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ লাভ করতে পারবে।

আরেকটি বিষয় হলো রাশিয়া এখন একটি ‘প্রতীকি’ জয় চাচ্ছে। গত কয়েক মাসে ইউক্রেনের সেনাদের তীব্র হামলার জেরে বেশ কয়েকটি স্থান থেকে পিছু হটতে হয়েছে রুশ বাহিনী। এখন তাদের একটি প্রতীকি জয় প্রয়োজন।

পাশের শহর বাখমুতের দখল রাশিয়ার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

বাখমুত শহরের দখল রাশিয়ার জন্য অবশ্যই একটি ‘বড় বিজয়’ হবে।

রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউটের (রুসি) ইউরোপ বিষয়ক গবেষক এডোয়ার্ড আরনল্ড বলেছেন, ‘গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রচণ্ড চাপে থাকা রুশ সেনাদের জন্য একটি বড় ধরনের অতিপ্রয়োজনীয় উৎসাহ হবে এটি।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘যদিও রাশিয়ার হাতে বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ গেলেও পুরো যুদ্ধের ওপর এটি খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না।’