আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের অবকাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে মার্কিন প্রশাসন বিশেষ সহায়তার উদ্যোগ নিচ্ছে। সে দেশের জন্য আরো সামরিক সহায়তারও প্রস্তুতি চলছে।
রাশিয়ার লাগাতার হামলায় ইউক্রেনের জ্বালানি ও নাগরিক পরিষেবা অবকাঠামোর যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, সে দেশের একার পক্ষে তা সামাল দেওয়া কঠিন। চরম শীত ও অন্ধকারের দিনগুলোতে বিদ্যুৎ, পানি ও উত্তাপ থেকে সাধারণ মানুষ বারবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে তাদের পক্ষে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেন প্রশাসন আরো হামলা ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে। সুপরিকল্পিতভাবে নাগরিক পরিষেবার ওপর লাগাতার হামলার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেওয়ার এই পদক্ষেপকে ইউক্রেন যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বর্ণনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্র তাই মঙ্গলবার ইউক্রেনের জন্য বাড়তি সহায়তার ঘোষণা করছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে সেই সহায়তার রূপরেখা তুলে ধরছেন। বিশেষ করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বণ্টনের জন্য প্রয়োজনীয় পাওয়ার লাইন মেরামতের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন একটি সার্বিক সমাধান সূত্র প্রয়োগ করতে চায়।
মার্কিন প্রশাসন একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পরিষেবা ও হার্ডওয়্যার সরবরাহকারী কম্পানি, অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে ইউক্রেনে ক্ষতিগ্রস্ত হাইভোল্টেজ ট্রান্সমিশন স্টেশন দ্রুত চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে। এ ছাড়া ন্যাটো ইউক্রেনের জন্য আরো সামরিক সহায়তার উদ্যোগ নিচ্ছে। সেই সঙ্গে জ্বালানি, ওষুধপত্র, শীতের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং ড্রোন জ্যামারের মতো সহায়তা ইতিমধ্যে ইউক্রেনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা সাতটি নর্ডিক ও বাল্টিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে নিজের দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে ট্রান্সমিটারের জন্য আবেদন করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে আরো উন্নত এয়ার ডিফেন্স প্রণালীও চেয়েছেন। জি৭ গোষ্ঠীর বর্তমান সভাপতি দেশ জার্মানি ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর পুনর্গঠনে আরো গতি আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে।
সোমবার রাজধানী কিয়েভ মোটামুটি শান্ত থাকলেও খেরসন অঞ্চলে রাশিয়া গোলাবর্ষণ করেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর রুশ বাহিনী দনিপ্রো নদীর পশ্চিমে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু গত সপ্তাহেই ২৫৮টি হামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
দনিয়েৎস্ক অঞ্চলের বাখমুৎ ও আভডিভকা এলাকার ওপরও রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে। শীতের প্রকোপে কোনো পক্ষই সহজে নতুন করে জমি দখল করতে পারছে না বলে মনে করা হচ্ছে। রুশ বাহিনীর হামলা প্রতিহত করতে ইউক্রেনের ডাকে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রস্তাব বিবেচনা করছে। এর আওতায় বোয়িং কম্পানি সস্তার ও ছোট আকারের প্রিসিশন বোমা সরবরাহ করতে চায়, যা ইউক্রেনের বাহিনীর কাছে থাকা রকেটের ওপর বসানো সম্ভব।
সূত্র : ডয়চে ভেলে