আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে নিজের সঙ্গে যুক্ত করার রাশিয়ার প্রচেষ্টার নিন্দা করে ব্যাপকভাবে ভোট দিয়েছে। বুধবার রাতে এ ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি ১৪৩টি দেশ সমর্থন করেছে। অন্যদিকে চীন, ভারতসহ ৩৫টি রাষ্ট্র ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।

 

বিশ্ব সংস্থার সব সদস্যরাষ্ট্র এ পরিষদে রয়েছে। রাশিয়ার পাশাপাশি বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া এবং নিকারাগুয়া- এ চারটি দেশ ভোট প্রত্যাখ্যান করেছে।

 

উদ্যোগটি প্রতীকী হলেও ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে এটিই রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোট।

গত সপ্তাহে ক্রেমলিনে একটি জমকালো অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনীয় অঞ্চল লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝিয়া এবং খেরসনকে রাশিয়ার অংশ করে নিয়ে নথিতে স্বাক্ষর করেন।

ইউক্রেনের অঞ্চলগুলোতে রাশিয়ার স্বঘোষিত ‘গণভোটে’র পরে এই সংযুক্তিকরণ হয়। পশ্চিমা বিশ্ব ওই গণভোটকে ‘ভুয়া’ বলে নিন্দা করেছে।

সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবটিতে রাশিয়ার সংযুক্তিকরণের দাবিকে স্বীকৃতি না দিতে এবং তা ‘অবিলম্বে প্রত্যাহারের’ দাবি জানাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত প্রশমনের প্রচেষ্টাকেও স্বাগত জানানো হয়।  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যে দেশগুলো এ প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ।

জেলেনস্কি টুইট করে বলেছেন, ‘ইউক্রেন তার সমস্ত ভূখণ্ড উদ্ধার করবে। বিশ্বের বক্তব্য হচ্ছে, (রাশিয়ার) সংযুক্তির প্রচেষ্টা মূল্যহীন এবং স্বাধীন দেশগুলো কখনোই  তার স্বীকৃতি দেবে না। ’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এ ভোট মস্কোর কাছে একটি ‘স্পষ্ট বার্তা’ পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই সংঘাতের বাঁক সবার কাছে স্পষ্ট। বিশ্ব প্রতিক্রিয়া একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছে - তা হচ্ছে, রাশিয়া মানচিত্র থেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রকে মুছে ফেলতে পারে না। ’

জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ডেম বারবারা উডওয়ার্ড বলেছেন, ‘রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে এবং জাতিসংঘে ব্যর্থ হয়েছে। সদস্য দেশগুলো বিশ্ব সংস্থার সনদ রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ’ 

ব্রিটিশ দূত বলেন, ‘রাশিয়া নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। তারা একাই কেবল এই দুর্ভোগ বন্ধ করতে পারে। যুদ্ধ শেষ করার এখনই সময়। ’

নিরাপত্তা পরিষদে পদক্ষেপ নেওয়া ঠেকাতে রাশিয়া তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করার পর সাধারণ পরিষদের এ ভোট নেওয়া হলো। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যও ভেটো ক্ষমতা রাখে। তবে ইউক্রেন আক্রমণের পর বিভিন্ন পক্ষ থেকে রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।  

সূত্র : বিবিসি।