আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ‘বিলুপ্ত হোমিনিন এবং মানব বিবর্তনের জিনোম’ সম্পর্কিত আবিষ্কারের জন্য সুইডেনের গবেষক ও বিজ্ঞানী সান্তে প্যাবো ২০২২ সালের ফিজিওলজি বা দেহতত্ত্বে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন। হোমিনিনি বা একটি আদিম উপজাতি, যা মূলত মানব হিসেবে বিবেচিত হয় এবং যা মানুষের সরাসরি পূর্বপুরুষ বা মানুষের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত সেই প্রজাতিগুলোকে বোঝায়। ফিজিওলজি বা মেডিসিনে নোবেল কমিটির সেক্রেটারি থমাস পার্লম্যান যখন সান্তে প্যাবোর নাম পড়েন তখন হলটিতে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে। পুরস্কারের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘অগ্রগামী গবেষণার মাধ্যমে, সান্তে প্যাবো যা অর্জন করেছেন, তা কেউই ভাবতে পারেনি : নিয়ানডার্থালের জিনগত ভরের ম্যাপিং, বর্তমানে জীবিত মানুষের বিলুপ্ত আত্মীয়।
’ নোবেল কমিটি প্রায় ৭০ হাজার বছর আগের আফ্রিকা থেকে অভিবাসনের পরে হোমো সেপিয়েন্স এবং আমাদের বিলুপ্ত আত্মীয়দের মধ্যে ক্রস সম্পর্কিত প্যাবোর অনুসন্ধানগুলোও তুলে ধরে।
বিলুপ্ত মানব ফর্ম থেকে জিন প্রবাহ, যা আফ্রিকার বাইরে এখন জীবিত মানুষের মধ্যে দেখা গেছে যে সংক্রমণের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিরক্ষার জন্য অন্য জিনিসগুলোর মধ্যে একধরনের শারীরবৃত্তীয় তাৎপর্য রয়েছে। প্যাবোর আবিষ্কারগুলো গবেষণা প্যালিও-জেনেটিক্স বা আদিম প্রজননশাস্ত্রের দুনিয়ায় একটি সম্পূর্ণ নতুন গবেষণার ক্ষেত্র তৈরি করেছে বলে জানায় নোবেল কমিটি।
সান্তে প্যাবো ১৯৫৫ সালে স্টকহোমে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৬ সালে উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন। এরপর তিনি জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলেতে পোস্ট-ডক্টরাল সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯০ সালে মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় নিয়োজিত হন। প্যাবো ১৯৯৯ সালে ‘বিবর্তনীয় নৃবিজ্ঞান’-এর জন্য ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট, লিপজিগ প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে তিনি বর্তমানেও কর্মরত রয়েছেন। ২০২০ সাল থেকে তিনি জাপানের ওকিনাওয়া ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে একজন সহযোগী অধ্যাপক হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন।
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক ডেভিড জুলিয়াস এবং আরডেম প্যাটাপোটিয়ান যৌথভাবে ফিজিওলজি বা চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তাঁরা শরীরের কোষে ‘রিসেপ্টর’ আবিষ্কারের জন্য পুরস্কৃত হয়েছিলেন, যা দেহের তাপমাত্রা এবং স্পর্শ উপলব্ধি করতে সহায়তা করে।
আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিজয়ীদের প্রত্যেককে একটি করে সোনার মেডেল, নোবেল ডিপ্লোমা এবং এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে। আগামীকাল বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টায় স্টকহোমের দ্য রয়াল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের সেক্রেটারি গুন্নার ইঙ্গেলমান পদার্থবিদ্যায় নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবেন।