শ্রীলঙ্কার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর হাম্বানটোটায় ৬ দিন অবস্থান করার পর অবশেষে বন্দর ত্যাগ করেছে চীনের সামরিক নজরদারী যুদ্ধজাহাজ ইউয়ান ওয়াং ৫। সোমবার বিকেল ৪ টায় চীনের জিয়াং ইন বন্দরের উদ্দেশে শ্রীলঙ্কার বন্দর ত্যাগ করে জাহাজটি।
হাম্বানটোটা বন্দরের শীর্ষ নির্বাহী পোর্টমাস্টার নির্মল সিলভা ভারতের বৃহত্তম বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শ্রীলঙ্কার বন্দরে চীনের এই জাহাজটি নোঙ্গর করা নিয়ে কূটনৈতিক ঝামেলা তৈরি হয়েছিল। স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং সিস্টেম ও ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ও সামরিক সরঞ্জাম সমৃদ্ধ জাহাজ ইউয়ান ওয়াং ৫ শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে নোঙ্গর করার অনুমতি চেয়েছিল গত ১১ আগস্ট।
চীনের সরকারের পক্ষ এ সম্পর্কে বলা হয়েছিল— বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য জাহাজটিকে সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। যাত্রাপথে রসদ শেষ হয়ে যাওয়ায় হাম্বানটোটা বন্দরে যাত্রাবিরতি করা প্রয়োজন।
কিন্তু তারপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউয়ান ওয়াং ৫ চীনের সামরিক বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) যুদ্ধজাহাজ এবং এটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও সর্বাধুনিক স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং সিস্টেম সমৃদ্ধ।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই বিৃবতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে ভারত। শ্রীলঙ্কার চারপাশ ঘিরে থাকা ভারত মহাসগারে ভারতীয় নৌবাহিনীর তৎপরতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই চীন এই জাহাজ পাঠিয়েছে— এমন সংশয় দানা বাঁধতে থাকে দেশটির সরকারের মধ্যে। তার জেরেই হাম্বানটোটা বন্দরে চীনা জাহাজকে নোঙ্গর করতে দেওয়ার অনুমতি না দিতে শ্রীলঙ্কার সরকারকে চাপ দেয় ভারতের সরকার।
প্রতিবেশী দেশের এ চাপের মুখে জাহাজটিকে নিজেদের বন্দরে যাত্রাবিরতির ব্যাপারে ‘না’ বলে দেয় শ্রীলঙ্কার সরকার। কিন্তু তিন দিন পর, ১৫ আগস্ট সেই আপত্তি প্রত্যাহার করে নেয় কলম্বো। তারপর ১৬ আগস্ট হাম্বানটোটা বন্দরে ভেড়ে ইউয়ান ওয়াং ৫।
হাম্বানটোটা বন্দরের পোর্টমাস্টার নির্মল সিলভা পিটিআইকে বলেন, বন্দরে যাত্রাবিরতি দেওয়ার সময় জাহাজের নাবিকদের জাহাজ থেকে না নামার অনুরোধ জানানো হয়েছিল এবং নাবিকরা তা মেনে চলেছেন। শ্রীলঙ্কায় চীনা দূতাবাসের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে জাহাজটিকে প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।