গাজা উপত্যকার দক্ষিণে অ্যাম্বুল্যান্সে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় আটক এক চিকিৎসাকর্মীকে ইসরায়েল মঙ্গলবার মুক্তি দিয়েছে। তিনি ২৩ মার্চ থেকে আটক ছিলেন। প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) এ তথ্য জানিয়েছে।
পিআরসিএস এদিন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘দখলদার বাহিনী সম্প্রতি চিকিৎসাকর্মী আসআদ আল-নাসাসরাহকে মুক্তি দিয়েছে, যিনি গত ২৩ মার্চ রাফা গভর্নরেটের তাল আল-সুলতান এলাকায় চিকিৎসাদলগুলোর ওপর গণহত্যার সময় তার মানবিক দায়িত্ব পালনকালে আটক হন।
এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, ওই হামলায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে রেড ক্রিসেন্টের আটজন সদস্য, গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির ছয়জন ও জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থার একজন কর্মী নিহত হন।
এই হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক নিন্দার জন্ম দেয়, যার মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য ‘যুদ্ধাপরাধ’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও ছিল। হামলার কয়েক সপ্তাহ পর পিআরসিএস জানায়, ইসরায়েলি সেনারা অ্যাম্বুল্যান্সে গুলি চালানোর সময় আল-নাসাসরাহকে ‘বলপ্রয়োগ করে তুলে নেওয়ার’ পর ইসরায়েলি হেফাজতে রাখা হয়।
পরে চলতি মাসে প্রকাশিত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক তদন্তে বলা হয়, তাদের সেনারা ‘নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে’ বা ‘শাস্তিমূলক হত্যা চালিয়েছে’—এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এই তদন্তের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে পিআরসিএস ও গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি। পিআরসিএস ওই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যায় ভরা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
হতাহত চিকিৎসাকর্মীরা ২৩ মার্চ গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফার কাছে বিপদে পড়া মানুষের ফোনকলের জবাব দিতে গিয়ে নিহত হন। ওই সময় হামাসশাসিত অঞ্চলে ইসরায়েল নতুন করে হামলা শুরু করেছিল। প্রায় এক সপ্তাহ পর তাদের মরদেহগুলো উদ্ধার হয়, গুলি চালানোর স্থানের কাছে বালুর নিচে চাপা পড়ে থাকা গাড়িগুলোর পাশে। ওসিএইচএ এটিকে ‘গণকবর’ হিসেবে বর্ণনা করে।
এর কয়েক দিন পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তাদের সেনারা ‘সন্দেহজনক যানবাহনে’ থাকা ‘সন্ত্রাসীদের’ দিকে গুলি ছুড়েছিল।
তদন্ত প্রতিবেদনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করে, তাদের সেনারা পুরো ঘটনার প্রতিবেদন যথাযথভাবে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে তারা আবারও দাবি করে, ইসরায়েলি সেনারা ‘আরো ক্ষতি ঠেকাতে’ মরদেহ ও যানবাহন মাটিচাপা দিয়েছিল।