ইস্তাম্বুলের কাছাকাছি মারমারা সাগরে বুধবার ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। মূল ভূমিকম্পের পর ৫১টি আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি খুবই শক্তিশালী। এতে আতঙ্কিত হয়ে তুরস্কের বৃহত্তম শহরের হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এ সময় ভবন থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত ১৫১ জন চিকিৎসা নিচ্ছে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে জানান, ইস্তাম্বুলের সিলিভরিতে মারমারা সাগরে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এটি আশপাশের প্রদেশগুলোতেও অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিটে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬.৯২ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে, ১৩ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল।
তিনি আরো জানান, বিকেল ৩টা ১২ মিনিট পর্যন্ত ৫১টি আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টি ছিল ৫.৯ মাত্রার।
ভবনগুলো কাঁপতে শুরু করলে লোকজন হুড়মুড় করে রাস্তায় নেমে আসে। অনেকেই চিন্তিত মুখে মোবাইল ফোনে খবর খুঁজছিল বা ফোন করছিল। একজন অন্দরসজ্জাশিল্পী বলেন, ‘আমি ভূমিকম্প টের পেয়েছি, আমাকে এখান থেকে বেরোতে হবে।’
ইস্তাম্বুলের গভর্নর দাভুত গুল বলেন, ভূমিকম্প বা আফটারশকে কেউ মারা যায়নি।
গভর্নরের কার্যালয় জানায়, শহরের কোনো আবাসিক ভবনে ধস দেখা যায়নি। তবে ফাতিহ জেলায় একটি পরিত্যক্ত ভবন ধসে পড়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, ঐতিহাসিক উপদ্বীপের পশ্চিমে বেইলিকদুজু জেলায় একটি মসজিদের মিনার কাঁপছে।
তুরস্কের জাতীয় সার্বভৌমত্ব দিবস উপলক্ষে এদিন বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ ছিল। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সপ্তাহজুড়ে এই বন্ধ চলবে।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেছেন, তিনি ‘পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছেন’।
তুরস্কের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক রাজধানী ইস্তাম্বুলে ২০ মিলিয়নের কাছাকাছি মানুষ বসবাস করে। ১৯৯৯ সালের ‘বড় ভূমিকম্পের’ স্মৃতি এখনো অনেকের মনে জাগ্রত। ওই বছর পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্টলাইনে দুইবার ধস নামায় প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
ভূকম্পবিদরা হিসাব করে দেখেছেন, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ইস্তাম্বুলে ৭.৩ মাত্রার চেয়ে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা ৪৭ শতাংশ। সর্বশেষ ভূমিকম্প নভেম্বর মাসে অনুভূত হয়, তবে তা শুধু আতঙ্ক তৈরি করেছিল; ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।