ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা থেকে সরে আসেনি ইসরায়েল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন না থাকলেও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একাই ‘সীমিত পরিসরে’ হামলা চালাতে চায় দেশটি। নিউইয়র্ক টাইমসের বরাত দিয়ে শনিবার সিনহুয়া এই খবর জানিয়েছে। ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরো দুই ব্যক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানানো হয়েছে।
এদিন প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা নিয়ে ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আপাতত এই ধরনের পদক্ষেপকে সমর্থন করবে না। তবু নিজেদের পরিকল্পনায় অনড় ইসরায়েলি নেতা।
পরমাণু ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা যখন ইতালির রাজধানী রোমে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসেছেন ঠিক তখনই ইসরায়েল এই ধরনের হুমকি দিয়েছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা তেহরানকে পরমাণু অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে হামলা চালানোর ইসরায়েলি পরিকল্পনা ফাঁস করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। ফাঁস হওয়া এই তথ্য ও পরবর্তী প্রতিবেদনকে ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক ফাঁসগুলোর মধ্যে একটি বলে মন্তব্য করেছেন এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা।
মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তা ও অন্যান্যদের উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় দ্রুত হামলা চালাতে চান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ইসরায়েল মে মাসের শুরুর দিকে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছে। তাদের লক্ষ্য, ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা এক বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য পিছিয়ে দেওয়া। সমন্বিত বিমান হামলা ও কমান্ডো অভিযানের চিন্তা-ভাবনার পর ইসরায়েল ট্রাম্পকে একটি ‘বিস্তৃত বোমা হামলার’ প্রস্তাব দেন।
প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র কেবল এই অভিযানে অনুমতিই দেবে না, বরং এতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে।
পরে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনের আংশিক সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প। আগামী মাসে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানোর ইসরায়েলি পরিকল্পনা ‘প্রত্যাখ্যান’ করেছেন বলে প্রতিবেদনে যে দাবি করা হয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি প্রত্যাখ্যান করার কথা বলিনি। তবে আমি এটা করার জন্য তাড়াহুড়া করছি না।’
গত বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিকে পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেছেন, ‘ইরানের একটি মহান দেশ হয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। সুযোগ রয়েছে মৃত্যু ছাড়াই সুখে বসবাসের এবং আমি তা দেখতে চাই। এটাই আমার প্রথম বিকল্প।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘যদি দ্বিতীয় বিকল্পের কথা আসে, আমি মনে করি সেটা ইরানের জন্য খুবই খারাপ হবে এবং আমি মনে করি ইরান আলোচনা করতে চাইছে। ইতিমধ্যে রোমে দ্বিতীয় দফা আলোচনায় বসেছে ইরান। যদি তারা তা করে তবে এটা তাদের জন্য খুব ভালো হবে। সহজ কথা হচ্ছে ইরান পরমাণু অস্ত্র রাখতে পারবে না।’