জন্মহার অনেক কমে যাওয়ায় এবং পারিবারিক মূল্যবোধ ধরে রাখতে ২০২৫ সালকে ‘পরিবারবর্ষ’ ঘোষণা করেছে তুরস্ক। পরিবারবর্ষকে ঘিরে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেছেন, বর্তমান জন্মহারের কারণে তুরস্কের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
২০২৩ সালে দেশটিতে জন্মহার ছিল ১.৫১।
পরিবারবর্ষকে ঘিরে তুরস্কের সরকার আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। বিয়ে করতে ইচ্ছুক দম্পতিদের বিনা সুদে সর্বোচ্চ চার হাজার ইউরো ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আংকারার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেমোগ্রাফির বিশেষজ্ঞ ইসমেত কোচ বলেন, ‘প্রথম নজরে এই ধারণাগুলো বর্তমান নীতির চেয়ে ভালো বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু এসব কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট করা হয়নি।
এদিকে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা তুরস্কের কর্মীরা সরকারের উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। তারা সরকারের বিরুদ্ধে ‘সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদ’ তৈরির অভিযোগ এনেছেন। নারী অধিকারকর্মী ও আইনজীবী সেলিন নাকিপোলু বলছেন, নতুন উদ্যোগটির লক্ষ্য হচ্ছে তুরস্কের পারিবারিক আইনকে শরিয়া ও ইসলামী আইনের ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো, যা বর্তমানে ধর্মনিরপেক্ষ।
নাকিপোলু আরো বলেন, ‘তথাকথিত পরিবারবর্ষ সমাজে নারীর অধস্তন ভূমিকাকে সুসংহত করতে সাহায্য করবে এবং বেতনভোগী ও অবৈতনিক কর্মজীবী নারীদের ওপর শোষণ আরো বাড়াবে।’
অন্যদিকে তুরস্কে নারী হত্যা বাড়ছে উল্লেখ করে ফেডারেশন অব উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন্স অব টার্কির প্রেসিডেন্ট চানান গুলু বলেন, ‘২০২৫ সালকে পরিবারবর্ষ ঘোষণা না করে নারী হত্যা প্রতিরোধের বছর হিসেবে ঘোষণা করা উচিত ছিল। শুধু এই ধরনের সিদ্ধান্তই নারীদের আত্মবিশ্বাসকে অনুপ্রাণিত করত।’