অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে জার্মানির রাজনৈতিক দল সিডিইউর এক প্রস্তাবনা দেশটির সংসদে পাস হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন আলোচনার মাঝেই পাস হলো এই প্রস্তাব।
সংসদে রক্ষণশীল দল সিডিইউর আনা প্রস্তাবে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে, বিশেষ করে অনিয়মতে পথে জার্মানিতে প্রবেশ ঠেকাতে এবং যাদের আশ্রয় আবেদন বাতিল হযেছে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে।
চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের এসপিডি ও গ্রিন পার্টির বিরোধিতা সত্ত্বেও কট্টর ডানপন্থী দল এএফডি ও এফডিপির সমর্থন থাকা সংসদে পাশ হয় আইনটি।
সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানির বেশ কয়েকটি শহরে হামলার ঘটনার জেরে এমন প্রস্তাবনা দিয়েছে দলটি।
প্রস্তাবনায় দেশটির সীমান্ত সুরক্ষিত করতে ও বেআইনি প্রবেশ ঠেকাতে বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্তে স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ আরোপ, শেঙেন জোনে মুক্ত চলাচল বন্ধ করা এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যারা জার্মানিতে প্রবেশ করেছে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাবাসন।
প্রস্তাবনায় আরো রয়েছে, আশ্রয় আবেদন বাতিল হয়ে যাওয়ার পর যাদের দেশত্যাগের বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাদের আটক করা এবং যেসব অভিবাসী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত তাদের বসবাসের অনুমতি সীমিতকরণ।
কট্টর ডানপন্থী দল এএফডির সমালোচনা করেছে সিডিউ/সিএসইউ। দলটি বলছে, ‘জেনোফোবিয়া ও ষড়যন্ত্র উসকে দিতে গণহারে অভিবাসনের জন্য তৈরি হওয়া সমস্যাটির অপব্যবহার করছে এএফডি।
বিক্ষোভ
এদিকে প্রস্তাব পাসের পর সিডিইউ সদর দপ্তরের বাইরে প্রতিবাদ করেছে কয়েক হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার দলটির সদর দপ্তরের সামনে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখান। অতি ডানপন্থীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজের অভিযোগে সিডিইউর বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ তাদের। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ১৩ হাজার মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়েছিল। অন্যদিকে পুলিশ জানায়, ছয় হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ
এএফডির সাহায্য নিয়ে খসড়া বিল পাস করানোর পর সিডিইউয়ের প্রবল সমালোচনা করেন চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ। গ্রিন পার্টি ও অনেকগুলো মানবাধিকার সংগঠন ও চার্চও এর সমালোচনা করেছে। তাদের বক্তব্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমঝোতা হয়েছিল, অতি ডানপন্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কেউ চলবে না। সেই সমঝোতা ভেঙেছেন ম্যার্ৎস।
এখনো পর্যন্ত জার্মানির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এই সমঝোতা মেনে চলেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে হাতিয়ার করে নাৎসিদের উত্থানের কথা মাথায় রেখে তারা এই সমঝোতা করে।
‘ডাপন্থীবিরোধী জোট’ বৃহস্পতিবারের প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল। তাদের দাবি, এএফডির সঙ্গে কোনো সহযোগিতা নয়।
এই বিক্ষোভের সংগঠক ক্যারোলিন মোসার ম্যার্ৎসকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, তিনিই এএফডির অতি ডানপন্থাকে সামাজিক দিক থেকে গ্রহণযোগ্য করে দিচ্ছেন।
ম্যার্ৎসের জনসভায় বিক্ষোভ
অন্যদিকে ড্রেসডেনে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী ম্যার্ৎসের জনসভায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে। ম্যার্ৎস সেখানে নির্বাচনী প্রচারের জন্য গিয়েছিলেন।
বিক্ষোভকারীরা ড্রেসডেনের রাস্তায় স্লোগান দেন, ম্যার্ৎস হলেন গণতন্ত্রের বিপদের কারণ, তার লজ্জিত হওয়া উচিত।
সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস, ডয়চে ভেলে