আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: চীনা হুমকির মুখে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাতে তাইওয়ানে নেমে বুধবার (৩ আগস্ট) সকালে দেশটির পার্লামেন্টে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্পিকার ও দেশটির ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তিত্ব ন্যান্সি পেলোসি।
পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে তিনি জানিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের মধ্যে সংসদীয় আদান-প্রদান তিনি আরও বাড়াতে চান। একই সঙ্গে তার বক্তৃতায় তিনি তাইওয়ানকে বিশ্বের অন্যতম মুক্ত সমাজ আখ্যায়িত করেছেন। তাইওয়ানের পার্লামেন্টে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এই শীর্ষ নেতাকে স্বাগত জানান পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাই খাই চং।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার এ সফরের প্রতিবাদ জানাতে বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তাইওয়ান পার্লামেন্টে ন্যান্সি পেলোসি ১৯৮৯ সালে ছাত্র বিক্ষোভে গণহত্যার দুবছর পর বেইজিংয়ের তিয়ানানমেন স্কোয়ার সফরের স্মৃতির কথা উল্লেখ করেছেন।
আমরা সেখানে মানবাধিকার বিষয়ে বিবৃতি দিতে গিয়েছিলাম। আমাদের সফরের বিষয় ছিলো নিরাপত্তা ইস্যুতে। বহু বছর ধরে নিরাপত্তা, অর্থনীতি আর গভর্ন্যান্সই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাইওয়ান পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকারকে বলেন তিনি।
পার্লামেন্টে ডেপুটি স্পিকারের সাথে বৈঠক ছাড়াও তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সাথেও সাক্ষাতের কর্মসূচি রয়েছে ন্যান্সি পেলোসির।এর বাইরে তাইপের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ীদের সাথেও বৈঠক করবেন তিনি।
সেখানকার গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী তিনি তাইপের হিউম্যান রাইটস পার্কে তিন জন সুপরিচিত গণতন্ত্রপন্থি অধিকার নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এ ছাড়া, তাইওয়ানের সর্ববৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান টিএসএমসির চেয়ারম্যান মার্ক লিউর সাথে দেখা করবেন তিনি। ন্যান্সি পেলোসির তাইপে সফরের প্রতিক্রিয়ায় আরও বেশ কিছু পণ্য তাইওয়ান থেকে আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন।
বুধবার (৩ আগস্ট) ভোরে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাইওয়ান থেকে বেশ কিছু ফল, দু ধরনের মাছ ও বালু আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর আগে রাতেই এ ধরনের আরেকটি নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছিলো বেইজিং কর্তৃপক্ষ যার আওতায় ছিলো বিস্কুট ও কনফেকশনারি দ্রব্যসহ বেশ কিছু পণ্য।
চীনের সাথে তাইওয়ানের বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক গভীর এবং তাইওয়ানের রপ্তানির প্রায় ত্রিশ ভাগই চীনে হয়ে থাকে। দেশ দুটি একে অপরের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার।
ন্যান্সি পেলোসির সফরকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক নানা পালটা পদক্ষেপ নিচ্ছে চীন। চীনের সরকারি বার্তা সংস্থার খবর অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ করেছেন চীনের ভাইস ফরেন মিনিস্টার।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে তার ভুলের মূল্য দিতে হবে এবং ওয়াশিংটনকে পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়া সামাল দিতে বাস্তব পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।