নেপালে প্রবল বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকারী দল এখনো ৪৪ জন নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান করছে। দেশটির পুলিশ শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
শুক্রবার থেকে নেপালের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বেঁচে যাওয়া মানুষদের ভবনের ছাদে দাঁড়িয়ে থাকতে বা নিরাপদ স্থানে পৌঁছতে নোংরা পানির মধ্যে হাঁটতে দেখা গেছে। কাঠমাণ্ডুর কাছে ফুলে ওঠা বাগমতি নদীর পাশে একটি মোটরবাইক ওয়ার্কশপ চালান ৩৪ বছর বয়সী মহামদ শাবুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এটা ভয়ংকর। আমি আমার জীবনে আগে কখনো এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ দেখিনি।
এ ছাড়া ৪৯ বছর বয়সী ট্রাকচালক হরি মাল্লাহ বলেন, ‘মাঝরাতের যখন বাইরে বের হই, তখন পানি আমার কাঁধ পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। আমার ট্রাক সম্পূর্ণ পানির নিচে ডুবে গেছে।’
নেপালের জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র বাসন্ত অধিকারী বলেন, কর্তৃপক্ষ উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করছে। উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য তিন হাজারের বেশি নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তারা হেলিকপ্টার ও মোটরবোট নিয়ে কাজ করছেন।
এদিকে ভূমিধসে বেশ কয়েকটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছে। কাঠমান্ডুর ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা বিশ্বরাজ খড়কা বলেন, ‘আমাদের প্রায় আটটি স্থানে রাস্তা বিভিন্ন অংশে ভূমিধসের কারণে বন্ধ রয়েছে।’ অন্যদিকে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে কাঠমাণ্ডু থেকে সব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে দেড় শতাধিক ফ্লাইটের ওপর।
দক্ষিণ এশিয়ার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের ৭০-৮০ শতাংশ বর্ষা মৌসুমে হয়ে থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাণঘাতী বন্যা ও ভূমিধসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর নেপালে বৃষ্টিসংক্রান্ত দুর্যোগে ২২০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিসংক্রান্ত দুর্যোগ সাধারণ ঘটনা হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে।