কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ‘চলমান রয়েছে।’ এর আগে ১১ মাসের চলমান যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে কয়েক দফা আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এদিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রচেষ্টা এখনো চলছে এবং যোগাযোগের চ্যানেলগুলো খোলা রয়েছে...লক্ষ্য, সফর ও বৈঠক অব্যাহত রয়েছে।’
কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় করা কয়েক মাসের পর্দার আড়ালের আলোচনাগুলো হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন মিসরে সফরে যাচ্ছেন, যাতে ‘যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা’ নিয়ে আলোচনা করা যায়। এটি গাজা যুদ্ধে শুরু হওয়ার পর থেকে তার দশম সফর।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সোমবার বলেছিলেন, ওয়াশিংটন একটি নতুন প্রস্তাবের ওপর দ্রুত কাজ করছে।
অন্যদিকে কোনো নতুন প্রস্তাবনা ইসরায়েল বা হামাসের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কি না, সে বিষয়ে আনসারি মঙ্গলবার মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘যখন যেকোনো সময়ে একটি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনার কথা আসে, আমরা অবশ্যই প্রতিটি পদক্ষেপে আশাবাদী থাকি।
হামাস জানিয়েছে, তাদের প্রতিনিধিদল গত সপ্তাহে দোহায় কাতারি ও মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও সম্ভাব্য বন্দি বিনিময় নিয়ে আলোচনা করেছে, তবে কোনো অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়নি। অন্যদিকে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে চুক্তির জন্য চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ কর্তৃপক্ষ সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ছয় জিম্মির মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছে।
এ ছাড়া ইসরায়েল মঙ্গলবার যুদ্ধে তাদের লক্ষ্যগুলো প্রসারিত করার ঘোষণা দিয়েছে, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পাশাপাশি লেবাননের সঙ্গে উত্তর সীমান্তে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে মনোনিবেশ করার জন্য।
দক্ষিণ ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের ৭ অক্টোবরের হামলার পর এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, নজিরবিহীন সেই হামলায় এক হাজার ২০৫ জনের মৃত্যু হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। পাশাপাশি যোদ্ধারা ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ৯৭ জন এখনো গাজায় রয়েছে। তবে ৩৩ জন জিম্মি ইতিমধ্যে মারা গেছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক আক্রমণে গাজায় অন্তত ৪১ হাজার ২৫২ জন নিহত হয়েছে বলে হামাসশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।