রাশিয়া ইউক্রেনে তার সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালিয়েছে বলে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর প্রধান বলেছেন। ইউক্রেন রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে হামলা শুরু করার পর, রুশ বাহিনীও পাল্টা আঘাত শুরু করেছে। রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের অর্ধেকের বেশি এলাকাজুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে বড় ধরনের হামলা করেছে রাশিয়া। গতকাল সোমবার সকালে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিদ্যুতের অবকাঠামোগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ব্যাপক ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটে। সমগ্র দেশজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা দেওয়া হয়েছে এবং নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে রাশিয়া নিশ্চিত করেছে, ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে আক্রমণ শুরু করেছে। তারা আরো জানিয়েছে, সব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতভর দেশজুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু হয়ে সকাল পর্যন্ত চলে বলে জানা গেছে।
ক্রিভি রিহ শহরে বেসামরিক ভবনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলে এক নারীসহ অন্য পাঁচজন নিখোঁজ হয় বলে স্থানীয় সামরিক প্রশাসনের প্রধান ওলেক্সান্ডার ভিলকুল টেলিগ্রামে বলেছেন।
এদিকে ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ড জানিয়েছে, হামলার সময় একটি ‘অজ্ঞাত বস্তু’ তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জ্যাসেক গোরিসজেউস্কি বলেন, ‘সম্ভবত এটি একটি ড্রোন ছিল এবং আমরা তাই ধরে নিচ্ছি।
ন্যাটোর মুখপাত্র ফারাহ দাখলাল্লাহ ইউক্রেনে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, রাশিয়া কর্তৃক ন্যাটো আকাশসীমা লঙ্ঘন ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং সম্ভাব্য বিপজ্জনক।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলার ভয়াবহতা স্বীকার করেছেন। তার ভাষ্যমতে, রাশিয়া প্রায় ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১০০টি ড্রোন ব্যবহার করেছে ইউক্রেনের ওপর হামলার জন্য। কিয়েভসহ অন্যান্য শহরগুলোর ওপর কয়েক দফায় এই হামলা চালানো হয়, যার ফলে রাজধানীসহ অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। কিয়েভের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে মেট্রো স্টেশনগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল দুপুর পর্যন্ত রুশ ড্রোন হামলা অব্যাহত ছিল, এবং লোকজনকে আবারও নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়।
ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো এই মুহূর্তের পরিস্থিতিকে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে উল্লেখ করেছেন। ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া, রিভনে এবং লিভ অঞ্চলে বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা হয়েছে, এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লুটস্ক শহরে একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে কিয়েভে চালানো এই সমন্বিত আক্রমণ ইউক্রেনের জন্য একটি গুরুতর সংকট তৈরি করেছে, এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পশ্চিমা দেশগুলোকে অবিলম্বে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।