পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩০ মে) নিউ ইয়র্কের একটি আদালত এ রায় দেন। বিবিসির প্রতিবেদনে এই খবর বলা হয়েছে।

এ মামলায় আনা ৩৪টি অভিযোগের সব কটিতেই দোষী প্রমাণিত হয়েছেন রিপাবলিকান এই নেতা।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ১২ জুরির উপস্থিতিতে আদালত ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় দোষী হয়ে সাজা পেতে যাচ্ছেন। এ মামলায় এখন ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চার বছর কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও অনেকে এমন ক্ষেত্রে আরো কম মেয়াদে সাজা পেয়েছেন।

 

গত ছয় সপ্তাহ ধরে চলে ট্রাম্পের বিচার। মামলার ৩৪টি অভিযোগ নিয়ে ১২ জন জুরি একজন বিচারক এবং একদল সাক্ষী ছয় সপ্তাহ ধরে যুক্তিতর্ক চালিয়েছেন। এরপর স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার (২৮ মে) যুক্তিতর্কের পর রায় জানাতে আলোচনায় বসেন ১২ জুরি। দুই দিন ধরে চলে এই আলোচনা অবশেষে এ রায় দিলেন তারা।

এর আগে বিচারপতি জুয়ান মার্চেন রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় এবং আইন জুরিদেরকে মাথায় রাখতে হবে, সেগুলো সম্পর্কে তাদের নির্দেশনা দেন।

 

রায় ঘোষণার পর আদালতকক্ষ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘এই রায় মর্যাদাহানিকর ও দুঃখজনক।’ মামলার বিচারক মার্চানের সমালোচনাও করেন ট্রাম্প। মার্চেন জুরিদের রায় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘আপনারা কিছু করতে না চাইলে কেউ আপনাদের কিছু করতে বাধ্য করতে পারত না। পছন্দ আপনাদেরই।

 

এই মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে এক পর্ন তারকার সঙ্গে  যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ট্রাম্পের। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে, এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়া হয়। তার হাতে এ অর্থ তুলে দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন।

ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের খবর ২০১৮ সালে ছড়ানোর পর থেকেই ট্রাম্প বিষয়টি অস্বীকার করে আসছেন। তবে ড্যানিয়েলস দাবি করেছে, তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই বিষয়ে চুপ থাকতে তাকে ট্রাম্পের আইনজীবীর মাধ্যমে ঘুষ দেওয়া হয়।

এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো এমন সময়ে, যখন আর কিছুদিন পরেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন। নির্বাচনে জো বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন ট্রাম্প। তবে রায়ের কারণে তার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কোনো বাধা আসবে না।