আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ইয়েসোমাইট ন্যাশনাল পার্কের কাছে ভয়াবহ দাবানল আরও বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর কর্তৃপক্ষ রাজ্যের একাংশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া এই ‘ওক ফায়ার’একের পর এক এলাকা গ্রাস করে নিচ্ছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকর্মীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিস্ফোরক আগুনের ধরন দমকলকর্মীদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে, বলেছে ক্যালিফোর্নিয়ার দমকল বিভাগ। দাবানলে এরই মধ্যে ১০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৬ হাজারের বেশি লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
মারিপোসা কাউন্টিতে জরুরি অবস্থা জারি করার ফলে রাজ্য কর্তৃপক্ষ এখন দাবানল মোকাবিলায় কিছু কেন্দ্রীয় সহায়তা চাওয়ার সুযোগ পাবে। দাবানল মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত চারশর মতো দমকলকর্মী ও ৪টি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
ক্যালফায়ারের মুখপাত্র নাতাশা ফৌটস বলেছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আরও অন্তত কয়েক দিন লেগে যেতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। আগুনের লেলিহান শিখা এগিয়ে আসতে থাকায় অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন।
আগুনের হাত থেকে বাঁচতে শুক্রবার (২২ জুলাই) বয়স্ক এক ব্যক্তি জুতা ছাড়াই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন, তার গাড়ি পরে খাদে পড়ে যায়। দমকলকর্মীরা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছেন। যে বিপুল পরিমাণ লোক নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চাইছে তাদের থাকার জায়গা বের করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
বাড়িঘর ছেড়ে আসা লোকজন দিয়ে ভর্তি আমাদের হোটেল। আজ কয়েকজন দমকলকর্মী এসেছিলেন রুমের খোঁজে, দিতে পারিনি। আমার মনে হয় শহরের বেশিরভাগ অংশই (বাড়িঘর ছেড়ে আসা ব্যক্তিদের দিয়ে) ভর্তি হয়ে গেছে, এলএ টাইমসকে এমনটাই বলেছেন স্থানীয় এক হোটেল মালিক।
ক্যালিফোর্নিয়ায় এবারের দাবানল মৌসুমের শুরুর দিকেই এমন ভয়াবহ আগুন কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। খরা, জলবায়ু পরিবর্তন ও অনেক পুরনো গাছপালা রাজ্যটির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে এবং আগুন অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অংশই এখন তাপদাহে পুড়ছে; দেশটির ডজনের বেশি রাজ্যে উচ্চ তাপমাত্রাজনিত সতর্কতা জারি আছে। শনিবার (২৩ জুলাই) মারিপোসা কাউন্টির তাপমাত্রা ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল; আগামী কয়েকদিন এলাকাটির তাপমাত্রা এরকমই থাকতে পারে বলেও আভাস মিলেছে।
‘ওক ফায়ার’থেকে উত্তরপূর্বে অবস্থিত ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও বড় বড় কিছু সেকোইয়া গাছ আছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে অন্য এক দাবানলও এই গাছগুলোর জন্য হুমকি হয়ে উঠছিল, তবে দমকলকর্মীরা শেষ পর্যন্ত ওই বিপদ কাটাতে পেরেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বন বিভাগ শুক্রবার (২২ জুলাই) বলেছে, তারা সেকোইয়া গাছগুলো রক্ষায় জরুরি ব্যবস্থা নিচ্ছে; যার মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় সহায়তা করতে পারে এমন নিচু গাছ সরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপও আছে।