বরিস জনসনের উত্তরসূরী, তা নিয়ে গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সরগরম ব্রিটিশ রাজনীতিপাড়া। কয়েক দফা ভোটাভুটির পর এরইমধ্যে সে দৌড়ে ছিটকে গেছেন ৯ প্রার্থী। শেষ লড়াইয়ে যে ২ জন টিকে থাকলেন তারা হলেন দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং পররাষ্ট্র সচিব লিজ ট্রাস। যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য চূড়ান্ত দুই প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বুধবার এমপি’দের ভোটে উঠে এসেছেন ঋষি এবং লিজ।
ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রাথমিক যুদ্ধে জিতে চূড়ান্ত পর্বের লড়াইয়ে ঢুকে পড়লেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত ঋষি সুনাক। প্রথম চার রাউন্ডেই মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে যায় চূড়ান্ত রাউন্ডে তিনি পৌঁছাবেনই। প্রশ্ন ছিল কে হবেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী। শেষ পর্যন্ত ঋষির সঙ্গে লড়াই হতে যাচ্ছে লিজ ট্রাসের। পঞ্চম রাউন্ডের ভোটাভুটিতে ছিটকে গেলেন পেনি মডান্ট।
বিবিসি জানায়, ৩৫৭ ভোটের মধ্যে এই রাউন্ডে কনজারভেটিভ বা টোরি এমপিদের মধ্যে ১৩৭ ভোট পেয়ে সুনাক রয়েছেন শীর্ষস্থানে এবং ১১৩ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন লিজ ট্রাস। আর সবচেয়ে কম ১০৫ ভোট পেয়ে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েছেন পেনি মর্ডান্ট।
এখন কনজার্ভেটিভ পার্টির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ঋষি সুনাক এবং লিজ ট্রাসের মধ্যে। টোরি (কনজারভেটিভ) পার্টির ১৬০,০০০ সদস্য ভোটে তাদের রায় জানাবেন। ভোটের ফলে জয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে ৫ সেপ্টেম্বরে। দুই চূড়ান্ত প্রার্থীর মধ্যে যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পাবেন তিনিই জয়ী হবেন। ঋষি সুনাক জয়ী হলে প্রথম একজন ভারতীয় বংশোদ্ভুত হিসাবে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হবেন।
প্রথম থেকে পঞ্চম রাউন্ড পর্যন্ত লড়াইয়ে ভোট দিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরাই। আসল লড়াইটা হতে যাচ্ছে এ বার। শুধু ব্রিটেনের হাউস অব কমন্সে নির্বাচিত দলীয় এমপিরাই নন, এ বার চূড়ান্ত পর্বে ভোট দেবেন কনজারভেটিভ পার্টির দেড় লাখের বেশি সদস্য। এই সংখ্যা কত তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। ২০১৯ সালে বরিস জনসনকে নির্বাচিত করার সময় দলের সদস্য সংখ্যা ছিল এক লাখ ৬০ হাজার। তবে এ বার সে সংখ্যা বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবারের আগে কনজার্ভেটিভ পার্টির এমপি’দের চারদফা ভোটে একে একে ঝরে গেছেন ৮ প্রার্থী। শেষ সময়ে টিকে ছিলেন ৩ জন। মঙ্গলবার চতুর্থ দফা ভোটে ছিটকে পড়েন কেমি বদেনখ। আর সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন ঋষি সুনাক। মঙ্গলবারের ভোটে সুনাক পান ১১৮ ভোট। অন্যদিকে, জুনিয়র বাণিজ্যমন্ত্রী পেনি মরডান্ট ৯২ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ৮৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন। কিন্তু বুধবার চূড়ান্ত প্রার্থী বাছাইয়ের পঞ্চম দফা ভোটে আগের হিসাব পাল্টে দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন লিজ ট্রাস।
চূড়ান্ত পর্বে ওঠার পর ট্রাস সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি পুরোপুরি ‘ইতিবাচক প্রচারণায়’ মনোনিবেশ করেছেন। তার প্রতি আস্থা রাখার জন্য সহকর্মীদেরকে ধন্যবাদও দিয়েছেন ট্রাস। ওদিকে, সুনাকও তার প্রতি আস্থা রাখার জন্য সহকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, “দেশব্যাপী আমাদের বার্তা পৌঁছে দিতে দিনরাত কাজ করব।’’