সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুবরাজ ফয়সাল বিন ফারহান এবং মিসরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি রবিবার গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং সহায়তা পৌঁছনোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক পরামর্শ কমিটির ষষ্ঠ বৈঠকে অংশ নিতে রবিবার ভোরে কায়রো পৌঁছেন যুবরাজ ফয়সাল। পরে বৈঠক শেষে মিসরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দুই মন্ত্রী।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন ও আচরণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সৌদি আরব এবং আরবদেশগুলো ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষার জন্য চাপ অব্যাহত রাখবে।
ফয়সাল বিন ফারহান আরো বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো, একটি সিদ্ধান্ত—আন্তর্জাতিক আইন (এবং) আন্তর্জাতিক মানবিক আইনগুলো মূল্যবান ও বাধ্যতামূলক এবং এটি অন্যদের ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য ইসরায়েলের ক্ষেত্রেও তেমন প্রযোজ্য।’ আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের প্রত্যাখ্যান এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার উদাহরণ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
আইসিজে শুক্রবার ইসরায়েলকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দেশটি গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধে যুদ্ধবিরতির আদেশ না দেওয়ার আইসিজের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। পাশাপাশি গণহত্যার অভিযোগকে ‘আপত্তিকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তাঁর দেশ আত্মরক্ষা চালিয়ে যাবে।
যুবরাজ ফয়সাল বলেছেন, গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের দৃষ্টিভঙ্গি এবং তারা যে সম্মিলিত শাস্তি দেওয়ার পন্থা অবলম্বন করছে তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ ক্ষেত্রে যেকোনো একটি দিক বেছে নিতে হবে—তারা কি চায় আন্তর্জাতিক আইনের কোনো মূল্য থাকুক? তারা কি শান্তি চায়? তাহলে এই সংকট মোকাবেলায় একটি ঐক্যবদ্ধ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থাকা উচিত।
এ ছাড়া বৈঠক চলাকালীন যুবরাজ ফয়সাল আঞ্চলিক ইস্যুতে মিসরের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সমন্বয়ের জন্য সৌদি আরবের আগ্রহ প্রকাশ করেন। শউকরি গাজায় অবিলম্বে এবং ব্যাপক যুদ্ধবিরতির জন্য মিসরের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রবেশের সুবিধার্থে জাতিসংঘের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি মিসরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থার জন্য তহবিল স্থগিত করার সমালোচনা করে বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি সম্মিলিত শাস্তি। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করার অনুমতি দিলে সংঘাত আরো বাড়তে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, লোহিত সাগরে চলমান ঘটনা এই অঞ্চলের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিণতিসহ নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।