ব্রিটেনে রাশিয়ার পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত ব্যাপক নিরাপত্তা তদন্তের পর ওই তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানতে পেরেছে।

আসামিরা সবাই বুলগেরিয়ার নাগরিক এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আটক করার পর থেকে তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে ‘অনুচিত উদ্দেশ্যে’ ব্যবহারের জন্য পরিচয়পত্র রাখার এবং সেগুলো জাল ছিল জেনেও তারা এসব দলিল নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত এই তিনজন রুশ গুপ্তচর সংস্থার পক্ষে কাজ করতেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

তাদের কাছ থেকে যেসব কাগজ-পত্র উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- ব্রিটেন, বুলগেরিয়া, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভেনিয়া, গ্রিস এবং চেক প্রজাতন্ত্রের পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য নথি।

ব্রিটেনের সরকারি গোপনীয়তা আইনের আওতায় অপরাধের সন্দেহে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে ছিলেন এই তিনজন। লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের গোয়েন্দারা তাদের আটক করে। লন্ডন পুলিশের এই ইউনিটের কাজ হচ্ছে- ব্রিটেনে বিদেশি গুপ্তচরদের খুঁজে বের করা।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা হলেন- অরলিন রুসেভ (৪৫), বিজার জাম্বাজভ (৪১) এবং ক্যাট্রিন ইভানোভা (৩১)। এই তিন জন বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন এবং শহরের বেশ কয়েকটি এলাকার বাড়িতে বসবাস করেছেন।

অবশ্য গ্রেপ্তার করা হলেও তাদের এখনও পুলিশের হেফাজতেই রাখা হবে এবং পরে কোনও এক সময় আদালতে হাজির করা হবে।

রুসেভ এক সময় রাশিয়ার সাথে ব্যবসায়িক লেনদেন করেছেন। তিনি ২০০৯ সালে ব্রিটেনে আসেন এবং তিন বছর ধরে আর্থিকখাতে প্রযুক্তিগত ভূমিকায় কাজ করেন। তিনি একসময় বুলগেরিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসাবেও কাজ করেছেন।

অন্যদিকে জাম্বাজভ এবং ইভানোভাকে তাদের সাবেক প্রতিবেশীরা দম্পতি হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। জাম্বাজভকে হাসপাতালের ড্রাইভার হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে, আর ইভানোভা তার অনলাইন লিংকডইন প্রোফাইলে নিজেকে একটি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ব্যবসায় ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

আগামী বছর জানুয়ারি মাসে ওল্ড বেইলি আদালতে এই তিন আসামির বিচার হওয়ার কথা রয়েছে। তবে তারা এখনও অভিযোগ স্বীকার করেননি।