আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ট্রাফিক আইন ভাঙেন এক কৃষ্ণাঙ্গ চালক। বলা সত্ত্বেও গাড়ি থেকে নামেননি। উল্টে পালানোর চেষ্টা করেন। সেই ‘অপরাধে’ ৬০টিরও বেশি গুলিতে জেল্যাল্ড ওয়াকারকে ঝাঁঝরা করে দেয় পুলিশ। তাদের অবশ্য দাবি, গুলি চালিয়েছেন ওয়াকারও। 

যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার অভিযোগ নতুন নয়। সেসব অভিযোগের সঙ্গে আরও একটি নাম যুক্ত হলো। ওহাইও অঙ্গরাজ্যের অ্যাক্রনে সোমবার (২৭ জুন) এই ঘটনা ঘটে। এরপরই এই ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ মার্কিনিরা। খবর এএফপির।

এই বিক্ষোভ ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। অ্যাক্রনে আরও বড় সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরবাসীকে শান্ত থাকার আর্জি জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার ও মেয়র।

এই ঘটনার পর পুলিশ দাবি করেছে, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ট্রাফিক সিগন্যাল ভেঙে একটি গাড়ি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। পুলিশ সেটির পিছু নেয়। চালককে গাড়ি থেকে নামতে বলে তারা। কিন্তু গাড়ির ভেতর থেকেই গুলি ছোড়েন চালক। তারপর গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করেন।

পুলিশের বিবৃতি অনুয়ায়ী, ‘পালানোর সময়ে তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, ফের গুলি চালাতে পারে। তাই আমরা গুলি চালাতে বাধ্য হই।’ ঘটনাস্থলেই মারা যান ২৫ বছর বয়সি জেল্যান্ড ওয়াকার। তার প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা জানিয়েছেন, ডেলিভারি বয়ের কাজ করতে জেল্যান্ড। তিনি শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের ছিলেন।

কৃষ্ণাঙ্গ যুবকটি যে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বা পরেও গুলি চালানোর চেষ্টা করে তার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ। এর কোনো প্রত্যক্ষদর্শীও মেলেনি। এছাড়া তার সঙ্গে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ছিল কি না সে বিষয়েও নীরব পুলিশ। এসব প্রশ্নের উত্তর না মেলায় পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনেছে জেলান্ডের পরিবার।

জেল্যান্ড পরিবারের আইনজীবী ববি ডি সেলো দাবি করেছেন, পুলিশ সেদিন প্রায় ৯০ রাউন্ড গুলি চালায়। যার মধ্যে অন্তত ৬০টি জেল্যান্ডের শরীর ফুঁড়ে গিয়েছে। অসংখ্য গুলিতে যুবকটির মুখমণ্ডলও ঝাঁঝরা হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।

এই ঘটনার পরে ওহাইওর বিভিন্ন শহরে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার অ্যাক্রনে একটি বড় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। হামলার আশঙ্কায় শহরের পুলিশ সদর দফতরের সামনে বাড়তি কাঁটাতার ও ব্যারিকেড লাগানো হয়েছে।

শহরবাসীকে শান্ত থাকার আর্জি জানিয়ে পুলিশ কমিশনার স্টিভ মাইলেট বলেছেন, ‘ঠিক কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখছি। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না।’ একই বার্তা দিয়েছেন মেয়র ড্যান হরিগ্যান।