ফ্রান্সে চলমান বিক্ষোভের ৫ম দিনে রাজধানী প্যারিসের এক মেয়রের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া ভাঙচুর ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শনিবার রাতে রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৭১৯ জন।
সিএনএন, এএফপি, বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানী প্যারিসের উপশহর লিলেস রোজেসের মেয়র ভিনসেন্ট জিনব্রানের বাসভবনে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা বাড়ির বাইরে মেয়রের গাড়ি ভাঙচুর এবং বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
ফ্রান্সের রক্ষণশীল দল লেস রিপাবলিকান পার্টির জেষ্ঠ্য নেতা ভিনসেন্ট জিনব্রান এ সময় এক জরুরি বৈঠকে বাড়ির বাইরে ছিলেন। বাড়িতে দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন তার স্ত্রী । রাত দেড়টার দিকে একদল বিক্ষোভকারী বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে।
মেয়রের স্ত্রী এ সময় দ্রুত তার সন্তানদের নিয়ে বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় তিনি (মেয়রের স্ত্রী) এবং তাদের এক সন্তান আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
রোববার এক বিবৃতিতে ভিনসেন্ট জিনব্রান বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা অকথ্য কাপুরুষতা দেখিয়েছে। আমি এক জরুরি বৈঠকে গতকাল সিটি হলে ছিলাম। রাত দেড়টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ লোক আমার বাড়ির গেট ভেঙে ঢুকে প্রথমে গাড়ি ভাঙচুর এবং পরে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আমার স্ত্রী তখন আমাদের দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন।’
‘জীবন বাঁচাতে আমার স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আহত হন। আমাদের এক সন্তানও আহত হয়েছে।’ বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়রের স্ত্রী পা ভেঙে ফেলেছেন।
গত ২৭ জুন মঙ্গলবার রাজধানী প্যারিসের উপশহর নানতেরে ট্রাফিক আইন অমান্যের অভিযোগে নাহেল এম নামের এক অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণকে গাড়ি থামাতে বলেছিল পুলিশ; কিন্তু সেই নাহেল সেই নির্দেশ না মানায় এক পুলিশ সদস্য তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে এবং তাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় নাহেল।
তার মৃত্যুর পর থেকেই বিক্ষোভ দানা বাঁধছিল নানতেরে। এই দিন বিকেলের দিকে নাহেলের মা মৌনিয়া এক ভিডিওতে তার ছেলেকে হত্যাকারী পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করেন এবং ফ্রান্সের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়। তার ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
নাহেল ও তার মা আলজেরীয় বংশোদ্ভুত এবং মুসলিম।
মঙ্গলবার শুরু হওয়া সেই বিক্ষোভ ইতোমধ্যে রূপ নিয়েছে দাঙ্গায়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ দিনে ফ্রান্সের অন্তত ১০টি শপিং মল, ২০০ সুপারমার্কেট, ২৫০টি তামাকজাত পণ্যের দোকান, ২৫০টি ব্যাংক এবং শত শত সরকারি ভবনে হামলা-ভাঙচুর ও লুটাপাট চালিয়েছে বিক্ষোভকারীর।