তামিমকে দেশে রেখে আজ বিকেলে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপের ফ্লাইট ধরলে বিতর্কের গভীর এক জ্বালামুখ খুলে যাওয়ার শঙ্কার দিকটিই দেখিয়ে যান ওই সাবেক ক্রিকেটার।
মত না দেওয়ার কারণ একাধিক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৪৪ রানের ইনিংস খেলা তামিম ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি ‘পুরো ফিট’ নন।
সুবাদে সাকিব-তামিমের পুরনো দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ টেনে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে থাকে খবরের শাখা-উপশাখা। তাতে মূলধারার কিছু গণমাধ্যমও যোগ দেয়। এমনও বলা হতে থাকে যে, তামিমকে রাখা হলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্বই দেবেন না সাকিব।
মাঠে সেই ম্যাচ চলছিল ঠিকই, তবে মাঠের বাইরে বরং এর চেয়েও উত্তেজনাপূর্ণ আরেক ম্যাচ চলছে তখন। তামিমকে রাখা না রাখা নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে অবশ্য এর আগেই একরকম পৌঁছে যান নীতিনির্ধারকরা। একসময় দৃশ্যপটে উপস্থিত হন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ডেকে এনে মতামত চাওয়া হয় তাঁরও। আরো অনেকের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর-পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অবসর ভেঙে ফেরা এই বাঁহাতি ওপেনার ইংল্যান্ড থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে নিজেকে তৈরি করছিলেন বিশ্বকাপ খেলার জন্যই। এটিও সবার জানা যে লন্ডন থেকে নিয়ে আসা ইনজেকশনের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তাই নেই। সেটি তিন মাসও ব্যথামুক্ত রাখতে পারে, আবার তিন দিন পরও ব্যথা ফিরতে পারে। দল চূড়ান্ত করার আগে তামিম সেই ঝুঁকির দিকটিই ভাবতে বলেন নির্বাচকদের।
তাতেই অধিনায়ক আর হেড কোচ মনস্থির করে ফেলেন যে তামিমকে ছাড়াই তাঁরা বিশ্বকাপে যেতে চান। যত দূর জানা গেছে, বোর্ড সভাপতি নাজমুলও একমত হন তাঁদের সঙ্গে। না হওয়ারও কোনো কারণ নেই। একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, সম্প্রতি তামিমের সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসকের কথোপকথন তর্ক পর্যন্তও গড়িয়েছে। নাজমুল প্রথমে তামিমকে ৭ অক্টোবর ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে না খেলার পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে। পরে আবার ওপেন না করে ব্যাটিং অর্ডারে তামিমকে আরো নিচে নেমে যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়ে বসেন। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি তামিম। নিজের কড়া প্রতিক্রিয়া জানান তখনই।
তাঁর সামর্থ্যে টিম ম্যানেজমেন্টের অনাস্থা মনোবেদনার কারণ হয় এই ওপেনারের। পরে তিনি নিজেও খুলে দেন দলে না থাকার পথ। সুবাদে তাঁকে না রাখার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেলেও কোথায় যেন বাধা ছিল। বাদই যখন দেওয়া হবে, তাহলে অবসর থেকে ফেরানো হয়েছিল কেন! এমন আলোচনাও উঠে আসে। তাই পিছিয়ে যায় দল ঘোষণা। সেই ঘোষণাটি আসে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটের হারে সিরিজ খোয়ানোর পরপরই, রাত ৮টা ১৬ মিনিটে।
দিনভর নাটকের পর বিশ্বকাপ দলটি তামিমকে ছাড়াই!