পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা সরকারের আমলে শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতন হয়। তার পর থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ থেকে শুরু করে সরকারের নানা পদে পরিবর্তন আসে। তবে অবস্থা আস্তে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে।

পরিবর্তন হওয়ার পর আজ প্রথমবার শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়েছিলেন জ্যোতি। কিন্তু অভিনেত্রী অফিসে প্রবেশের পরই সহকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তিনি বাধ্য হয়ে শিল্পকলা একাডেমি থেকে চলে যান।

 

জ্যোতি আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অফিসে প্রবেশ করেন।

পরই বাইরে বিভিন্ন বিভাগের সহকর্মীদের জড়ো হতে দেখে দরজা বন্ধ করে দেন জ্যোতিকা জ্যোতি।

 

ওই সময় অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়ে কিছুই বলেন না তিনি। কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ রকম কিছু ঘটেনি। সব কিছুই স্বাভাবিক।

আমার রুমের দরজা খোলা। অনেকেই আসছে-যাচ্ছে। বাইরের কথা বলতে পারছি না। ডিজি (মহাপরিচালক) মিটিংয়ে আছেন। তার সঙ্গে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করছি।

 

তবে সময় গড়াতেই পরিস্থিতি আর স্বাভাবিক থাকেনি। কর্মীদের তোপের মুখে একসময় বের হয়ে যান এই অভিনেত্রী।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর আইরিন পারভীন লোপা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিনি (জ্যোতিকা জ্যোতি) অফিসে আসায় আমরা হতবাক হয়েছি। শুধু তা-ই নয়, তিনি এখনো নিজেকে বিগত সরকারের নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা ভাবছেন। তার অধিকার রয়েছে অফিসে আসার। কিন্তু যে সরকার নেই, সেই সরকারের দাপট দেখাচ্ছেন। আমরা তাকে সসম্মানে চলে যেতে বলেছি।’

এদিকে শিল্পকলা একাডেমি তাকে বের করে দেওয়ার পর একটি ফেসবুক লাইভে আসেন জ্যোতিকা জ্যোতি। এ সময় তিনি বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে ২ বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে কাজ করছিলাম। এখন পর্যন্ত আমার চাকরিটা আছে। চুক্তি বাতিল হয়নি। গত দুই মাসে দেশের চলমান অবস্থার মধ্যেই শিল্পকলায় নতুন ডিজি এসেছেন। তাই মনে হয়েছে অফিসে যাওয়ার। সেই কথা মাথায় রেখেই গিয়েছিলাম। কিন্তু একাডেমিতে প্রবেশের পর পরিস্থিাতি খারাপ লক্ষ করেছি। অনেক মানুষ সেখানে চিৎকার করছিল। পরে ডিজির সঙ্গে দেখা করি। পরিস্থিতির বিবরণ দিয়ে তিনি আমাকে বেরিয়ে আসতে বললেন আমি সেখান থেকে চলে আসি।’

উল্লেখ্য, জ্যোতিকা জ্যোতি অভিনয়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পেয়েছিলেন পদ-পদবিও। সর্বশেষ আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ‘আলো আসবেই’ নামের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছাত্রদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে নানা কথা বলে সমালোচিত হন।